সুনামগঞ্জ হাওর রক্ষাবাঁধে দুর্নীতিঃ ৭৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে!
সুনামগঞ্জে হাওর রক্ষাবাঁধ নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম, অবহেলা ও দুর্নীতির খোঁজ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অনুসন্ধান শেষে দুদক কর্মকর্তা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) মহাপরিচালক (ডিজি), অতিরিক্ত মহাপরিচালক, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী, সুনামগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী ও ঠিকাদারসহ অন্তত ৭৫ জনের বিরুদ্ধে মামলার সুপারিশ করেছেন। দুদকের পরিচালক বেলাল হোসেন এদের বিরুদ্ধে মামলার সুপারিশ করে কমিশনে প্রতিবেদনও দাখিল করেছেন। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের। সূত্রমতে, অনুসন্ধান প্রতিবেদনে যে ৭৫ জনের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়েছে তাদের মধ্যে পাউবোর মহাপরিচালক ছাড়াও তিনজন অতিরিক্ত মহাপরিচালক, পাউবো সুনামগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী, সিলেটের প্রধান প্রকৌশলী ও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী, সুনামগঞ্জের ৪ জন উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী, ১৩ জন উপ-সহকারী প্রকৌশলী ও হাওর রক্ষাবাঁধ নির্মাণ কাজের সঙ্গে জড়িত ৫০ জন ঠিকাদারের নাম রয়েছে। এ ছাড়া পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের একজন যুগ্ম সচিবের নামও এসেছে অনুসন্ধান পর্যায়ে। তবে তাকে আসামি করার সুপারিশ করা হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। দুদক সচিব আবু মো. মোস্তফা কামাল বলেন, হাওর নিয়ে অনুসন্ধান টিম প্রতিবেদন দাখিল করেছে। কমিশনে সেটি এখন যাচাই-বাছাই চলছে। আগামী সপ্তাহে মামলা হবে কিনা জানতে চাইলে দুদক সচিব বলেন, যাই হোক আগামী সপ্তাহে একটা সিদ্ধান্ত হবে।
বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৫১১ ধারা (দুর্নীতির প্রচেষ্টা), ১৯৫৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা (ক্ষমতার অপব্যবহার) ও দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় (পরস্পর যোগসাজশ) এদের বিরুদ্ধে মামলার সুপারিশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। তবে কারও বিরুদ্ধে সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয়নি বলে দুদক টিমের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা জানান। তিনি বলেন, যথাসময়ে কাজ শুরু না করা, নির্ধারিত সময়ে ঠিকাদারদের ওয়ার্ক-অর্ডার না দেয়া, ঠিকাদারদের কাছ থকে যথাসময়ে কাজ আদায় না করা এবং কাজ করা সত্ত্বেও কিছু ঠিকাদারের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করার মধ্য দিয়ে দুর্নীতির চেষ্টা হয়েছে বলে অনুসন্ধানে জানা গেছে। তিনি বলেন, ঠিকাদারদের সিকিউরিটি মানি জব্দ না করা, তাদের কালো তালিকাভুক্ত না করা ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নেয়ায় দুর্নীতির চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে সুনামগঞ্জ ও সিলেটের স্থানীয় পাউবোর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। অনুসন্ধান টিমের প্রধান দুদক পরিচালক বেলাল হোসেনের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মামলা হওয়ার পর তদন্তকালে যদি দেখা যায়, পাউবোর কর্মকর্তারা ঠিকাদারদের সঙ্গে পরস্পর যোগসাজশে দুর্নীতির মাধ্যমে প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ করেছেন তবে সেই অভিযোগে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে চার্জশিট হবে।
সূত্র জানায়, প্রতিবেদনে পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর কবির ও অপর তিনজন অতিরিক্ত মহাপরিচালকের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলা ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ আনা হয়েছে। বলা হয়েছে, তাদের প্রয়োজনীয় তদারকির অভাবে হাওর রক্ষাবাঁধের জন্য যথাসময়ে অর্থ ছাড় করা হয়নি। দুদক বলছে, ঠিকাদারদের লাভবান করার জন্যই ইচ্ছাকৃতভাবে তারা এমনটি করেছেন। সুনামগঞ্জে হাওর রক্ষাবাঁধে ফাটল ও কোথাও বাঁধ ভেঙে হাওর তলিয়ে যাওয়ার পেছনে পাউবোর স্থানীয় কর্মকর্তা ও ঠিকাদারদের অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার জন্য দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ ২০১৬ সালের ২১ এপ্রিল একটি নির্দেশনা দিয়েছিলেন। সেই মতো দুদকের একজন মহাপরিচালক অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে সুনামগঞ্জে ফসল রক্ষাবাঁধে ভাঙনের বিষয়ে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের কাছে একটি প্রতিবেদন চান। কাদের দুর্নীতির কারণে হাওরের বাঁধ ভেঙে কৃষকের সর্বনাশ হচ্ছে সে বিষয়ে প্রতিবেদন চাওয়ার পর মন্ত্রণালয় পানি উন্নয়ন বোর্ডকে কমিটি করার জন্য বলে। পরে পানি উন্নয়ন বোর্ড গত বছর এপ্রিলেই দুই সদস্যের কমিটি গঠন করে। ওই কমিটির করা প্রতিবেদনটি চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহে দুদকে আসে।
কিন্তু তাতে অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে বাঁধ ভেঙে কৃষকের ফসলহানির বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলা হয়, বন্যা, আগাম বৃষ্টি ও ইঁদুরে বাঁধ কেটে দেয়ার কারণে হাওরে বাঁধ ভেঙে পানি ঢোকে। পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রধান কার্যালয় থেকে গঠিত ওই তদন্ত কমিটি দুর্নীতির কথা গোপন করায় প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির চেষ্টার অভিযোগ আনে দুদক। হাওরে বাঁধ ভেঙে ফসলি জমি তলিয়ে যাওয়া নিয়ে দেশজুড়ে হইচইয়ের পর দুদকের জিজ্ঞাসাবাদে তারা দুর্নীতির ঘটনা স্বীকারও করে নেন।
দুদক মহাপরিচালক (প্রশাসন) মুনীর চৌধুরী বলেন, হওরে বাঁধ নির্মাণে অনিয়ম-দুর্নীতি হয়েছে বলে স্বীকার করেছেন পাউবোর ডিজি ও মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। তারা স্বীকার করেছেন, ঠিকাদারদের কাছ থেকে কাজ আদায় করা ও কাজের বিষয়ে নজরদারির বিষয়টি তারা সঠিকভাবে করতে পারেননি। তারা তাদের ব্যর্থতা ও প্রকল্পের কাজে দুর্নীতির ঘটনা স্বীকার করে নিয়েছেন।
জাানা গেছে, ২০১২-১৩ থেকে ২০১৬-১৭ অর্থবছর পর্যন্ত ৫ বছর মেয়াদি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে হাওরের ফসল রক্ষায় বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা নেয় সরকার। ৩৬টি হাওর রক্ষায় ৪৫ থেকে ৮০ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে দায়িত্ব দেয়া হয়। সেভাবে বাজেটও বরাদ্দ করা হয়। কিন্তু চলতি অর্থবছরে প্রায় ২৫ কোটি টাকার কাজ হলেও বাঁধ রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। এ নিয়ে গণমাধ্যম সোচ্চার হলে দুদক থেকে হাওরের দুর্নীতি অনুসন্ধানে তিন সদস্যের টিম গঠন করা হয়। দুদকের পরিচালক বেলাল হোসেনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের টিম ১৯-২৩ এপ্রিল পর্যন্ত হাওর এলাকায় সরেজমিন পরিদর্শন করে। তারা সংশ্লিষ্টদের জিজ্ঞাসাবাদ করে। প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত নিয়ে আসে। একই সঙ্গে দুদক কার্যালয়ে তলব করে পাউবোর মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক। এরপরই প্রতিবেদন চূড়ান্ত করা হয় বলে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, প্রতিবেদনে পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর কবির ও অপর তিনজন অতিরিক্ত মহাপরিচালকের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলা ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ আনা হয়েছে। বলা হয়েছে, তাদের প্রয়োজনীয় তদারকির অভাবে হাওর রক্ষাবাঁধের জন্য যথাসময়ে অর্থ ছাড় করা হয়নি। দুদক বলছে, ঠিকাদারদের লাভবান করার জন্যই ইচ্ছাকৃতভাবে তারা এমনটি করেছেন। সুনামগঞ্জে হাওর রক্ষাবাঁধে ফাটল ও কোথাও বাঁধ ভেঙে হাওর তলিয়ে যাওয়ার পেছনে পাউবোর স্থানীয় কর্মকর্তা ও ঠিকাদারদের অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার জন্য দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ ২০১৬ সালের ২১ এপ্রিল একটি নির্দেশনা দিয়েছিলেন। সেই মতো দুদকের একজন মহাপরিচালক অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে সুনামগঞ্জে ফসল রক্ষাবাঁধে ভাঙনের বিষয়ে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের কাছে একটি প্রতিবেদন চান। কাদের দুর্নীতির কারণে হাওরের বাঁধ ভেঙে কৃষকের সর্বনাশ হচ্ছে সে বিষয়ে প্রতিবেদন চাওয়ার পর মন্ত্রণালয় পানি উন্নয়ন বোর্ডকে কমিটি করার জন্য বলে। পরে পানি উন্নয়ন বোর্ড গত বছর এপ্রিলেই দুই সদস্যের কমিটি গঠন করে। ওই কমিটির করা প্রতিবেদনটি চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহে দুদকে আসে।
কিন্তু তাতে অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে বাঁধ ভেঙে কৃষকের ফসলহানির বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলা হয়, বন্যা, আগাম বৃষ্টি ও ইঁদুরে বাঁধ কেটে দেয়ার কারণে হাওরে বাঁধ ভেঙে পানি ঢোকে। পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রধান কার্যালয় থেকে গঠিত ওই তদন্ত কমিটি দুর্নীতির কথা গোপন করায় প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির চেষ্টার অভিযোগ আনে দুদক। হাওরে বাঁধ ভেঙে ফসলি জমি তলিয়ে যাওয়া নিয়ে দেশজুড়ে হইচইয়ের পর দুদকের জিজ্ঞাসাবাদে তারা দুর্নীতির ঘটনা স্বীকারও করে নেন।
দুদক মহাপরিচালক (প্রশাসন) মুনীর চৌধুরী বলেন, হওরে বাঁধ নির্মাণে অনিয়ম-দুর্নীতি হয়েছে বলে স্বীকার করেছেন পাউবোর ডিজি ও মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। তারা স্বীকার করেছেন, ঠিকাদারদের কাছ থেকে কাজ আদায় করা ও কাজের বিষয়ে নজরদারির বিষয়টি তারা সঠিকভাবে করতে পারেননি। তারা তাদের ব্যর্থতা ও প্রকল্পের কাজে দুর্নীতির ঘটনা স্বীকার করে নিয়েছেন।
জাানা গেছে, ২০১২-১৩ থেকে ২০১৬-১৭ অর্থবছর পর্যন্ত ৫ বছর মেয়াদি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে হাওরের ফসল রক্ষায় বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা নেয় সরকার। ৩৬টি হাওর রক্ষায় ৪৫ থেকে ৮০ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে দায়িত্ব দেয়া হয়। সেভাবে বাজেটও বরাদ্দ করা হয়। কিন্তু চলতি অর্থবছরে প্রায় ২৫ কোটি টাকার কাজ হলেও বাঁধ রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। এ নিয়ে গণমাধ্যম সোচ্চার হলে দুদক থেকে হাওরের দুর্নীতি অনুসন্ধানে তিন সদস্যের টিম গঠন করা হয়। দুদকের পরিচালক বেলাল হোসেনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের টিম ১৯-২৩ এপ্রিল পর্যন্ত হাওর এলাকায় সরেজমিন পরিদর্শন করে। তারা সংশ্লিষ্টদের জিজ্ঞাসাবাদ করে। প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত নিয়ে আসে। একই সঙ্গে দুদক কার্যালয়ে তলব করে পাউবোর মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক। এরপরই প্রতিবেদন চূড়ান্ত করা হয় বলে জানা গেছে।