রোহিঙ্গা সংকট: দ্বিপক্ষীয় উদ্যোগের সঙ্গে বৈশ্বিক চাপও ধরে রাখতে হবে
‘রোহিঙ্গা সংকট নিরসন না হওয়া পর্যন্ত মিয়ানমারের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা চলবে। পাশাপাশি এ ইস্যুতে দেশটির ওপর যে বৈশ্বিক চাপ তৈরি হয়েছে তা ধরে রাখতে বিরামহীন কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালাতে হবে।’ ঢাকায় জড়ো হওয়া বাংলার দূতদের এমন নির্দেশনাই দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার এনভয় কনফারেন্সের উদ্বোধনী দিনে দু’দফা রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার ও স্থায়ী প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক হয় সরকারপ্রধানের। দুপুরে হোটেল সোনারগাঁওয়ে এবং রাতে গণভবনে দূতদের বক্তব্য শোনেন প্রধানমন্ত্রী। যদিও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আগের সিডিউলে এমন কর্মসূচি অন্তর্ভুক্ত ছিল না। প্রধানমন্ত্রী নিজে থেকেই দূতদের কথা শুনতে চান।এবং সেখানে অংশগ্রহণকারী ৫৮ জনের বক্তব্যই শুনতে চান। দুপুরে এক দফা শোনার পর তিনি সভা মুলতবি করেন এবং সবাইকে সন্ধ্যায় গণভবনে ডিনারে আমন্ত্রণ জানান। সরকারপ্রধানের আমন্ত্রণে রীতিমতো পুলকিত রাষ্ট্রদূতরা নিজেদের সুবিধা-অসুবিধার কথা তুলে ধরেন । সেখানে উঠে আসে মিশন প্রধানের ক্ষমতা এবং অন্যান্য মন্ত্রণালয় ও উইংয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কাজের সমন্বয়ের বিষয়টি। ঢাকায় পাঠানো দূতদের রিপোর্ট, সুপারিশ বা প্রস্তাবের বিষয়ে যথাসময়ে সাড়া না দেয়ার বিষয়েও সরকার প্রধানের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন কেউ কেউ। অবশ্য সেখানে এসব অভাব-অভিযোগের চেয়ে পলিসি বা পররাষ্ট্র নীতির বাস্তবায়ন নিয়ে বেশি কথা হয়েছে। গণভবনে প্রায় ৪ ঘণ্টায় প্রধানমন্ত্রী সবার বক্তব্য শুনেছেন এবং তা নোট নিয়েছেন। এই মুহূর্তে দেশের সবচেয়ে বড় সংকট রোহিঙ্গা ইস্যুতে বেশি আলোচনা হয়েছে। চীনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত বেইজিংয়ের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছেন। অন্য দূতরাও এ নিয়ে কথা বলেছেন। পরে প্রধানমন্ত্রী তাদের বলেন, সমপ্রতি মিয়ানমারের সঙ্গে যে অ্যারেঞ্জমেন্ট সই হয়েছে তাকে ভিত্তি ধরেই পরবর্তী কার্যক্রম দ্রুত এগিয়ে যাবে বলে তিনি আশাবাদী। তবে রাখাইন ইস্যুতে মিয়ানমারের ওপর যে বৈশ্বিক চাপ তৈরি হয়েছে সেই মোমেনটাম বা গতি ধরে রাখতে হবে। রোহিঙ্গা নির্যাতন বন্ধ এবং রাখাইনে শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফেরাতে বিশ্ব সম্প্রদায় মিয়ানমারের ওপর চাপ বাড়িয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা বাংলাদেশের কূটনীতিকরা এ নিয়ে কাজ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী এ জন্য কূটনীতিকদের আনুষ্ঠানিকভাবে ধন্যবাদ দিয়েছেন। কূটনৈতিক চেষ্টার কারণে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে এ ইস্যুতে যে আলোচনাসহ বৈশ্বিক ওই সংস্থার মানবাধিকার বিষয়ক থার্ড কমিটিতে একটি রেজ্যুলেশন পাস করা সম্ভব হয়েছে সেটি প্রধানমন্ত্রী এরই মধ্যে স্বীকৃতি দিয়েছেন।