সাচনা-জামালগঞ্জ : সেতুর অভাবে লাখো মানুষের ভোগান্তি
শহীদনূর আহমেদ :: একটি সেতুর অভাবে যুগ যুগ ধরে ভোগান্তিতে রয়েছেন জামালগঞ্জ উপজেলার লাখ লাখ মানুষ। উপজেলার সুরমা নদীর উপর সেতু না হওয়ায় ১২ মাস খেয়া পারাপারে মাধ্যমে জামালগঞ্জ ও সাচনাবাজারের দুই পাড়ের মানুষকে যোগাযোগ করতে হয়। দীর্ঘদিন ধরে সেতু নির্মাণের দাবি জানালেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। জনপ্রতিনিধিদের আশ্বাসের আবর্তে ঘুরপাক খাচ্ছে জনগণের দাবি। বিভিন্ন সভা-সমাবেশে সাচনা-জামালগঞ্জ সেতু নির্মাণকাজ প্রক্রিয়াধীন থাকার কথা জানালেও কবে নাগাদ তা বাস্তবায়ন হতে পারে এর সঠিক উত্তর দিতে পারেনি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ। এমন অবস্থায় জনমনে প্রশ্ন- কবে হবে জামালগঞ্জ-সাচনা সেতু। জানা যায়, ৩৩৮.৭৪ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের জামালগঞ্জ উপজেলায় ইউনিয়নের সংখ্যা ৬টি। ছয় ইউনিয়নের প্রায় দেড়লাখ মানুষের প্রধান যাতায়াতের সড়ক হচ্ছে জামালগঞ্জ-সাচনা-সুনামগঞ্জ সড়ক। জামালগঞ্জ সদর ও সাচনা বাজারের মধ্য দিয়ে সুরমা নদী বয়ে যাওয়ায় জেলা শহর কিংবা অন্যত্র পৌঁছতে খেয়া পারাপার হতে হয় এলাকাবাসী। বছরের বারো মাস নানা ভোগান্তি আর ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করে থাকেন তারা। তাছাড়া প্রতিকূল আবহাওয়ায় নৌকা পারাপার হতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হতে হয়।
এদিকে নদীর উত্তরপাড়েই জামালগঞ্জ উপজেলা সদর। যেখানে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের অফিস, হাসপাতাল, থানা, স্কুল-কলেজসহ গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান রয়েছে। অপরদিকে নদীর দক্ষিণ পাড়ে রয়েছে জেলার বৃহত্তম প্রাচীন সাচনাবাজার। যেখানে নিয়মিতই হাট বসে। জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে পণ্য ক্রয় করতে আসেন ক্রেতারা। ফলে দুই পাড়ের মানুষের যোগাযোগের অন্যতম পথ জামালগঞ্জ-সাচনা খেয়া। জেলার ব্যস্ততম এই খেয়াঘাট দিয়ে গন্তব্যে প্রতিনিয়ত যাতায়াত করেন লক্ষাধিক মানুষ। দুই পাড়ের মানুষের যাতায়াতের সুবিধার্তে সুরমা নদীর উপর সেতু নির্মাণ হলে জেলা শহরের সাথে সরাসরি যোগাযোগের পাশাপাশি উপজেলাবাসীর অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন সাধিত হবে হবে। তাই সুরমা নদীর উপর জামালগঞ্জ-সাচনা সেতু নির্মাণে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন উপজেলার বাসিন্দারা।
জামালগঞ্জ ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য মোহন তালুকদার বলেন, জামালগঞ্জ উপজেলা দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত, বঞ্চিত। দীর্ঘদিন ধরে জামালগঞ্জ-সাচনা সেতু নির্মাণের দাবি উঠে আসলেও উপেক্ষিত থাকছে বিষয়টি। সংশ্লিষ্টরা কেবল আশ্বাসের বাণী শুনিয়ে যাচ্ছেন। কবে নাগাদ উপজেলাবাসী সেতু পাবে কেউ জানে না। এখন আমাদের শেষ ভরসা প্রধানমন্ত্রী। বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাড. আসাদুল্লাহ সরকার বলেন, জামালগঞ্জ-সাচনা সেতুটি অতিব জরুরি। প্রতিদিনই নানা কষ্ট আর ভোগান্তি করে হাজার হাজার মানুষ খেয়া নৌকায় পারাপার হয়ে থাকেন। সেতুটি নির্মাণ হলে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার পাশাপাশি উপজেলার মানুষের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন হবে। সরকার দেশব্যাপী অসংখ্য রাস্তাঘাট, সেতু নির্মাণ করছেন। তাই প্রধানমন্ত্রীর কাজে দাবি জামালগঞ্জবাসীকে একটি সেতু নির্মাণ করে দেয়ার জন্যে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহবুব আলম বলেন, হাওর অঞ্চলে উড়াল সেতু ও অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় সুনামগঞ্জ-সাচনা-জামালগঞ্জ সেতু নির্মাণের কাজের ডিজাইন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। প্রস্তাবিত ডিজাইন ১২১০ মিটার। এই প্রকল্পটি শীঘ্রই বাস্তবায়ন হবে বলে আমরা আশাবাদী।