সুনামগঞ্জ  :: টানাবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যায় সুনামঞ্জের পৌর শহরের অনেক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। বসতঘরে পানি উঠায়  বড়পাড়া বস্তি এলাকা, পশ্চিম হাজীপাড়া , নবীনগর, এলাকায় মানেবতর জীবনযাপন করছেন অতন্ত অর্ধশতাধিক পরিবার। বড়পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্লাট সেন্টারে আশ্রয় নিয়েছেন বস্তি এলাকা ও পশ্চিম হাজীপাড়ার ১৮ পরিবার। আশ্রয় কেন্দ্রে থাকলেও আশ্রয়হীন অবস্থায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা। আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়া বন্যা দুর্গতরা অভিযোগ করেছেন সপ্তাহের অধিক সময় আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান করলেও জেলা প্রশাসনের কোনো পর্যায়ের কর্মকর্তা, পৌরসভার জনপ্রতিনিধি বা রাজনৈতিক দলের কোনো নেতৃবৃন্দ খোঁজখবর নেননি তাদের। পাননি কোন ত্রাণ সহযোগিতা। ফলে অনাহার অর্ধাহারে দিন কাটছে তাদের। তাছাড়া বিশুদ্ধ পানি, সেনিটেশন সমস্যায় ভুগছেন আশ্রয় নেয়া মানুষজন। ফলে পানিবাহিত রোগের ভুগছেন শিশু, বয়স্ক লোকসহ বিভিন্ন বয়েসের অনেকেই। এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের চিকিৎসা সেবা না পাওয়াও অভিযোগ করেছেন তারা।
বুধবার সকালে সরজমেনি গিয়ে দেখা যায় বড়পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নেয়া বন্যাদুর্গত মানুষের দুর্ভোগের চিত্র । প্রতিবেদকে দেখতেই ত্রাণের জন্য ছুটে আসেন আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়া নারী,পুরুষ ও শিশুরা।স্কুলেরর বারিন্দায় অস্থায়ি চুলা তৈরী করে রান্না করতে  দেখা যায় কয়েকজন নারীকে। আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন পশ্চিম হাজীপাড়া ও বস্তি এলাকার আব্দুর রউফ, মমিনুল হক তোঁতা, নাসির উদ্দিন, আফরোজা বেগম, লিলু মিয়া, মনির উদ্দিন, কালাম মিয়া, জামাল উদ্দিন, নুরুল ইসলাম, বাপ্পি, আলী হোসেন, ওয়াইদুল আলী, শাকিরুল , জহুরা বেগম, হাজেরা বেগম, আছপিয়া বেগম ও তাদের পরিবার। এই পরিবারগুলোর প্রায় সকলই নি¤œ আয়ের। প্রতি পরিবারেই একাধিক শিশু রয়েছে। রয়েছে নারী বয়স্ক সদস্য। কয়েকজন অসুস্থ্য শিশু ও বয়স্ক লোক রয়েছেন। যাদের কোনো চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়নি। তাছাড়া আশ্রয় নেয়া লোকরা বিশুদ্ধ পানি ও সেনিটেশন সংকটে ভোগছেন। তাছাড়া নি¤œ আয়ের এসব পরিবারে খাবার সংকট দেখা দিয়েছে। এমন অবস্থায় ত্রাণ সামগ্রী ও চিকিৎসা সহযোগিতা কামনা করছেন তারা। আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া আব্দুর রউফ বলেন, বসতঘরে পানি উঠায় ৮দিন হল আশ্রয়কেন্দ্রে এসেছি। এখন পর্যন্ত একটা মানুষও আমাদের আইসা দেখে যায়নি। না কোনো মেয়র না কাউন্সিলর। আমরা খুব কষ্টে জীবনযাপন কররাম। হাজেরা বেগম বলেন, আমি অসহায় মানুষ। রান্নাবান্না করার কোনো টাকা পয়সা আমার কাছে নাই। বড় কষ্টে আছি। ঘরের পানি এখনও নামেনি। বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে বিপাকে আছি। ৭০ বছর বয়সী নুরুল ইসলাম বলেন, আশ্রয় কেন্দ্রে আছি কিন্তু খাওন নাই। অসুস্থ হইয়া রইছি শরীরও শক্তি নাই। পৌর এলাকার মধ্যে আমরা বড় অসহায়।
এ ব্যাপারে পৌরসভার মেয়র নাদের বখত সিলেটভিউকে বলেন, আমাকে প্রশাসন থেকে জানানো হয়েছে সুনামগঞ্জ পৌর শহরের নাকি ৪ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হয়েছে। কিন্তু আমি এব্যাপারে কিছু জানি না। কে চাল পেলো বা কার মাধ্যমেই চাল দেওয়া হল তা কোনো তথ্যই আমাকে জানানো হয়নি। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. হারুন অর রশীদ সিলেটভিউকে বলেন, নিয়মনুযায়ী আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে খিচুড়ি রান্না করে খাওয়ানোর কথা। আমি এখনই এ ব্যপারে ব্যবস্থা নিচ্ছি।
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn