মিয়ানমারের নির্যাতিত রোহিঙ্গা মুসলমানদের জন্য সীমান্ত খুলে দিতে বাংলাদেশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে তুরস্ক। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত চাভুসোগলু এ আহ্বান জানান।মেভলুত আরো ঘোষণা দেন, রোহিঙ্গাদের জন্য যা খরচ হবে তার সবটাই বহন করবে তুরস্ক।তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, ‘আমরা ইসলামিক দেশগুলোর সংগঠন ওআইসির সদস্যের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। খুব শিগগির রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন হবে। আমরা এই বিষয়টির একটি স্থায়ী সমাধান চাই।’মেভলুত বলেন, রোহিঙ্গাদের জন্য তুরস্কের মতো আর অন্য কোনো দেশ সাহায্যে নিয়ে এগিয়ে আসেনি। তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান এরই মধ্যে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে মুসলিম দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে টেলিফোনে কূটনীতি চালিয়ে যাচ্ছেন। রোহিঙ্গাদের সমস্যা কীভাবে সমাধান করা যায় তা নিয়ে বিভিন্ন মুসলিম দেশের সরকারপ্রধানদের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলছেন।

গত শুক্রবার তুরস্কের আনতালিয়া প্রদেশে ক্ষমতাসীন ‘জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি’র (একে পার্টি) ঈদুল আজহা উদযাপনের অনুষ্ঠানে মেভলুত এসব কথা বলেন।মেভলুত দাবি করেন, মিয়ানমারের মুসলমানদের ওপর চালানো গণহত্যা বিষয়ে তুরস্কের ছাড়া আর কোনো দেশই সংবেদনশীল হয়নি। তিনি আরো জানান, মানবিক সাহায্যের পরিমাণের দিক থেকে তুরস্ক বিশ্বে দ্বিতীয়। যুক্তরাষ্ট্রের ৬ দশমিক ৩ বিলিয়ন (৬৩০ কোটি) ডলার, তুরস্ক ৬ বিলিয়ন (৬০০ কোটি) মার্কিন ডলার মানবিক সহায়তায় ব্যয় করে।

ঈদুল আজহার দিন রোহিঙ্গা বিষয়ে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের ১৩টি মুসলিম দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে কথা বলার পর মেভলুত চাভুসোগলু এই ঘোষণা দিলেন। ঈদুল আজহার দিনে মুসলিম দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে আলাপচারিতায় এরদোয়ান মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে মানবিক বিপর্যয় ঘটেছে উল্লেখ করে এ বিষয়ে যথার্থ পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য মুসলিম দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন।চাভুসোগলু আরো জানান, রাখাইন প্রদেশে মুসলমানদের ওপর চালানো নির্যাতন বিষয়ে তুরস্ক জাতিসংঘের সাবেক প্রধান ও রাখাইন সংকট সমাধানে গঠিত উপদেষ্টা পরিষদের প্রধান কফি আনানের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন ও সমস্যা সমাধানে পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানিয়েছেন।

মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলের রাখাইন প্রদেশে বহুদিন ধরেই সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের ওপর সংখ্যাগুরু রাখাইন জনগোষ্ঠী ও সেনাবাহিনী অত্যাচার চালিয়ে আসছে। সর্বশেষ গত ২৫ আগস্ট রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর আক্রমণ চালায় দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী। এ সময় রোহিঙ্গারা দলে দলে প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে চলে আসে। এরই মধ্যে ৭৩ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। আরো হাজার হাজার মানুষ সীমান্তের শূন্যরেখা বা নো ম্যানস ল্যান্ডে অপেক্ষা করছে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn