সিলেটের মানুষ চায় সুলতান মনসুর পরশ্রীকাঁতররা চায় আবুল, কাবুল
আপনি এবং সিলেটের আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দকে বলছি, সামনে হয়তো ফাইনাল হবে! ফাইনাল। আকাশে বজ্রপাতের ঘণঘটা। হয়তো এবার সত্যিকারের খেলা হবে। এ খেলায় সিলেটের জন্য দরকার একজন ষ্ট্রাইকার। দরকার একজন ম্যারাডোনা। যে গোটা সংগঠনকে উজ্জীবিত করবে। আর সে হলো জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর মানষপুত্র, ৭৫’র বঙ্গবন্ধু হত্যা পরবর্তী বিপ্লবের সিপাহসালার, সিলেটের মাটি ও মানুষের হৃৎপিন্ডস্থিত বন্ধু, যিনি নবজাগরণের শিল্পী, তিনি ডাকসু ভিপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ। যে বিপ্লবী দেশান্তরী ভারত থেকে ফিরে এসে ৮০’র দশকের শুরুতে বৃহত্তর সিলেটের তরুন প্রজন্মকে প্রগতির পথে, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সংগ্রামে উদ্দেলিত করেছিলো; দূর্ণীতিবাজ নেতৃত্বের বদৌলতে সিলেটের নুঁয়ে পড়া আওয়ামীলীগকে আজ আবার উদ্দীপ্ত করতে প্রয়োজন নব জাগরণের কান্ডারী, বাংলার প্রগতিশীল ছাত্র ও যুব আন্দোলনের বরপুত্র সেই কালজয়ী ষ্ট্রাইকার সুলতান মনসুর। সিলেটের ‘ম্যারাডোনা’।
দুনিয়ায় সর্বকালে, সকল দেশে সুপ্রিম পাওয়ার একক নেতৃত্বকে ভূল সিদ্ধান্ত গ্রহনে সহায়তা করেছে। যা আজ বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রতিটি দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের ক্ষেত্রে প্রতিফলিত হচ্ছে। রাগ-বিরাগের বশবর্তী হয়েও সুপ্রিম নেতৃত্ব ইচ্ছেমতো সিদ্ধান্ত গ্রহন করার অপার ক্ষমতাশীল। সুলতান মনসুর আজ আওয়ামীলীগের বাইরে; এর জন্য কি কেবল সুলতান দায়ী? আর কি কারো দায়গ্রস্থতা নেই? জানি, বাংলাদেশে এ প্রশ্ন অবান্তর। এখানে শীর্ষ নেতৃত্বের শীর্ষ চাটুকারই সর্বোচ্চ মর্যাদাবান; সে হোক শ্রেষ্ট দূর্ণীতিবাজ কিংবা গণদুষমন, অথবা হোক জনবিচ্ছিন্ন বাস্তুহারা। বাংলাদেশের রাজনীতির ‘ক্লিনম্যান’ সুলতান মনসুর লঘু পাপে গুরুদন্ডের শিকার বলে দেশবাসীর কাছে প্রতিয়মান। তাঁকে চিরতরে তাঁর স্বপ্নের আওয়ামীলীগ থেকে ছুঁড়ে ফেলতে সক্রিয় রয়েছেন পরশ্রীকাঁতর ষড়যন্ত্রকারীরা। বস্তুত: তাঁর অপরাধ তিনি সাদাকে সাদা আর কালোকে বলেন কালো। তিনি লোভ ও দূর্ণীতিমুক্ত। জনকল্যান, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহীতা যার রাজনীতির ভূষন। তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের ত্যাগের রাজনীতিকেই বরণ করেছেন- যিনি স্বপ্ন দেখেন একটি পরিচ্ছন্ন ও দূর্ণীতিমুক্ত বাংলাদেশ যেখানে জবাবদিহীতাই হবে রাজনীতিবিদদের নিয়ন্ত্রক। তাই তিনি স্বেচ্ছাচারী দূর্ণীতিবাজ নেতাদের ষড়যন্ত্রের শিকার। কিন্তু, অনেকেই মনে করেন এ বাংলাদেশ সুলতান মনসুরদের জন্য নয়, যেমন নয় বঙ্গতাজ তাজ উদ্দিন তনয় সোহেল তাজের। এ বাংলাদেশ দূর্ণীতির বরপুত্র ঢাকার নবাবপুরের আব্দুল মান্নানদের জন্য, যে সর্বোচ্চ নেতৃত্বের করুনায় বসে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়ামে, এ বাংলাদেশ কাজী জাফর উল্লাহ চৌধুরীদের, যার জনসম্পৃক্ততা বা গ্রহনীয়তার ক্ষেত্র বলে কিছুর বালাই নেই, তাদের কোন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয়না, কিন্তু, আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়ামের পদ আঁকড়ে আছে দু’যুগ থেকে কেবল সর্বোচ্চ নেতৃত্বের অনুরাগে।
স্বেচ্ছাচারী, দূর্ণীতিবাজ ও পরশ্রীকাঁতরদের হাজারো ষড়যন্ত্রে আদর্শিক রাজনীতির ইতিহাসের বরপুত্র সুলতান মনসুরকে দল থেকে ছুঁড়ে ফেলে গাঁ’য়ে মানেনা আপনি মোড়লদের চেহারা দেখে কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগে নেতার আসনে বসালেই যে জাতীয় নেতা বানানো যায় না’ তা দেশবাসী অবলোকন করেছে। আর সিলেটের আওয়ামীলীগ পরিবার ও সিলেটবাসী অবলোকন করেছে নানা সময়ে সাংগটনিক দূর্যোগে-দূর্বিপাকে। তাই মানুষ মনে করে, অসীম ক্ষমতার বদৌলতে কঠোর নির্দেশের বলে সুলতান মনসুরদের দলের বাইরে রাখা অতি সহজ, কিন্তু, এ অবস্থায় ইহধাম ত্যাগ করলেও সুলতানরা থাকবে অবিনস্বর। মানুষের শ্রদ্ধা ও আস্থার আঁতুড়ঘর, ইতিহাসের বরপুত্রদের বেলায় যা সচরাচর ঘটে। যা রুখার সাধ্য কারো নাই।
সুলতান মনসুর কোনদিন দূর্ণীতি করেননী। নেতাকর্মীদের তিনি বলতেন, “যদি রাজনীতি করতে চাও, তবে আমার নেতা বঙ্গবন্ধুকে পড়ো, জানো, অনুকরণ ও অনুধাবন করো। তাঁর জীবনীই হোক তোমাদের রাজনীতির হাতিয়ার”। মৃত বঙ্গবন্ধুর চরিত্রে কালিমা লেপন করার অভিপ্রায়ে তাঁকে দূর্ণীতিবাজ সাঁজাতে যেমন মোস্তাক -জিয়াচক্র হাজারো চেষ্টা করে দেশব্যাপী তন্ন তন্ন করে তল্লাশী চালিয়েও ব্যাংক একাউন্টে পেয়েছিলো চৌদ্দ হাজার টাকা, পরিশেষে খুনিচক্রই লজ্জায় পড়েছিলো, তেমনি তাঁর আদর্শিত সুলতানের ব্যাংক একাউন্ট তন্ন তন্ন করে খুজেও হয়তো তাঁকে কেউ দূর্ণীতির কালিমায় যুক্ত করতে পারবেনা। এমন নেতাই হোক আওয়ামীলীগের জাতীয় নেতা। হোক সিলেটের অভিভাবক।
স্কুলের বালি আর মাঠের ধুলিমাখা বদনে কারান্তরীণ বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামের গল্প শুনে ১৯৬৮সালে যে সুলতান বঙ্গবন্ধুর আদর্শের প্রেমে পড়েছিলো, কালক্রমে সে সুলতান মনসুরই হয়েছিলো বঙ্গবন্ধুর হত্যার প্রতিবাদে সিলেটের মাটিতে প্রথম প্রতিবাদ মিছিলের উদ্যোক্তা, যে জাতীয় চারনেতা হত্যার প্রতিবাদে ভয়কে জয় করে সিলেটের মাটিতে প্রথম প্রতিবাদের রণহুংকার দিয়েছিলো জয় বাংলার মিছিলে, বঙ্গবন্ধুবিহীন বাংলাদেশে সিলেটের আকাশ বাতাস প্রকম্পিত করে দরাজকন্ঠে শ্লোগান তুলেছিলো ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ বলে, ভীরুতাকে ঝেড়ে ফেলে তরুণপ্রাণকে করেছিলো উদ্দীপ্ত যৌবনের বাঁধভাঙা সাহসে বলীয়ান, বঙ্গবন্ধুর রক্তের বদলা নেওয়ার মরণপণ সংগ্রামে খুনি সরকারের বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে হয়েছিলো দেশান্তরী বিপ্লবী- আজ সিলেটের মাটিতে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের পতাকা যখন দূর্ণীতিবাজ নেতৃত্বের করাল থাবায় বেদনাক্লিষ্ট ও অস্ফুটে ক্রন্দনরত, নেতাকর্মীরা যখন দিশেহারা এবং নেতৃত্বের লক্ষ্য ও আদর্শের প্রতি সন্দিহান- তখন সিলেটের মাটিতে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের ঊজ্জীবনে ও নেতাকর্মীদের জাগরণের জন্য চাই একজন ষ্ট্রাইকার। একজন ম্যারাডোনা। আর তিনিই সুলতান মনসুর।
ওবায়দুল কাদের সাহেব, বক্তৃতা মানুষকে উদ্দীপিত করে, নবজাগরণ ঘটায়। কিন্তু, বক্তা নিজেই যদি হয় দূর্ণীতিগ্রস্থ, চরিত্রহীন, মানুষের কাছে হাঁসির পাত্র তবে সে বক্তার বক্তৃতা মানুষের কাছে রাস্তার খড়কুটোর মতো হয়ে যায়। মানুষকে উদ্দীপ্ত করার বদলে অবদমিত করে। আজ সিলেটের আওয়ামীলীগের বড় বড় নেতাদের চরিত্র দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের নিকট হাঁসির খোরাক মাত্র। গত দশবছরে রাষ্ট্রক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সিলেটে কোন কঠিন পরীক্ষার সম্মূখিন হয়নি, এবারই প্রথম হলো সিলেটের সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে। তাতেই কেল্লাফতে। দৃশ্যমান হলো সব দুর্বলতা। সামনে সাধারণ নির্বাচন। সিলেটের প্রতিটি আসনে আওয়ামী লীগের যে সাংগটনিক অবস্থা! তাতে যথার্থ নির্বাচনের সম্মূখিন হলে দলের অবস্থা যে কি হবে তা ‘আল্লাহ মালুম’। এ অবস্থায় বৃহত্তর সিলেটে দলকে ঢেলে সাজাতে হবে। দলের নেতাকর্মীদের সাথে এম পি-মন্ত্রীদের দুরত্ব কমিয়ে আনতে হবে। যা সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন চোঁখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে।
সিলেটের মানুষ পাগল নয়, ছাগলও নয়। যদি কেউ মনে করেন সিলেটের ত্যাগী নেতৃবৃন্দকে অবমূল্যায়ন করে বিপদের দিনে ঢাকা থেকে তৃতীয় শ্রেণীর নেতাদের সিলেটে রপ্তানী করে বক্তৃতায় মোটা মোটা কথা প্রসব করে, আবেগ আর আদর্শ-চেতনার বাগাড়ম্বর ঘটিয়ে মানুষকে আবুল বানিয়ে ব্যাকুল করে দিবেন তবে এ ধারনা নিতান্তই ভূল। সিলেটের মাটি, মানুষ, সংস্কৃতি ও সম্প্রীতি গোটা বাংলাদেশের মধ্যে এক অনন্যধারায় সৃষ্ট ও উন্নীত, যা গোটা দেশবাসী জ্ঞাত রয়েছেন। ভবিষ্যতে এ বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন জরুরী।
সিলেটের আওয়ামীলীগ ‘স্যার’দের তত্বাবধানে কখনোই সুবিধা করেনি। সুবিধা করেছে সামাদ আজাদ, ফরিদ গাজী, সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত, বাবরুল হোসেন বাবুল, সুলতান মনসুর, বদরুদ্দিন আহমদ কামরানদের মতো ভাই’দের তত্বাবধানে। এখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভাড়া করা আমলা দিয়ে সিলেটের আওয়ামী লীগ চলবেনা। এখানে প্রয়োজন ‘ভাই’, ‘স্যার’ নয়। যারা মনে করেন স্যার দিয়ে ভাইয়ের কাজ চালাবেন তাদের ধারণা ভূল। তা সময়েই হয়তো আরো প্রগাঢ়ভাবে প্রমাণিত হবে। আর বর্তমান প্রেক্ষাপটে ব্যাক্তিত্বে ও ঔদার্য্যে, নেতৃত্বে ও চারিত্রিক বিশালতায় ইতিহাসের বরপুত্র সুলতান মনসুরের চেয়ে যোগ্যতর ‘ভাই’ সিলেটবাসীর জন্য আর কে হতে পারে?
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে বলছি, এখনো সময় আছে- আওয়ামীলীগের সুলতানকে আওয়ামীলীগ থেকে পুরো বিচ্ছিন্ন করবেননা। সিলেটবাসীর সুলতানকে যথাযত মর্যাদায় সিলেটের জন্য কাজ করার সুযোগ দিন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের ঔরষজাত সুলতানকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের ঊজ্জ্বীবনে নিযুক্ত করুন। তাঁর যদি অপরাধ হয় তিনি তাঁর প্রজন্মের মধ্যে দেশব্যাপী জনপ্রিয়তায় শ্রেষ্ট, তবে তা তাঁর প্রতি স্রষ্টার অশেষ কৃপা বলেই ধরে নিন। ‘প্রতিহিংসা করে নিজের মেধার উন্নতি সম্ভব নয়’ তাতো বঙ্গবন্ধুই বলে গেছেন । অন্তত বঙ্গবন্ধুর কথাটাকে আতœস্থ করুন। সুলতান মনসুরের বিরুদ্ধে জননেত্রী শেখ হাসিনার কান ঝালাপাল না করে, কুমন্ত্রণায় ক্লিষ্ট না করে তাঁর প্রতি সিলেটের জনগণের সত্যিকারের আকর্ষনটুকু তুলে ধরুণ। তাঁর প্রয়োজনীয়তাটুকু বিশ্লেষণ করুন। আজ দেখতে নাদুসনুদুস ভিতরে বেহুস বৃহত্তর সিলেটের আওয়ামীলীগে একজন জাতীয় নেতার অপরিহার্যতা অনস্বীকার্য। বর্তমান প্রেক্ষাপটে যা সুলতান মনসুর ব্যতিত পূর্ণ করা অসম্ভব। ত্যাগ, যোগ্যতা ও ব্যক্তিত্বের বিশালতা যদি নেতৃত্বের মাপকাটি হয় তবে সুলতান মনসুর সে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সর্বদা। রাস্তা থেকে তুলে নিলেই যে জাতীয় নেতা বানানো যায়না তাতো প্রমানিত হয়েই গিয়েছে।
ওবায়দুল কাদের সাহেব, আজ সিলেটবাসী চায় সকল ভূলের অবসান ঘটুক। বিনাশ হোক সকল রাগ-বিরাগ, মান-অভিমানের। বঙ্গবন্ধুর মানসপুত্র সুলতান, মুজিবাদর্শের রণতূর্য সুলতান, ছাত্রলীগের সুলতান, আওয়ামী লীগের সুলতান, সিলেটের মাটি ও মানুষের অকৃত্রিম বন্ধু সুলতান মোহাম্মদ মনসুর হোক আগামী দিনের সিলেটের আওয়ামী লীগের কান্ডারী ও জাতীয়নেতা, বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার বিস্বস্থ সহচর এবং আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের মূল ষ্ট্রাইকার, মুজিবাদর্শের ম্যারাডোনা।
আগামী দিনগুলোতে মুজিবাদর্শের জয় হোক। জয়বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু ।