যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে আসার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
bartaadmin
সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৭
যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে আসার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর২০১৭-০৯-২১T০৯:৩৪:১৫+০০:০০
প্রবাস, শিরোনাম, সর্বশেষ
বিনিয়োগ ও বাণিজ্যে বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বাবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার নিউ ইয়র্কের গ্র্যান্ড হায়াৎ হোটেলে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজ ও মত বিনিময় সভায় তিনি এ আহ্বান জানান।শেখ হাসিনা বলেন, শিল্পায়ন ও ডিজিটাইজেশন মাধ্যমে বাংলাদেশ ২০২১ সালে মধ্য আয়ের দেশ ও ২০৪১ সালে উন্নত দেশ হওয়ার পথে রয়েছে। আর এ লক্ষ্য পূরণে বাংলাদেশের বিনিয়োগ ও বাণিজ্যের যে চাহিদা তৈরি হয়েছে, তাতে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীরা এগিয়ে এলে পারস্পরিক লাভজনক ব্যবসার মাধ্যমে দুই দেশের সম্পর্ক আরও গভীর হবে বলে মনে করছেন শেখ হাসিনা।জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে বর্তমানে নিউ ইয়র্কে রয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। গত কয়েক বছর ধরেই এ সময় যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এ ধরনের বৈঠক করে আসছেন তিনি।
এবারের মত বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের মধ্যে ছিলেন মোটোরোলা সল্যুশনসের সিনিয়র ডিরেক্টর রিচার্ড ব্রেচার, বোয়িংয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্ক ডব্লিউ লিপার্ট, ইউটিসি অ্যাসোসিয়েটসের প্রধান নির্বাহী আজিজ আহমেদ, ডেনহাম ক্যাপিটালের পরিচালক সৌরভ আনন্দ, ওয়ালমার্টের ভাইস প্রেসিডেন্ট পল ডিক ও ফেডেক্সের ডেভিড শর্ট।তাদের সামনে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য অংশীদার।২০০৯ সাল থেকে দুই দেশের মধ্যে বার্ষিক পার্টনারশিপ ডায়ালগ চালু, টিকফা সই এবং নিরাপত্তা, সামরিক ও সন্ত্রাস দমন বিষয়ে নিয়মিত আলোচনা হওয়ার কথা তিনি বৈঠকে তুলে ধরেন।গত বছর বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল সাত বিলিয়ন মার্কিন ডলার। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ আরও বাড়ানোর এবং সম্ভাবনা আরও বিস্তৃত করার সুযোগ রয়েছে বলে মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা। তবে এক্ষেত্রে বাংলাদেশি পণ্যের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের ক্ষেত্রে উচ্চ শুল্ক হারকে একটি বাধা হিসেবে তুলে ধরেন তিনি।
“যখন এলডিসিভুক্ত বেশিরভাগ দেশ যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বিভিন্ন স্কিমে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাচ্ছে, তখন বাংলাদেশ উচ্চ শুল্কের কারণে প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হচ্ছে।”যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে কিছু উন্নয়নশীল দেশের শুল্কমুক্ত সুবিধা পাওয়ার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, প্রতিযোগিতার ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ তৈরির জন্য এ ধরনের বৈষম্য দূর করা প্রয়োজন।প্রধানমন্ত্রী তার বক্তৃতায় দারিদ্র্য বিমোচন, পুষ্টিহীনতা ও শিশু মৃত্যু কমানোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অগ্রগতি, শিক্ষার উন্নয়ন এবং নারীর ক্ষমতায়নের কথা তুলে ধরেন।বিশ্ব মন্দার মধ্যেও ২০০৯ সাল থেকে গড়ে ৬ দশমিক ২ শতাংশ এবং গত দুই বছর ৭ শতাংশের বেশি জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের পাশাপাশি মাথাপিছু আয়বৃদ্ধি, মূল্যস্ফীতি কমানো, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি এবং মানবসম্পদ উন্নয়নের বিভিন্ন তথ্যও তিনি তুলে ধরেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সাহায্যনির্ভর দেশ থেকে বাণিজ্যনির্ভর দেশে পরিণত হয়েছে। পিপিপির ভিত্তিতে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৩২তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ। বর্তমানে বৈদেশিক সাহায্যের পরিমাণ মোট জিডিপির দেড় শতাংশ।বাংলাদেশের গ্রগতিশীল ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, এ দেশের জনগণের ৬০ শতাংশের বয়স ৪০ এর নিচে; যারা প্রতিযোগিতামূলক মজুরির জন্য সহজলভ্য। এছাড়া মধ্যবিত্ত শ্রেণির দ্রুত বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে ক্রয়ক্ষমতা।বাংলাদেশের উদার বিনিয়োগ নীতির কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, বিদেশি বিনেয়োগে কর অবকাশ সুবিধা ও আইনের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা দেওয়া হচ্ছে। ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার পাশাপাশি ভৌত অবকাঠামোর উন্নয়ন হয়েছে।উন্নত প্রায় সব দেশে এবং উন্নয়নশীল কিছু দেশে বাংলাদেশের পণ্যের শুল্কমুক্ত সুবিধা পাওয়ার কথা বৈঠকে তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, বিদেশি উদ্যোক্তারা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করে এর সুফল পেতে পারে।পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী, বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী আমিনুল ইসলাম, এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন উপস্থিত ছিলেন অনুষ্ঠানে।
সংবাদ টি পড়া হয়েছে :
২২১ বার