মুস্তফা লুৎফুল্লাহে’র একমাত্র ছেলে’র আত্মহত্যা
সরদার বদিয়ার– অনিক আজিজ স্বাক্ষরের (২৬) জন্মদিন ছিল ২৯ ডিসেম্বর। সেদিন সাতক্ষীরায় স্বপরিবারে ছেলের জন্মদিন পালন করেন বাবা। এরপর বাবা ছেলেকে ঢাকার পথে এগিয়ে দিয়ে যান। এরপর ফোনে কথা হয়েছে। কিন্তু, ওটাই যে বাবা-ছেলের শেষ দেখা, তা কি ঘুণাক্ষরেও জানতে পেরেছিলেন সাতক্ষীরা-১ (তালা-কলারোয়া) আসনের ওয়ার্কার্স পার্টির এমপি মুস্তফা লুৎফুল্লাহ?রোববার সকালে ঢাকায় আসেন এমপি মুস্তফা। ন্যাম ভবনের নিজ ফ্ল্যাটে গিয়েই জানতে পারেন একমাত্র ছেলে আর নেই। ছেলের কক্ষের দরজা ভেঙে মুস্তফা দেখতে পান, অনিক ফ্যানের সঙ্গে ঝুলছে। এরপরই তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। ফ্যান থেকে ছেলেকে ছাড়িয়ে পার্শ্ববর্তী সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা অনিককে মৃত ঘোষণা করেন। অনিকের আত্মহত্যার কথা জানিয়ে এমপির এপিএস জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘ফ্ল্যাটে অনিক ও তার বোন সৃষ্টি ছিল। সস্ত্রীক সাতক্ষীরা ছিলেন স্যার। খবর পেয়ে সকালে এসে দরজা খুলে অনিককে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলতে দেখেন তিনি।’তিনি জানান, ধারণা করা হচ্ছে, শনিবার গভীর রাতে ড্যাফোডিলের শিক্ষার্থী অনিক আত্মহত্যা করেছেন। তবে আত্মহত্যার কারণ জানাতে পারেননি এমপির এপিএস। ঢাকায় অনিকের মৃত্যুর খবর পেয়ে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এমপি, সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা এমপি, পলিট ব্যুরোর সদস্য অধ্যাপক সুশান্ত সরকার, কামরুল হাসান ন্যাম ফ্লাটে ছুটে আসেন। তারা শোকসন্তপ্ত পরিবারকে সমবেদনা জানান।
অনিক আজিজের লাশ শেষবার একনজর দেখার জন্য ড্যাফোডিল ইউনিভার্সটির শিক্ষার্থীরাও সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে আসেন। এ সময় অনেককেই কান্না করতে দেখা যায়।সাতক্ষীরা প্রতিনিধি জানান, অনিকের মৃত্যুর খবর সাতক্ষীরায় ছড়িয়ে পড়লে মুস্তফা লুৎফুল্লাহর দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সহকর্মী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা পলাশপোলস্থ বাড়িতে ছুটে আসেন। সেখানে একমাত্র ছেলের মৃত্যু সংবাদ শুনে মা স্কুল শিক্ষিকা ও সাংস্কৃতিককর্মী নাসরিন খান লিপি বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন। কোনো সান্ত্বনাই যেন তার কান্নায় বাঁধ মানছিল না। ছেলের কথা বারবার বলে প্রলাপ করছিলেন নাসরিন খান। এমপির ভাই আলী আব্দুল্লাহ মোর্তজা জানান, অনিকের লাশ হেলিকপ্টারে করে সাতক্ষীরা নেওয়া হচ্ছে। সেখানে সরকারি উচ্চ বালক বিদ্যালয় মাঠে জানাজা শেষে রসুলপুর কবরস্থানে বাদ মাগরিব দাফন করা হবে।