সংসার ভেঙে সিঙ্গেল যেসব দেশি তারকা
২০০৪ সাল। ভালোবাসা দিবস এলেই বাড়ির দরজায় ফুল রেখে যে মিথিলাকে ফোন করতেন তাহসান, সম্প্রতি দুজনই থাকেন আলাদা আলাদা। সম্প্রতি ডিভোর্স হয়েছে জনপ্রিয় এ তারকা জুটির। ২০০৪ সালের কোন এক সময় মিথিলার এক বন্ধু তার ছোট ভাইয়ের জন্য তাহসানের অটোগ্রাফ নিতে যাওয়ার সময় মিথিলাকে সঙ্গে নিয়ে যান তাহসানের বাড়িতে। ওই সময় মিথিলা তাহসানের কিছু গান শুনলেও ভক্ত হননি। সেই প্রথম পরিচয় তাদের। সে থেকে প্রেম। এ সম্পর্কেই কেটে যায় ২০০৪ থেকে ২০০৬। মিথিলার জন্য গান লিখেন তাহসান। তার সুরে গান গাইলেন মিথিলা। গান গাওয়ার মধ্য দিয়েই দুটি জীবন এক সুতোয় বাঁধা পড়ে। প্রেমের দুই বছর তাদের মধ্যে ঝগড়া কিংবা খুনসুটিও হতো না তেমন। ২০০৬ সালের ৩ আগস্ট প্রেমের সম্পর্কের ইতি টেনে বিয়ে করেন তারা। সংসারে যোগ হয় আইরা তাহরিম নামে তাদের একমাত্র কন্যা। দীর্ঘ ১১ বছর সুখে সংসার করলেও এর মধ্যেই লুকিয়ে ছিল দূরত্বের বীজ।
কয়েক মাস ধরে তেমনই ইঙ্গিত ভাসছিল মিডিয়ায়। তখন সে বিষয়ে কোনো সদুত্তর না পাওয়া গেলেও অবশেষে দু’জনে একসঙ্গে জানালেন ডিভোর্সে যাচ্ছেন। কারণ হিসেবে ওঠে এসেছে মীমাংসার অযোগ্য দ্বন্দ্ব! চলতি বছরের মে মাসে দীর্ঘ ১১ বছরের সংসারের ইতি টানেন তাহসান-মিথিলা। সংসার ভেঙে দুজনেই আপাতত সিঙ্গেল। ডিভোর্সের চার মাস পার হলেও নতুন বিয়ের খবর শোনা যায়নি কারোই।
মডেল সুজানা: ২০১৪ সালের ১ আগস্ট ভালোবেসে বিয়ে হয়েছিল তরুণ কণ্ঠশিল্পী হৃদয় খান ও মডেল সুজানার। তাঁদের দুজনেরই এটি ছিল দ্বিতীয় বিয়ে। মাস তিনেক যেতে না যেতেই তাঁদের দাম্পত্য জীবনে টানাপোড়েন শুরু হয়। একটা পর্যায়ে তা চরম আকার ধারণ করে। বনিবনা না হওয়ায় প্রাথমিক অবস্থায় মাস চারেক ধরে আলাদা থাকেন এ জুটি। অবশেষে ২০১৫ সালের ৬ এপ্রিল সোমবার বিকেল চারটার দিকে ঢাকার মনিপুরিপাড়ায় একটি কাজী অফিসে গিয়ে তালাকনামায় স্বাক্ষর করেন হৃদয়-সুজানা। মাত্র আট মাসের সংসার জীবনের আনুষ্ঠানিক ইতি ঘটে ডিভোর্সের মাধ্যমে। দুই বছর সিঙ্গেল থাকার পর হৃদয় খান আবার বিয়ে করলেও সুজানা এখনও সিঙ্গেলই আছেন। চলতি বছরের ১০ সেপ্টেম্বর হুমায়রা নামের এক মালয়েশিয়া প্রবাসীকে পারিবারিকভাবে বিয়ে করেন সঙ্গীতশিল্পী হৃদয় খান।
অভিনেত্রী বাঁধন: ২০১০ সালের ৮ সেপ্টেম্বর পরিবারের ঘনিষ্ঠজনদের উপস্থিতিতে ব্যবসায়ী সনেটের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন ছোট পর্দার অভিনেত্রী বাঁধন। পাঁচ বছরের মধ্যেই স্বামীর থেকে আলাদা হয়ে যান এই অভিনেত্রী।েএকটা সময় ঘোষণা দিয়ে অভিনয় থেকে সরে গিয়েছিলেন শুধুমাত্র স্বামী আর সংসারেরর জন্য। বিয়ের পরপরই বাচ্চা নিয়ে নেন। কন্যা সন্তান মিশেলের জন্মের পর তাঁকে নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন। দু বছরের বেশি সময় ধরে তিনি স্বামী সংসার ছেড়ে থাকেন বাবার বাড়িতে। সন্তানের লেখা পড়া আর নিজের খরচ জোগাড়ের তাগিদে আবারও অভিনয়ে নিয়মিত হন তিনি। আলাদা থাকার এই বিষয়টা নিয়েই সেসময় থেকেই মিডিয়ায় গুঞ্জন চলছিল। সে গুঞ্জনই অবশেষে সত্যি হয় ২০১৪ সালে। তবে এতদিন ধরে বিষয়টি গোপন ছিল। প্রকাশ্যে আসে চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে। স্বামীর সংসার ছেড়ে আপাতত মেয়ে আর অভিনয় নিয়ে ব্যস্ত আছে বাঁধন।
অভিনেত্রী মোনালিসা: ১২-১২-১২ ম্যাজিকাল তারিখে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলেন শোবিজ জগতের জনপ্রিয় মডেল ও অভিনেত্রী মোনালিসা। আমেরিকা প্রবাসী স্বামী ফাইয়াজকে বিয়ে করে সেখানেই থাকতে শুরু করেন। কিন্তু সংসার জীবনের বছরখানেক না যেতেই স্বামীর সঙ্গে শুরু হয় মনোমালিণ্য। সেই মনোমালিণ্যের ইতি ঘটে ২০১৪ এর শুরুর দিকেই। ডিভোর্সের পর আমেরিকাতেই থাকেন মোনালিসা। স্বামীর সংসার ছেড়ে আমেরিকার একটি প্রতিষ্ঠানে সেলস গার্ল হিসেবে কাজ করেন অভিনেত্রী। ডিভোর্সের প্রায় তিন বছর হয়ে গেলেও এখনও নতুন কোনও বিয়ে খবর শোনা যায়নি জনপ্রিয় এ মডেল ও অভিনেত্রীর। তবে মাঝে মাঝে নাটকের শুটিংয়ের জন্য দেশে আসতে দেখা যায় তাকে।
স্পর্শিয়া-রাফসান: শোবিজ জগতের তরুণ মডেল ও অভিনেত্রী অর্চিতা স্পর্শিয়া। অন্যদিকে স্বামী রাফসান আহসান পেশায় একজন ভিডিওচিত্র নির্মাতা। ২০১৫ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর নির্মাতা রাফসান আহসানের সঙ্গে পারিবারিকভাবে বাগদান সম্পন্ন হয় মডেল ও অভিনেত্রী স্পর্শিয়ার। ওই বছরই ১ অক্টোবর বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তারা। একটি অনলাইন শপের ভিডিওচিত্র নির্মাণের মাধ্যমেই সখ্যতা গড়ে উঠেছিলো রাফসান এবং স্পর্শিয়ার। ধীরে ধীরে সেটি রূপ নেয় বন্ধুত্ব, এরপর প্রেম। তারপর পরিণয়ে। টেকেনি তাদের সংসারও। চলতি বছরের ২১ আগস্ট রাজধানীর মোহাম্মদপুরের একটি কাজী অফিসে স্বামী রাফসানের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে ডিভোর্স হয় স্পর্শিয়ার। সেই সূত্রে দুজনই এখন সিঙ্গেল। ডিভোর্সের ক্ষেত্রে সংসারে তৃতীয় ব্যক্তি ঢুকে পড়েছিল বলে দাবি করেন রাফসান। তার দাবি যদি সত্যি হয় তবে খুব বেশিদিন হয়তো একা থাকবেন না স্পর্শিয়া।