‘সিরিয়াল পরকীয়ায় আসক্ত’ মাদ্রাসা শিক্ষিকার কাণ্ড!
স্ত্রীর পরকীয়া ঠেকাতে ৪৭ শতাংশ জমিও লিখে দিয়েছিলেন স্বামী। কিন্তু এতেও দমেনি স্ত্রীর সিরিয়াল পরকীয়া। শেষ পর্যন্ত নগদ ৬০ হাজার টাকাসহ দুই লক্ষাধিক টাকার মালামাল নিয়ে প্রেমিকের হাত ধরে ঘর ছেড়েছেন মাদ্রাসা শিক্ষিকা স্ত্রী। বগুড়া সদরের ফাঁপোড়ে কৈচড় সিদ্দিকীয়া দাখিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষিকা সাফিয়া বেগমের এই ‘সিরিয়াল পরকীয়ায়’ এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে বগুড়ার অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বামী আবদুল খালেক মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং- ১৭০১ সি/১৭ (সদর)। মামলা সূত্রে ও সরেজমিনে জানা গেছে, ফাঁপোড় পশ্চিমপাড়ার সিফাতুল্লাহ মন্ডলের ছেলে আবদুল খালেকের সঙ্গে একই এলাকার মলাধরার সামছুল হকের মেয়ে সাফিয়ার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। পরে পারিবারিকভাবেই তাদের বিয়ে হয়। দীর্ঘ ২২ বছরের দাম্পত্য জীবনে তাদের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। কলেজপড়ুয়া ওই ছেলের বয়স ১৮ বছর। ঢাকার একটি কলেজে পড়াশোনা করে সে।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর বাড়িতে অবস্থানকালে পরকীয়া নিয়ে মায়ের সঙ্গে ছেলের কথাকাটাকাটি হয়। এসময় ছেলে বাড়ির আসবাবপত্র ভাঙচুর। এতে মা ক্ষিপ্ত হয়ে ছেলেকে জানিয়ে দেন, তার বাবাকে ডিভোর্স দেবে। এসময় আবদুল খালেক চাকরি সূত্রে কুষ্টিয়ায় অবস্থান করায় বিষয়টি তার ছেলে মোবাইলে জানায়। ওই দিনই সাফিয়া তার বাবার উপস্থিতিতে মামা নূর আলমকে সঙ্গে নিয়ে নগদ ৬০ হাজার টাকাসহ আনুমানিক দুই লক্ষাধিক টাকার মালামাল নিয়ে বাড়ি ছেড়ে চলে যান। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দীর্ঘ ২২ বছরের সংসার জীবনের শেষপ্রান্তে প্রেমিক সোহেলের প্ররোচণায় এ কাজটি করেছেন সাফিয়া। মেধাবী ছাত্রী হওয়ায় আবদুল খালেক স্ত্রীর এসএসসি, এইচএসসি, বিএসসি ও বিএড পর্যন্ত লেখাপড়ার খরচ চালান। মাদ্রাসায় চাকরি পেতেও সার্বিক সহযোগিতা করেন। এরপর ২০১০ সালে ওই মাদ্রাসার এক শিক্ষকের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে স্বামী আবদুল খালেককে ডিভোর্স দিতে চান সাফিয়া। তবে শেষ পর্যন্ত স্ত্রীর দাবি অনুযায়ী ৪৭ শতাংশ জমি লিখে দিয়ে সংসার বাঁচান আবদুল খালেক। এর আগে শীতলাই মাদ্রাসায় শিক্ষকতার সময় কাহালুতে বাসাভাড়া নিয়ে থাকাকালেও অন্য একজনের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ রয়েছে সাফিয়ার বিরুদ্ধে।
সর্বশেষ ছেলে ঢাকায় পড়তে গেলে বগুড়ায় সরকারি চাকরিতে কর্মরত পাবনার সোহেল নামের একজনের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন সাফিয়া। ফেসবুক সূত্রে তাদের এই অনৈতিক সম্পর্ক ফাঁস হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত সোহেলের প্ররোচনায় সাফিয়া আবারো স্বামীকে ডিভোর্স দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এরপর থেকেই সাফিয়া থানায় জিডি ও মামলা করে ভয়-ভীতি দেখিয়ে আসছেন বলেও স্বামী আবদুল খালেক অভিযোগ করেন। ওই শিক্ষিকার সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। এবিষয়ে কৈচড় সিদ্দিকীয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার লুৎফর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে উভয়ের মধ্যে মামলা চলছে জানি। সাংসারিক বিষয় হওয়াই আমাদের করণীয় কিছু ছিল না। তবে আপনাদের কাছে পাওয়া পরকীয়ার প্রমাণের ভিত্তিতে আমরা মাদ্রাসার সভাপতিসহ শিক্ষকদের নিয়ে অবশ্যই একটি ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’ বগুড়া সদর থানার পরিদর্শক আসলাম আলী বলেন, স্ত্রীর পরকীয়া সংক্রান্ত একটি মামলা থানায় রেকর্ড করা হয়েছে।