রোববার শাল্লা আসছেন শেখ হাসিনা: স্বাগত জানাতে ব্যাপক প্রস্তুতি
জিয়াউর রহমান লিটন-
ফসলহারা কৃষকের দুর্দশা সরেজমিন পরিদর্শনে আগামী রোববার (৩০ এপ্রিল) শাল্লা আসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। হাওর এলাকায় প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে ব্যাপক লোকসমাগমের প্রস্তুতি নিচ্ছে আওয়ামী লীগ। আইনশৃংখলা নিয়ন্ত্রণে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন শুক্রবার থেকেই ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। শুক্রবার থেকে দিরাই ও শাল্লা উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের সাথে কেন্দ্রীয়, জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ দফায় দফায় বৈঠক করেছেন।
শুক্রবার শাল্লা উপজেলা সদরে শাহেদ আলী পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠানস্থল পরিদর্শন করেন- কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, মিছবাহ উদ্দিন সিরাজ, ছাতক দোয়ারা এমপি মহিবুর রহমান মানিক, দিরাই-শাল্লা আসনের সাংসদ ড. জয়া সেনগুপ্তা, জেলা প্রশাসক শেখ রফিকুল ইসলাম, সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এনামুল কবির ইমনসহ এসএসএফ, ডিজিএফআই, র্যাব, পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তাসহ আইনশৃংখলা রক্ষাকারি বাহিনীর লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী রোববার হাওরের বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়াবেন এবং এসময় তিনি ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করবেন বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন। প্রধানমন্ত্রী ও জননেত্রী শেখ হাসিনার এই সফর একটি মানবিক প্রোগ্রাম উল্লেখ করে তিনি বলেন- জনগনের নেত্রী দুর্গত জনগনের পাশে দাঁড়াতেই শাল্লায় আসছেন। আওয়ামী লীগ সরকার কৃষক বান্ধব ও হাওর বান্ধব সরকার উল্লেখ করে মহিবুর রহমান মানিক বলেন, প্রান পন চেষ্ঠা করেও কোন হাওর বাঁচানো গেল না। একে একে সুনামগঞ্জসহ হাওরাঞ্চলের সবকটি হাওর তলিয়ে গেল। দিশেহারা হয়ে পড়লো হাওরবাসি। কৃষকের দুর্দশায় হাওরের কৃতি সন্তান মাননীয় রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ১৭ এপ্রিল সুনামগঞ্জের ফসল হারানো মানুষের পাশে অবস্থান নেন, কথা বলেন এবং নানা ভাবে আশ্বস্থ করেন। এরপর ত্রাণ ও দুর্যোগব্যবস্থাপনামন্ত্রী মোফজ্জল হোসেন মায়া হাওরাঞ্চলে সফর করেন। পরিশেষে হাওর বান্ধব ও কৃষক বান্ধব প্রধানমন্ত্রী দুর্গত মানুষকে সরেজমিন দেখার ইচ্ছা পোষন করেন। এই দুর্যোগ মুহূর্তে প্রধানমন্ত্রীর সফর হাওরবাসির জন্যে বিশেষ গুরুত্ব রাখবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
দিরাই-শাল্লার সাংসদ ড. জয়াসেনগুপ্তা বলেন- প্রধানমন্ত্রী ও জননেত্রীর শেখ হাসিনার সফর হাওরবাসির হতাশায় প্রত্যাশা জাগবে। মমতাময়ী প্রধানমন্ত্রী হাওরের দুর্যোগের সময় মমতা দিয়ে বারবার আমাদের কাছ থেকে জানার চেষ্টা করেছেন। আমার বিশ্বাস এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক দুরবস্থা থাকবে না। হাওরবাসীকে তিনি বঞ্চিত করবেন না। তিনি গোপালগঞ্জ আর সুনামগঞ্জকে একইভাবে দেখেন। এদিকে আগামী রোববার শাল্লায় প্রধানমন্ত্রীর সফরকে সাফল্য মন্ডিত করে তুলতে শুক্রবার শাল্লা উপজেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে এক জরুরী কর্মী সভার আয়োজন করে। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুহিমচন্দ্র দাসের সভাপতিত্বে উপজেলা গণমিলনায়তন হলে অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত ছিলেন- মুহিবুর রহমান মানিক এমপি, ড. জয়াসেনগুপ্তা এমপি, সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্ট্রার এনামুল কবির ইমন, অ্যাডভোকেট অবনি মোহন দাস, আল-আমিন চৌধুরী, আবুল লেইছ চেীধুরী, আবদুস সাত্তার, নান্টু দাস, তকবির হোসেন প্রমুখ।
এসময় স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, কৃষকলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া শাল্লায় প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষ্যে প্রচার মিছিল করেছে উপজেলা ও পৌর যুবলীগ। শুক্রবার বিকেলে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রঞ্জন রায় ও মোহন চৌধুরীর নেতৃত্বে স্থানীয় আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামন থেকে প্রচার মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি পৌর সদরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে থানা পয়েন্টে এসে শেষ হয়।
ভাটিবাংলা যুব সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি জিয়াউর রহমান লিটন এবং সাধারণ সম্পাদক প্রশান্ত সাগর দাস বলেন- হাওরের এই মহাদুর্যোগে দুর্গত মানুষদের আগামী বৈশাখ মাস পর্যন্ত পর্যাপ্ত খাদ্যসহায়তাসহ কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিতে হবে। হাওরাঞ্চলে প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত কর্মসুচীগুলোর মধ্যে ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসুচি চালু করার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন- এতে প্রতি উপজেলায় প্রায় দুই হাজার বেকার যুবকদের কর্মের সংস্থান হবে এবং হাওর জনপদের দুর্যোগ লাঘবে গুরুত্বপুর্ণ ভুমিকা রাাখবে। হাওর রক্ষা বাধ নির্মাণে দুর্নীতিবাজ পাউবো, টিকাদার ও পিআইসিদেও শাস্তির দাবি জানিয়ে তারা বলেন, পরিকল্পিতভাবে বাধ নির্মানে স্থায়ী সমাধান করতে হবে, হাওরে অবস্থিত বিভিন্ন জলাশয় ও জলধারা ইজারামুক্ত করে ভাসমান পানিতে হাওরপাড়ের মানুষদের মাছ ধরাার অধিকার দিতে হবে,নদী খননসহ হাওরের পানি নিস্কাশনে ¯øুইসগেইট নির্মান করতে হবে, সেচ সংকট ও প্রাকৃতিকভাবে মাছের উৎপাদন বাড়াতে ভরাটকৃত জলমহাল ওজলধারা খনন করার উদ্যোগ নিতে হবে।