রংপুরে আগামী মাসের সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে দেখা হচ্ছে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের জন্য ‘জাতীয় নির্বাচনের আগে প্রথম পরীক্ষা’ হিসেবে; কে এম নূরুল হুদার কমিশনও সেখানে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য ভোট করতে কঠোর অবস্থান নেওয়ার কথা বলেছে। আগামী ২১ ডিসেম্বর রংপুর সিটি করপোরেশনের এই নির্বাচন হবে বর্তমান ইসির অধীনে দ্বিতীয় সিটি ভোট। ফেব্রুয়ারিতে দায়িত্ব নিয়েই মার্চে কুমিল্লা সিটির ভোট করেছিল এই ইসি। এরপর রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ সেরে রংপুর সিটি ভোটের তফসিল ঘোষণা করেন সিইসি নূরুল হুদা। নির্বাচন কমিশনার মহবুব তালুকদার বলেন, “রংপুর সিটি নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে আমরা সব ধরনের ব্যবস্থা নেব। কোনোভাবে অনিয়মকে ছাড় দেব না। আমরা চার নির্বাচন কমিশনার পালা করে ওই নির্বাচনী এলাকায় যাব; প্রার্থীসহ সবার সঙ্গে আলোচনা করেই সব নির্দেশনা দেব।” ভোট নিয়ে আইন শৃঙ্খলা বৈঠকের পর সিইসি নূরুল হুদাও রংপুরে যাওয়ার কথা বলেছেন।
বুধবার তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “১৯ নভেম্বর আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বৈঠকের পর আমরা সবাই রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন এলাকা পর্যবেক্ষণে যাব। প্রার্থী, ভোটার, স্থানীয় নেতা, প্রশাসনের সবার সঙ্গে মত বিনিময় করব, যাতে সেখানে একটা অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে পারি।” বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের বর্জনের মধ্যে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দশম সংসদ নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছিল অর্ধেক আসনে বিনা ভোটে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীদের জয়, সহিংসতা আর অনিয়মের অভিযোগের কারণে।  সে সময় দায়িত্বে ছিল কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের কমিশন। ২০১৮ সালের শেষ দিকে একাদশ সংসদ নির্বাচন হবে। তার আগে রংপুর ছাড়া আরও পাঁচ সিটি করপোরেশনের ভোট করবে বর্তমান ইসি।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, “সিটি করপোরেশন নির্বাচনতো বটেই, অন্য নির্বাচনও আমরা একেবারেই নিরপেক্ষ এবং গ্রহণযোগ্য পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য চেষ্টা করবো। জাতীয় নির্বাচনে যাতে মানুষের মধ্যে, ভোটারদের মধ্যে আমাদের প্রতি আস্থার অবস্থান সৃষ্টি হয়, আমরা সেজন্য অবশ্যই কাজ করে যাব এবং যাচ্ছি।” স্থানীয় নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ইসি জাতীয় নির্বাচনের বিষয়ে বার্তা দিতে চায় জানিয়ে নূরুল হুদা বলেন,  “সেই বার্তা দেওয়া শুরু হয়ে গেছে। কুমিল্লা থেকে এসেছে। অন্য নির্বাচন যেগুলো করেছি জাতীয় পর্যায়ে দুটো [উপ] নির্বাচন করলাম এবং ভবিষ্যতে যে নির্বাচনগুলো করব, রংপুর সিটি করপোরেশনসহ সবগুলো নির্বাচনের মাধ্যমে আমরা সেই বার্তাগুলো পৌঁছে দিতে চাই।”
রংপুরে সুষ্ঠু ভোট আয়োজনে সকলের সহযোগিতা চেয়ে এবং নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার তারিখ থেকে ফলাফল ঘোষণার পরে ১৫ দিন পর্যন্ত কোনো কর্মকর্তাকে বদলি না করার নিদের্শনা দিয়ে সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগে বৃহস্পতিবার চিঠি পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ইসির যুগ্মসচিব (চলতি দায়িত্ব) ফরহাদ আহাম্মদ খান স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, সংবিধানের ১২৬ অনুচ্ছেদ অনুসারে নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব পালনে সহায়তা করা সকল নির্বাহী কর্তৃপক্ষের কর্তব্য। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, রংপুরের নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ২২ নভেম্বর। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ৩ ডিসেম্বর। ৪ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দের পর শুরু হবে অনুষ্ঠানিক প্রচার। আর ভোট হবে ২১ ডিসেম্বর।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn