সুনামগঞ্জে শুরু হয়েছে ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে টেক্সটাইল ইনস্টিটিউটের কাজ
জেলার দক্ষিণ সুনামগঞ্জে প্রায় ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘সুনামগঞ্জ টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট’ স্থাপন প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে একজন উপ-সচিবকে এই প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের জনবল নিয়োগ কার্যক্রমও শুরু হয়েছে। প্রকল্প পরিচালকের অফিস সূত্রে জানা গেছে, ৯৭ কোটি ২১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্পটির বাস্তবায়ন কাজ শুরু হয়েছে। গত ২৫ এপ্রিল এই প্রকল্প প্রস্তাবনা একনেকে অনুমোদনের পর ২৩ মে পরিকল্পনা বিভাগ এবং ২০ জুন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রকল্প অনুমোদনের প্রশাসনিক আদেশ জারী করা হয়। এরপর ২৫ জুলাই উপ-সচিব মো. আনোয়ারুল হাবীব প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান এমপির চেষ্টায় এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে।
অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রীর নির্দেশে প্রকল্পটির শুরু থেকেই সুনামগঞ্জের তরুণ গার্মেন্টস ব্যবসায়ী শিল্পপতি শ্যামল রায় প্রকল্প বাস্তবায়নের বিভিন্ন পর্যায়ের অগ্রগতি দেখভাল করছেন। প্রকল্প পরিচালক আনোয়ারুল হাবীব সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে সম্প্রতি চিঠি দিয়ে প্রকল্পের অগ্রগতি জানিয়েছেন, চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেছেন প্রস্তাবিত জমি সরেজমিন পরিদর্শন পূর্বক গত ২৯ আগস্ট অধিগ্রহণের প্রস্তাব জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক অধিগ্রহণ প্রস্তাবের সম্ভাব্যতা যাচাই করেছেন। এটি এখন দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। প্রকল্পের অনুকূলে এখনো কোন অর্থ বরাদ্দ হয়নি। অর্থ বরাদ্দের প্রস্তাব গত ২৪ আগস্ট অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাবটি
গত ১৩ সেপ্টেম্বর পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ সামাজিক অবকাঠামো বিভাগে প্রেরণ করা হয়েছে। আর্থ সামাজিক অবকাঠামো বিভাগ থেকে প্রস্তাবটি ২০ সেপ্টেম্বর কার্যক্রম বিভাগে প্রেরণ করা হয়েছে এবং বর্তমানে সেখানে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। প্রকল্পের জনবল নিয়োগের প্রশাসনিক অনুমোদন পাওয়া গেছে এবং সরাসরি আউটসোর্সিং পদ্ধতিতে জনবল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি ১২ সেপ্টেম্বরে দুটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত হয়েছে। সরাসরি নিয়োগের আবেদনপত্র এবং আউটসোর্সিং জনবল নিয়োগের দরপত্র গ্রহণের শেষ তারিখ ৩ অক্টোবর।প্রকল্প পরিচালক চিঠিতে জানান, চলতি (২০১৭-১৮) অর্থ বছরে ভূমি অধিগ্রহণ, ভূমিউন্নয়ন ও অন্যান্য আনুষাঙ্গিক কাজের জন্য ৭ কোটি ৫১ লাখ ৬০ হাজার টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে।শ্যামল রায় বলেন,‘প্রকল্পটির অনেক কাজই দ্রুততার সঙ্গে হচ্ছে। শুরু থেকেই সুনামগঞ্জের ছেলে হিসাবে অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রীর নির্দেশে প্রকল্পটির অগ্রগতি বিষয়ে খোঁজ খবর রাখছি। প্রকল্পের জনবল নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়েছে। আশা করছি দ্রুত অর্থ ছাড় হবে এবং প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হবে। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে হাওরাঞ্চলের শিক্ষার্থীদের কর্মমুখী শিক্ষার পথ সুগম হবে। মাননীয় অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী দেশের বাইরে রয়েছেন, তিনি দেশে আসার পর কাজের দ্রুত অগ্রগতি হবে।’
প্রকল্প পরিচালক আনোয়ারুল হাবীব বলেন,‘প্রকল্পের কিছু জনবল নিয়োগের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। ভূমি অধিগ্রহণ ও অর্থ বরাদ্দের বিষয়টিও চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। মাননীয় অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী সব সময় প্রকল্পের অগ্রগতির বিষয়ে খোঁজ খবর নিচ্ছেন। আমরা আশা করছি দ্রুততম সময়ের মধ্যে অর্থ ছাড় হবে এবং যথাসময়ে আমরা প্রকল্পটির সকল কার্যক্রমই সম্পন্ন করতে পারবো’। অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান বলেন,‘আমি সরকারি কাজে নিউজিল্যান্ডে রয়েছি। দেশে ফিরে এই বিষয়ে খোঁজ খবর নেব এবং দ্রুত যাতে প্রকল্পের অর্থ বরাদ্দসহ অন্যান্য কার্যক্রম সম্পন্ন করা যায়, সেই চেষ্টা করবো। এই প্রতিষ্ঠানটি সুনামগঞ্জসহ হাওরাঞ্চলের শিক্ষার্থীদের কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত করবে এবং দেশের সম্ভাবনাময় শিল্প গার্মেন্টস খাতের জনবল তৈরি করবে।’