সিদ্ধান্তহীনতায় নতুন জোট
বিকল্প রাজনৈতিক জোট গঠনের লক্ষ্যে গত ১৪ জুলাই জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (রব) জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রবের উত্তরার বাসায় বৈঠক করেন কয়েকটি রাজনৈতিক দলের নেতারা। ফাইল ছবিসরকার ও বিচার বিভাগের মধ্যে সৃষ্ট বৈরী পরিবেশের ধাক্কা রাজনীতির মাঠেও জোরেশোরে প্রভাব ফেলেছে। আর এ কারণেই মূলত সব প্রস্তুতি সত্ত্বেও শেষ মুহূর্তে পিছিয়ে গেছে পাঁচ দল সমন্বয়ে নতুন জোট গঠনের উদ্যোগ। এ ব্যাপারে এখনই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে না। তবে বর্তমান পরিস্থিতি আরও কিছুদিন পর্যবেক্ষণ করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে জানায় দলগুলোর সংশ্লিষ্ট সূত্র।প্রাথমিকভাবে যে পাঁচটি রাজনৈতিক দল মিলে এ জোট গঠনের কথা ছিল সেগুলো হচ্ছে- সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর (বি. চৌধুরী) নেতৃত্বাধীন বিকল্প ধারা বাংলাদেশ, বিশিষ্ট আইনজীবী ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন গণফোরাম, আ স ম আবদুর রবের নেতৃত্বাধীন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ এবং সাবেক ছাত্রনেতা ও ডাকসুর সাবেক ভিপি মাহমুদুর রহমান মান্নার নেতৃত্বাধীন নাগরিক ঐক্য।
এ জোট গঠন প্রক্রিয়ার শুরুতে উদ্যোক্তাদের বক্তব্য ছিল, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট এবং বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের বাইরে দেশে একটি বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তোলার অংশ হিসেবে নতুন এ জোট আত্মপ্রকাশ করবে। এর আগে বৈঠকে বসবেন দুই শীর্ষ নেতা অধ্যাপক ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী এবং ড. কামাল হোসেন। এর পর পরই তারা জোটের আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশের বিষয়টি দেশবাসীর সামনে তুলে ধরবেন। ঈদুল আজহার আগেই নতুন জোটের আত্মপ্রকাশ ঘটবে বলেও জানিয়েছিলেন তারা।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী শনিবার যুগান্তরকে বলেন, ‘দেশের সর্বশেষ অবস্থাসহ সাম্প্রতিক নানা ঘটনা বিশ্লেষণ করে নতুন জোট গঠনের বিষয়ে আমরা কিছুটা ধীরে চলো নীতি অবলম্বন করছি। এ কারণে আপাতত দুই শীর্ষ নেতা (বি. চৌধুরী ও ড. কামাল হোসেন) জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানিয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছেন। আমরা দেখতে চাই, কারা কারা এ আহ্বানে সাড়া দেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা হুট করে ঝাঁপিয়ে পড়লাম, আবার দু’দিন পর দেখা গেল, আরও কেউ কেউ ঝাঁপিয়ে পড়ল- তাই একটু দেখেশুনে পা বাড়াতে চাই।’
সূত্র জানায়, পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী বি. চৌধুরীর বারিধারার বাসভবন মায়াবীতে ২২ আগস্ট রাতে একান্তে বৈঠক করেন ড. কামাল হোসেন। অনেকটা গোপনীয়তা রক্ষা করে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে নয়া জোট গঠন প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা হয়। ওই বৈঠকে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় এবং প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার কিছু পর্যবেক্ষণ নিয়ে সরকার ও বিচার বিভাগের মধ্যকার সাম্প্রতিক টানাপোড়েন নিয়ে আলোচনা হয় দুই নেতার মধ্যে। পরিস্থিতি কোন দিকে যায়, তা দেখে পরবর্তী করণীয় ঠিক করার সিদ্ধান্ত নেন বি. চৌধুরী এবং ড. কামাল হোসেন। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন যথাসময়ে অনুষ্ঠান নিয়েও বৈঠকে শঙ্কা প্রকাশ করেন তারা।
জানা গেছে, বি. চৌধুরী ও ড. কামাল হোসেনের এ বৈঠকে আরও কিছু বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়। এর মধ্যে দীর্ঘ এক যুগ পর ১৫ আগস্ট বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর সপরিবারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করার বিষয়টিও আলোচনার টেবিলে স্থান পায়। জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব এবং নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নার অতীতের ভূমিকা নিয়ে পর্যালোচনা করেন তারা। বৈঠকে ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘অনেকেই তার অবস্থান এখনও স্পস্ট করেননি। আবার অনেকের লক্ষ্য, শুধু ক্ষমতার অংশীদারিত্ব পাওয়া। এ অবস্থায় জোট গঠনে আরও কিছুদিন অপেক্ষা করাই শ্রেয়।’ তিনি এ সময় সম্ভাব্য এ জোটের শরিকদের নিয়ে আপাতত যুগপৎভাবে পথ চলার পক্ষে মত দেন। বি. চৌধুরীও এতে একমত পোষণ করেন।
সূত্র জানায়, ওই বৈঠকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা, স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন, ভোট অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য করতে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ, নির্বিঘেœ সভা-সমাবেশসহ সব ধরনের রাজনৈতিক অধিকার ফিরিয়ে দেয়া, দমন-পীড়ন বন্ধ, চিহ্নিত সন্ত্রাসী, কালো টাকার মালিক ও ঋণখেলাপিদের প্রভাবমুক্ত নির্বাচন, আইনের শাসন ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং বিচার বিভাগের ওপর হস্তক্ষেপ বন্ধ করা প্রভৃতি ইস্যুতে যুগপৎভাবে আন্দোলন গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত হয়। পাশাপাশি তারা বাম ঘরানার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গেও যুগপৎ কর্মসূচি দিয়ে রাজপথে থাকার সিদ্ধান্ত নেন।
জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গণফোরামের এক শীর্ষ নেতা যুগান্তরকে বলেন, সিদ্ধান্তহীনতার কারণেই নতুন জোট গঠনের বিষয়টি পিছিয়ে গেছে। ভোটের মাঠে সুবিধা নিশ্চিত করতে এ জোটের উদ্যোক্তারা কে কোন পথে হাঁটবেন, এ চলার পথে কে কাকে পাশে টানবেন বা পাশে পাবেন- এখন তা নিয়ে করছেন নানা হিসাব-নিকাশ। এতেই পিছিয়ে যাচ্ছে জোট গঠনের প্রক্রিয়া। তিনি বলেন, শরিকদের বেশিরভাগই ক্ষমতার ভাগ চান। এর আগে নির্বাচনে অংশ নিয়ে জয় নিশ্চিত করতে চান। আর তা নিশ্চিত করতে হলে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট কিংবা বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের কারও না কারও সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধতে হবে। আর ক্ষমতা ভাগাভাগির দরকষাকষিতে ভোটের আগে শক্তিশালী নতুন জোট গঠন করতে পারলেও আসন ও ক্ষমতা নিশ্চিত হবে- এমনটাও মাথায় রয়েছে অনেকের।
এ জোট গঠন প্রক্রিয়ার শুরুতে উদ্যোক্তাদের বক্তব্য ছিল, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট এবং বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের বাইরে দেশে একটি বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তোলার অংশ হিসেবে নতুন এ জোট আত্মপ্রকাশ করবে। এর আগে বৈঠকে বসবেন দুই শীর্ষ নেতা অধ্যাপক ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী এবং ড. কামাল হোসেন। এর পর পরই তারা জোটের আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশের বিষয়টি দেশবাসীর সামনে তুলে ধরবেন। ঈদুল আজহার আগেই নতুন জোটের আত্মপ্রকাশ ঘটবে বলেও জানিয়েছিলেন তারা।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী শনিবার যুগান্তরকে বলেন, ‘দেশের সর্বশেষ অবস্থাসহ সাম্প্রতিক নানা ঘটনা বিশ্লেষণ করে নতুন জোট গঠনের বিষয়ে আমরা কিছুটা ধীরে চলো নীতি অবলম্বন করছি। এ কারণে আপাতত দুই শীর্ষ নেতা (বি. চৌধুরী ও ড. কামাল হোসেন) জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানিয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছেন। আমরা দেখতে চাই, কারা কারা এ আহ্বানে সাড়া দেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা হুট করে ঝাঁপিয়ে পড়লাম, আবার দু’দিন পর দেখা গেল, আরও কেউ কেউ ঝাঁপিয়ে পড়ল- তাই একটু দেখেশুনে পা বাড়াতে চাই।’
সূত্র জানায়, পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী বি. চৌধুরীর বারিধারার বাসভবন মায়াবীতে ২২ আগস্ট রাতে একান্তে বৈঠক করেন ড. কামাল হোসেন। অনেকটা গোপনীয়তা রক্ষা করে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে নয়া জোট গঠন প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা হয়। ওই বৈঠকে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় এবং প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার কিছু পর্যবেক্ষণ নিয়ে সরকার ও বিচার বিভাগের মধ্যকার সাম্প্রতিক টানাপোড়েন নিয়ে আলোচনা হয় দুই নেতার মধ্যে। পরিস্থিতি কোন দিকে যায়, তা দেখে পরবর্তী করণীয় ঠিক করার সিদ্ধান্ত নেন বি. চৌধুরী এবং ড. কামাল হোসেন। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন যথাসময়ে অনুষ্ঠান নিয়েও বৈঠকে শঙ্কা প্রকাশ করেন তারা।
জানা গেছে, বি. চৌধুরী ও ড. কামাল হোসেনের এ বৈঠকে আরও কিছু বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়। এর মধ্যে দীর্ঘ এক যুগ পর ১৫ আগস্ট বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর সপরিবারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করার বিষয়টিও আলোচনার টেবিলে স্থান পায়। জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব এবং নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নার অতীতের ভূমিকা নিয়ে পর্যালোচনা করেন তারা। বৈঠকে ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘অনেকেই তার অবস্থান এখনও স্পস্ট করেননি। আবার অনেকের লক্ষ্য, শুধু ক্ষমতার অংশীদারিত্ব পাওয়া। এ অবস্থায় জোট গঠনে আরও কিছুদিন অপেক্ষা করাই শ্রেয়।’ তিনি এ সময় সম্ভাব্য এ জোটের শরিকদের নিয়ে আপাতত যুগপৎভাবে পথ চলার পক্ষে মত দেন। বি. চৌধুরীও এতে একমত পোষণ করেন।
সূত্র জানায়, ওই বৈঠকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা, স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন, ভোট অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য করতে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ, নির্বিঘেœ সভা-সমাবেশসহ সব ধরনের রাজনৈতিক অধিকার ফিরিয়ে দেয়া, দমন-পীড়ন বন্ধ, চিহ্নিত সন্ত্রাসী, কালো টাকার মালিক ও ঋণখেলাপিদের প্রভাবমুক্ত নির্বাচন, আইনের শাসন ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং বিচার বিভাগের ওপর হস্তক্ষেপ বন্ধ করা প্রভৃতি ইস্যুতে যুগপৎভাবে আন্দোলন গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত হয়। পাশাপাশি তারা বাম ঘরানার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গেও যুগপৎ কর্মসূচি দিয়ে রাজপথে থাকার সিদ্ধান্ত নেন।
জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গণফোরামের এক শীর্ষ নেতা যুগান্তরকে বলেন, সিদ্ধান্তহীনতার কারণেই নতুন জোট গঠনের বিষয়টি পিছিয়ে গেছে। ভোটের মাঠে সুবিধা নিশ্চিত করতে এ জোটের উদ্যোক্তারা কে কোন পথে হাঁটবেন, এ চলার পথে কে কাকে পাশে টানবেন বা পাশে পাবেন- এখন তা নিয়ে করছেন নানা হিসাব-নিকাশ। এতেই পিছিয়ে যাচ্ছে জোট গঠনের প্রক্রিয়া। তিনি বলেন, শরিকদের বেশিরভাগই ক্ষমতার ভাগ চান। এর আগে নির্বাচনে অংশ নিয়ে জয় নিশ্চিত করতে চান। আর তা নিশ্চিত করতে হলে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট কিংবা বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের কারও না কারও সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধতে হবে। আর ক্ষমতা ভাগাভাগির দরকষাকষিতে ভোটের আগে শক্তিশালী নতুন জোট গঠন করতে পারলেও আসন ও ক্ষমতা নিশ্চিত হবে- এমনটাও মাথায় রয়েছে অনেকের।