শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সুনসান নীরবতা
এম এইচ রবিন-
কলেজ শিক্ষকদের বদলি, পদায়ন, পদোন্নতি, স্কুল-কলেজ সরকারিকরণ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্বীকৃতি, পাঠদানের অনুমোদন, এমপিও এবং প্রকল্পে চাকরিসহ নানা কাজের জন্য প্রতিদিন শত শত ভিজিটর ভিড় করেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন শাখায়। মন্ত্রণালয়ের দ্বিতীয়-তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীদের সঙ্গেই মূলত তাদের যোগাযোগ থাকত। আবেদন জমা রাখা, ফাইল অনুমোদন, দ্রুত কাজ সম্পন্ন করাসহ নানা কাজে উৎকোচও বিনিময় হতো। আর এসবের জন্য একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেটও গড়ে ওঠে। এর মধ্যে ধরাও পড়েছেন খোদ শিক্ষামন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা (পিও) মোতালেব হোসেন এবং মন্ত্রণালয়ের গ্রহণ ও বিতরণ শাখার উচ্চমান সহকারী নাসিরউদ্দিন। এদের সিন্ডিকেটে ১০ থেকে ১২ প্রশাসনিক কর্মকর্তা (এও) ও ব্যক্তিগত কর্মকর্তা (পিও) রয়েছেন। অবৈধভাবে তারা গড়ে তুলেছেন সম্পদের পাহাড়। আয়ের সঙ্গে সম্পদের আকাশ-পাতাল ব্যবধান থাকায় বিব্রত মন্ত্রণালয়ও। সিন্ডেকেটের সদস্যদেরও কাটছে নিঘুর্ম রাত। কেউ কেউ তো অফিসেও আসেন না। একজন পদস্থ কর্মকর্তা আমাদের সময়কে বলেন, ভিজিটরদের জন্য দৈনিক পাঁচটি করে সচিবালয়ে প্রবেশের পাস ইস্যুর সুযোগ থাকে। কিন্তু এতদিন এমন চাহিদা ছিল যে, আগের দিনই কর্মচারীরা আমাদের কাছ থেকে পাস ইস্যু করে নিত। রবিবার থেকে এসব কমে গেছে। মতিন-মোতালেব-নাসিররা ধরা পড়ার পর ভিজিটরও তেমন নেই। এদিকে গত বৃহস্পতিবার রাতে নিখোঁজ হয় মর্মে নাসিরের শ্বশুর বনানী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। এর পর শনিবার বিকালে শিক্ষামন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মোতালেব হোসেনকে মোহাম্মদপুরের বসিলা থেকে অপহরণের অভিযোগ করা হয়। কিন্তু রবিবার বের হয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। রাজধানীর লেকহেড গ্রামার স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার সময় ধরা পড়েন নাসিরউদ্দিন। জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে বন্ধ হয়ে যাওয়া লেকহেড খুলে দেওয়ার শর্তে ঘুষের চুক্তি হয়েছিল প্রতিষ্ঠানটির কর্তৃপক্ষের সঙ্গে। নাসিরের সঙ্গে ছিলেন শিক্ষামন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মোতালেব হোসেনসহ আরও তিনজন। নিজেদের সংশ্লিষ্টতার কথা গোয়েন্দাদের কাছে স্বীকারও করেছেন তারা। এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেনÑ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ধরেছে, নিশ্চয়ই কোনো অভিযোগ আছে। যদি তারা কোনো ঘুষ নিয়ে থাকেন, যে কোনো ধরনের অপরাধ করে থাকেন, ব্যবস্থা সরকার নেবে। আইনি ব্যবস্থায় যা আছে তাই হবে। ফৌজদারি অপরাধে আমাদের মন্ত্রণালয় থেকেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।