লিবিয়ায় অপহৃত হয়ে শতাধিক বাংলাদেশি জিম্মি
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) জানিয়েছে, লিবিয়ায় অপহৃত হয়ে শতাধিক বাংলাদেশি জিম্মি হয়ে আছেন। তাদেরকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। অপহৃত শ্রমিকদের ইতালিতে বেশি বেতনে কাজের প্রলোভন দেখানো হয়। নওগাঁ জেলার রানীনগর থানার আইয়ুব হোসেন পাঁচ বছর আগে লিবিয়াতে কাজে গিয়েছিলেন।সেখানে আইয়ুব একটি তেলের পাম্পে কাজ করতেন। তার বাবা মোহাম্মদ তসলিম উদ্দিন বলছিলেন আড়াই মাস আগে হঠাৎ একটি ফোন পেলেন।তিনি বলছেন, ফোন করে বলা হল দুই লাখ পঞ্চান্ন হাজার টাকা এখনি দিতে হবে তা না হলে ছেলেকে মেরে সাগরে ভাসিয়ে দেয়া হবে। ফোন পাওয়ার পর আমরা তো আত্মহারা হয়ে যাই। কীভাবে এত টাকা দেবো। ছেলেকে মারার দৃশ্য দেখায়। আমরা মা বাবা তাতে তো আর থাকতে পারি না।ভিডিওতে ছেলের মার খাওয়ার দৃশ্য দেখে মুক্তিপণের টাকা দিতে বাধ্য হয়েছেন বলে জানালেন তসলিম উদ্দিন। দু দফায় বিকাশের মাধ্যমে তিনি পাঁচ লাখ টাকার মতো দিয়েছেন।
তিনি বলছেন, জমিজমা বিক্রি করে এই অর্থ দিয়েছেন, কিন্তু এরপরও ফোন পেয়েছেন তিনি। এত টাকা দেয়ার পরও ছেলের মুক্তি না হলে পুলিশের সাথে যোগাযোগ করেন তিনি।একই বিষয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের কাছে আরো অভিযোগ ছিলো।অভিযোগকারীদের দেওয়া তথ্য এবং যেসব বিকাশ অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে টাকা হস্তান্তর হয়েছে তার বিস্তারিত তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে।পিবিআই ঢাকা মেট্রোর বিশেষ পুলিশ সুপার মোঃ আবুল কালাম আজাদ জানিয়েছেন, ইতালিতে গেলে বেশি বেতনে কাজ দেয়া হবে সেরকম প্রলোভন দেখিয়ে ঐ শ্রমিকদের অপহরণ করা হয়।তিনি জানিয়েছেন, ঐ শ্রমিকদের ত্রিপোলি থেকে নয়শো কিলোমিটার দূরে কোথাও রাখা হয়েছে তারা জানতে পারছেন।মি আজাদ বলছেন আত্মীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের মধ্যে তিনজন বাংলাদেশে অপহরণকারীদের হয়ে মুক্তিপণ আদায় করছিলেন।আর গ্রেফতারকৃত অন্যদের মধ্যে রয়েছে তিনজন বিকাশের এজেন্ট, যাদের মাধ্যমে মুক্তিপণের টাকা লেনদেন করা হচ্ছিলো। তাদেরও এই ঘটনায় সম্পৃক্ততার রয়েছে বলে মনে করছে পুলিশ।মি আজাদ বলছেন লিবিয়াতে এরকম আরো একশো বিশ জনের মতো একইভাবে অপহৃত হয়ে জিম্মি আছেন বলে তারা জানতে পারছেন।তিনি বলেছেন এখন লিবিয়াতে জিম্মিদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। তাতে কত সময় লাগবে সেটি নিশ্চিত নয়। সূত্র : বিবিসি।