মন্ত্রীদের সন্তানরা কে কি করছেন সাধারণ মানুষের তা জানার আগ্রহ অনেক। সিলেটের দুই মন্ত্রীসহ প্রভাবশালী মন্ত্রীদের বেশিরভাগ সন্তানই দেশে-বিদেশে প্রতিষ্ঠিত। নিজেরা রাজনীতিতে থাকলেও বেশিরভাগ মন্ত্রী তাদের সন্তানদের রেখেছেন রাজনীতির বাইরে। সাধারণ মানুষের আগ্রহের কথা বিবেচনা করে নিচে কয়েকজন মন্ত্রীর সন্তানদের তথ্য তুলে ধরা হলো।অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত তিন সন্তানের জনক। মেয়ে বেগম সামিনা মুহিত একজন ব্যাংকার এবং মুদ্রানীতি ও আর্থিক খাতের বিশেষজ্ঞ হিসেবে নিউইয়র্কে কর্মরত। বড় ছেলে সাহেদ মুহিত স্থপতি ও তথ্যপ্রযুক্তিবিদ হিসেবে ঢাকায় কর্মরত। আর ছোট ছেলে সামির মুহিত যুক্তরাষ্ট্রের হিউস্টনে শিক্ষকতা করছেন।

শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদদের দুই মেয়ে, নাদিয়া নন্দিতা ইসলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং নাজিয়া সামান্থা ইসলাম বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা। তাঁরা নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে সফলতা অর্জন করেছেন।বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের একমাত্র মেয়ে মুন্নী একজন চিকিৎসক। আর মন্ত্রীর জামাতা হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. তৌহিদুজ্জামান তুহিন।জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয় জনপ্রতিনিধি। আর এই প্রতিনিধিদের বা এমপিদের নিয়েই গঠিন হয় সরকার, যেখানে কেউ কেউ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়ে হন মন্ত্রী। মন্ত্রীদের সাফল্য যেমন দেশের জন্য কল্যাণ বয়ে আনে তেমনি নিজের সন্তানদের সাফল্যও তাঁদের করছে গর্বিত।

এমনই গর্বিত মা হলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর সন্তান সজীব ওয়াজেদ জয় আর মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ হোসেন পুতুল। দুজনই স্ব স্ব ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত। যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী তথ্য প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ জয় কয়েক বছর আগে আওয়ামী লীগের সদস্যপদ নিলেও রাজনীতিতে ততটা সক্রিয় নন।তবে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। এই কাজে তাঁর সক্রিয়তা রাজনীতির চেয়ে অনেক বেশি দৃশ্যমান। মেয়ে সায়মা হোসেন পুতুল অটিজম নিয়ে কাজ করে ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নজর কেড়েছেন। ইউনেসকোর আমির জাবের আল-আহমদ আল-সাবাহ পুরস্কার সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক জুরিবোর্ডের সভায় সভাপতি নির্বাচিত হন সায়মা।

জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফ এক মেয়ে রুপন্তী। মন্ত্রীর স্ত্রী ও মেয়ে বর্তমানে লন্ডনে রয়েছেন। পড়াশুনা ও কাজে দক্ষতার পরিচয় দিয়ে যুক্তরাজ্যের অন্যতম রিটেইল চেইন টেসকোর বড় পদে কর্মরত রুপন্তী।বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের একমাত্র মেয়ে মুন্নী একজন চিকিৎসক। আর মন্ত্রীর জামাতা হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. তৌহিদুজ্জামান তুহিন।স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ে (এলজিআরডি) দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের ছেলে খন্দকার মাশরুর হোসেন মিতু। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেয়ে পুতুলের জামাতা। তিনি ২০১৬ সালে আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলনে ফরিদপুর জেলা থেকে কাউন্সিলর পদে নির্বাচিত হন।সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। সফল অভিনেতা থেকে হয়ে উঠেছেন একজন সার্থক মন্ত্রী। তাঁর ছেলে সুদীপ্ত আর মেয়ে সুপ্রভা। ছেলে লন্ডনের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএ করছেন। আর মেয়ে এ লেভেল শেষে করেছেন। ডেইলি স্টারে লেখালেখি করেন মেয়ে সুপ্রভাত।

বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রনালয়ের দায়িত্বরত পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন। এক মেয়ে ও ছেলের জনক তিনি। মেয়ে ড. সুবর্ণা খান ক্যান্সার সেলের ওপর পিএইচডি করে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে কর্মরত। পুত্র আনিক রাশেদ খান আইনের ছাত্র।আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের চার ছেলেমেয়ের মধ্যে একজন রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। অন্য তিন ছেলেমেয়ে রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত নন। তাঁর মেজ ছেলে আইটি ইঞ্জিনিয়ার মাহবুবুর রহমান রুহেল পারিবারিক ব্যবসা দেখাশোনা করেন। পাশাপাশি জড়িত রয়েছেন রাজনীতিতে। বর্তমানে তিনি উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক। বড় ছেলে সাবেদুর রহমান ও ছোট ছেলে আমিনুর রহমান পারিবারিক ব্যবসায় জড়িত। একমাত্র মেয়ে রিপা পেশায় একজন চিকিৎসক।

মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও প্রবাসী কল্যাণ ও কর্মসংস্থান মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসির সাত সন্তানের কেউই রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত নন। তাঁর পাঁচ ছেলে সবাই বিদেশের উচ্চতর ডিগ্রিধারী। এরা হলেন, মুজিবর রহমান, সাইফুল ইসলাম, জাহেদুল ইসলাম, কামরুল ইসলাম ও ওয়াহিদুল ইসলাম। তাঁরা সবাই পারিবারিক ব্যবসা দেখাশোনা করেন। দুই মেয়ে শাকিলা জাহান ও ডা. মনোয়ারা জাহান মুন্নী।তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর ছেলে প্রকৌশলী শমিত আশফাকুল হক। কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং এ স্নাতক পাশ করেছেন তিনি।কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের মাধ্যমে ক্রিকেটের মাঠে অতি পরিচিত মুখ নাফিসা কামাল। পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের মেয়ে তিনি। দেশব্যাপী নাফিসার পরিচিতি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের কর্ণধার হিসেবে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn