সুনামগঞ্জ সদর ও পৌর আ.লীগ : নেতা হওয়ার দৌড়ে নবীন-প্রবীণরা
সুনামগঞ্জ সদর ও পৌরসভায় আওয়ামী লীগের সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণের পর সম্প্রতি ঘোষণা দিয়ে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশীরা প্রচারণায় নেমেছেন। বিভিন্ন বলয়ে যুক্ত নবীন ও প্রবীণ নেতারা এখন জেলা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ শীর্ষ নেতৃবৃন্দের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়িয়ে দিয়েছেন। জেলা শহরের মর্যাদাপূর্ণ দুই ইউনিটে স্থান পেতে অনেকেই আগ্রহী হয়ে ওঠেছেন। তবে গত ১০ বছরের অনুপ্রবেশকারীরা আওয়ামী লীগে স্থান পাবেনা – কেন্দ্রের এই নির্দেশনার পর অনুপ্রবেশকারীদের চুপসে যেতে দেখা গেছে। এতে ত্যাগী ও নিবেদিতপ্রাণ নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসাহ লক্ষ করা যাচ্ছে। আগামী ২৩ নভেম্বর সুনামগঞ্জ সদর ও পৌর আ.লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। নেতৃত্বপ্রত্যাশী নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে ইতোমধ্যে আলোচনায় আছেন বর্তমান কমিটির সভাপতি হাজী আবুল কালাম ও সাধারণ সম্পাদক মোবারক হোসেন। এই দুইজন জেলা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছেও তাদের ইচ্ছের কথা প্রকাশ করে নেতাকর্মীদের সমর্থন আদায়ে কাজ করছেন। তাদের সঙ্গে প্রদীপ পাল নিতাইয়ের নামও আলোচনায় রয়েছে। তাছাড়া সদর উপজেলা আ.লীগ সভাপতি হিসেবে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান খায়রুল হুদা চপলকে চান তার সমর্থকরা। এই উপজেলায় সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের ভিপি ও সাবেক কাউন্সিলর অ্যাডভোকেট মনীষ কান্তি দে মিন্টু, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান ও সদর উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম উকিলের নাম শোনা যাচ্ছে। তাছাড়া যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আসাদুজ্জামান সেন্টু, যুবলীগ নেতা সবুজ কান্তি দাস, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ফজলে রাব্বী স্মরণ, সত্যজিত দাস লিপন, জাকির হোসেন শাহিন এবং অ্যাডভোকেট মাজহারুল ইসলামের নামও শোনা যাচ্ছে। সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশী এই নেতাদের মধ্যে মনীষ কান্তি দে মিন্টু, আসাদুজ্জামান সেন্টু এবং মাজহারুল ইসলাম উকিল জোরালো প্রচারণা চালাচ্ছেন। তারা জেলা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের সঙ্গেও যোগাযোগ শুরু করে দিয়েছেন।
সুনামগঞ্জ পৌর আ.লীগের সভাপতি হিসেবে সরাসরি প্রচারণায় আছেন বর্তমান পৌর কমিটির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মলয় চক্রবর্তী রাজু এবং মুক্তিযোদ্ধা সন্তান ইয়াকুব বখত বহলুল। সাধারণ সম্পাদক হিসেবে অ্যাডভোকেট হাসান মাহবুব সাদী এবং সাবেক ছাত্রনেতা সৈকতুল ইসলাম শওকতের নাম শোনা যাচ্ছে। এছাড়াও অনেকে প্রার্থিতা ঘোষণা করলেও প্রকাশ্যে প্রচারণায় এখনো আসেননি। পৌর আ.লীগে সভাপতি পদপ্রত্যাশী অ্যাডভোকেট মলয় চক্রবর্তী রাজু বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে পৌর আ.লীগে কাজ করেছি। পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে নেতৃত্ব বিকাশে নানা উদ্যোগ নিয়েছি। সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পেলে পৌর শহরকে প্রকৃত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সমন্বয়ে দুর্গ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চাই। পৌর মেয়র নাদের বখত বলেন, অতীতে ও বর্তমানেও আমার পরিবার পৌর শহরের সকল দুর্যোগে মানুষের পাশে আছে। আওয়ামী লীগের প্রতি নিবেদিতপ্রাণ হিসেবে আমাদের পরিবারের বিশেষ সুনাম আছে। এবার আমাদের পরিবারের ইয়াকুব বখত বহলুলকে পৌর আ.লীগে সভাপতি হিসেবে সমর্থকরা দাবি জানাচ্ছেন।
সদর উপজেলা আ.লীগে সাধারণ সম্পাদক প্রত্যাশী মাজহারুল ইসলাম উকিল বলেন, আমার বাবা একাত্তরের একজন দুঃসাহসিক মুক্তিযোদ্ধা। চেতনাগতভাবেই আমার পরিবারে মুক্তিযুদ্ধের রক্ত বহমান আছে। আমি সদর উপজেলায় মুক্তিযুদ্ধের অসাম্প্রদায়িক চেতনায় পরিচালিত নতুন প্রজন্মের নেতা হিসেবে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে চাই। আমাকে এই দায়িত্ব দেওয়া হলে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলাকে আওয়ামী লীগের ঘাঁটিতে রূপান্তরিত করে জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে তৃণমূলে আরো সম্প্রসারিত করতে চাই। জেলা আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক অ্যাডভোকেট নূরে আলম সিদ্দিকী উজ্জ্বল বলেন, সদর উপজেলা ও পৌরসভায় অনেক নেতাই সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হওয়ার জন্য প্রচারণায় নেমেছেন। তারা আমাদের জেলা নেতাদেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। আমরা গঠনতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় প্রকৃত আওয়ামী পরিবার থেকেই জননেত্রীর নির্দেশে নেতা বাছাই করব।সূত্র-দৈনিক সুনামকন্ঠ।