সংসদ নির্বাচন হবে ভোটযুদ্ধ আর টাকার যুদ্ধ
শাহনেওয়াজ সুমন-
আগামী জাতীয় নির্বাচন হবে টাকার লড়াই। এমনটাই মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা। দুই দলের অভ্যন্তরে যোগাযোগ করেও এমন আভাস পাওয়া গেছে। টানা নয় বছরের শাসনামলে আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের হাতেই নয়, দলীয় ব্যবসায়ীদের হাতেও অর্থের পরিমাণ বেড়েছে। ওয়ান ইলেভেন থেকে এক দশক ক্ষমতাসীনদের দমন-নিপীড়নের মুখে পতিত হলেও বিএনপির আগের শাসনামলের উপার্জিত অর্থ একেবারে শেষ হয়ে যায়নি।
এমনকি বিএনপি নেতৃত্ব মনে করে, সেই সময়ে ব্যবসা বাণিজ্যে তারা যাদেরকে সাহায্য দিয়েছিলেন তারাও বিমুখ করবেন না। দুই দলেরই শাসনামলে বাইরে চলে যাওয়া টাকা ভোটযুদ্ধে এসে শক্তি যোগাবে। এমনকি এই অর্থের শক্তিতে অতীতের সকল নির্বাচনের চেয়ে আগামী ভোটযুদ্ধে আওয়ামী লীগ সুবিধাজনক অবস্থায় থাকলেও খুব বেশি পিছিয়ে থাকবে না বিএনপি। কারণ বিএনপির জন্য এই নির্বাচন হবে অস্তিত্বের লড়াই। সেখানে ক্ষমতার জন্য রীতিমতো জুয়ার বাজি খেলবে বিএনপি।
অন্যদিকে ২৭ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকা জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদের জন্য বলা হচ্ছে এই ভোটযুদ্ধ শেষ ভোটযুদ্ধ। কারণ তার বয়স হযেছে। এবারই তিনি আখেরি লড়াইয়ে আসতে চান। ভোটের রাজনীতি সামনে রেখে দেশ-বিদেশে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। অর্থ সংকটেও থাকলেও আগামী নির্বাচনে ভূতে যোগাবে এরশাদের ভোটের টাকা। এমন কথা ইতিমধ্যে চালু হয়েছে।
নির্বাচন কমিশন থেকে নিবন্ধন বাতিল হলেও, যুদ্ধাপরাধের মামলায় শীর্ষ নেতাদের ফাঁসি হলেও, মামলা-মোকদ্দমায়, দমন-পীড়নে অনেকটা আত্নগোপনে চলে গেলেও জামায়াত যেকোনো মূল্যে আগামী সংসদের তার প্রতিনিধিত্ব চায়। জামায়াতের অর্থনৈতিক সামাজ্য হাতছাড়াও হলেও ভোটযুদ্ধে অর্থ যোগানে তাদের কোনো অসুবিধা হবে না।
ভোটের বাজারে টাকা ঢুকবে আগামী নির্বাচনে। জামায়াত জোটেই থাকুক আর বাইরের থাকুক ৫০ জন প্রার্থীর তালিকা চূড়ান্ত করেছে। এখান থেকে ১০ টি আসনে জেতার জন্য মরণ লড়াইয়ে নামবে দলটি। সব মিলিয়ে আগামী জাতীয় নির্বাচন সবার জন্য চ্যালেঞ্জের। আর সেই ভোটযুদ্ধে দলীয় প্রার্থীদের জিতিয়ে আনতে নেতাকর্মীরা পরিশ্রমই নয়, অর্থের ছড়াছড়ি করতে কাপর্ণ্য করবেন না। ভোটের লড়াই পরিণত হবে টাকার লড়াইয়ে। আর নির্বাচন কমিশনের বেঁধে দেয়া অর্থ খরচের যে সীমা তা কেউ আমলে নিবেন না বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন।