শহরের লবজান ও বুলচান্দ স্কুলে এক প্রশ্নে ভিন্ন দিনে পরীক্ষা
পরীক্ষার আগেই শিক্ষার্থীদের হাতে এসএসসি নির্বাচনীর প্রশ্নপত্র
একই প্রশ্নপত্রে সুনামগঞ্জ শহরের দুইটি উচ্চ বিদ্যালয়ে দুই দিনে পরীক্ষা নেয়া হয়েছে। আগের দিন এক স্কুলে, পরের দিন আরেক স্কুলে। পরীক্ষার আগেই শিক্ষার্থীরা প্রশ্নপত্র হাতে পেয়েছে। এটি ঘটেছে সুনামগঞ্জ পৌর শহরের লবজান চৌধুরী ও বুলচান্দ উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি নির্বাচনী পরীক্ষায়। জানা যায়, এসএসসি নির্বাচনী পরীক্ষায় লবজান চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ে সোমবার ভূগোল ও পরিবেশ পরীক্ষা ছিল। মঙ্গলবার ছিল বুলচান্দ চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ পরীক্ষা। দুটি বিদ্যালয়ের প্রশ্নপত্র একই ধরনের। প্রশ্নপত্রে শুধুমাত্র বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন ছিল। লবজান চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষা আগের দিন হওয়ায় ওই প্রশ্ন বুলচান্দের শিক্ষার্থীরা আগের দিনই পেয়ে যায়। বুলচান্দ উচ্চ বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী জানায়,‘লবজান চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষার শুরুর পরের দিন থেকে আমাদের বিদ্যালয়ের পরীক্ষা শুরু হয়। আমার এক চাচাতো বোন লবজান চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়ে, তার প্রথম দিনের প্রশ্ন এবং আমাদের প্রথম দিনের প্রশ্নের হুবুহু মিল দেখে, আমি প্রত্যেক দিনই আমার বোনের প্রশ্ন দেখে পড়াশুনা করেছি, সকল প্রশ্নেরই মিল ছিল, আমার সুবিধা হয়েছে।’
গত ১১ অক্টোবর লবজান চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষা শুরু হয়। একই দিনে ভিন্ন রুটিনে একই প্রশ্নে বুলচান্দ চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ে পরীক্ষাও শুরু হয়। শহরের কাছাকাছি এলাকায় দুটি বিদ্যালয়ের অবস্থান হওয়ায়, অনেক পরিবারেরই আত্মীয়-স্বজন শিক্ষার্থীদের বা প্রতিবেশি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে প্রশ্ন পেয়ে যায়। বুলচান্দ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আব্দুল মালেক বলেন,‘বিষয়টি আমাদের কাছেও ধরা পড়েছে। বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষকেই এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন এবং প্রধান শিক্ষককেও বিষয়টি আমরা জানিয়েছি, কিন্তু এই বিষয়ে কোন উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।’ এই বিদ্যালয়ের একজন সহকারী শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ করে বলেন,‘প্রধান শিক্ষকের হাতে আমরা দুই বিদ্যালয়ের হুবুহু প্রশ্ন তুলে দিয়েছি, তিনি বলেছেন চলুক’।
লবজান চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস ছাত্তার বলেন, ‘আমরা আমাদের শিক্ষকদের কাছ থেকে পা-ুলিপি নিয়েই প্রশ্নপত্র ছাপার জন্য প্রেসে পাঠিয়েছি। পরীক্ষাও নিয়ম মোতাবেক নেয়া হয়েছে। কেউ যদি এই প্রশ্ন প্রেস থেকে নিয়ে নিজেদের বিদ্যালয়ের নামে চালিয়ে নেয়, আমাদের কিছুই করার নেই।’ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘একই প্রশ্নপত্র দিয়ে দুই বিদ্যালয়ের পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে, কোন বিদ্যালয়ের প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে। এটি আমার জানা নেই, এমন হলে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’