সেই মেয়েটির কথা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিপীড়নবিরোধী শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সংঘটিত হামলার শিকার শ্রবণা শফিক দীপ্তি অপপ্রচার নিয়ে বিভ্রান্তি নিরসনে একটি ব্যাখ্যা দিয়েছেন। ২৩শে জানুয়ারি ১১টা ৭ মিনিটে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্টের মাধ্যমে এ ব্যাখ্যা দেন তিনি। সেই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কয়েকটি ছবিও আপলোড করেন। পোস্টে তিনি লিখেছেন- ‘‘ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতানেত্রীরা একটা ছবি গণহারে শেয়ার করছে। সেই ছবিতে দেখানো হচ্ছে একটি মেয়েকে ঘিরে আছে কয়েকজন ছেলে। মেয়েটি কুয়েত মৈত্রী হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শায়লা শ্রাবণী। তারা দাবি করছেন যে, শ্রাবণীকে ঘিরে থাকা ছেলেরা ওকে হয়রানি করছিল। আমি আজকে ছাত্রলীগের হামলার শিকার। আমি প্রকৃত ঘটনাটা সম্পর্কে আপনাদের জানাতে চাই। আজ আন্দোলনে দফায় দফায় ছাত্রলীগ হামলা চালায়। এক পর্যায়ে রেজিস্ট্রার বিল্ডিং-এর চতুর্দিক থেকে ছাত্রলীগ দ্বারা ঘেরাও থাকা আমরা বের হতে গেলে তারা ভয়ঙ্করভাবে হামলে পড়ে। সেখানে আমাকে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতানেত্রী কিল-ঘুষি দিচ্ছিল, টানা-হেঁচড়া করছিল, চড়-থাপ্পড় দিচ্ছিল। একপর্যায়ে আমার পেটে একটা লাথি পড়ে এবং আমি কোণায় ছিটকে পড়ি। এরপর আমার ভাই, বন্ধু এবং সাংবাদিক ভাইয়েরা আক্রমণকারীদের নিরস্ত্র করতে চেষ্টা করলে এই মেয়েটি তাদের গালিগালাজ করতে করতে ব্যারিকেড ভেঙে আসতে চেষ্টা করে। আমার সাহায্যকারীরা তাকে কোনোমতে গায়ে হাত না দিয়ে নিরস্ত্র করার চেষ্টা করছিল। যেটার ছবি ছাত্রলীগের নেতানেত্রীরা শেয়ার করছেন। কিন্তু সেই পর্যায়ে আরেক দিকে আমাদের এক সিনিয়র আপুর বুকে ছাত্রলীগের ছেলেরা ক্রমাগত লাথি দিলে আমার বন্ধুরা তাকে বাঁচাতে এগিয়ে যায়। আমাকে একা পেয়ে এই মেয়েটি ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি মারতে থাকে। আমি দাঁড়িয়ে থাকতে পারছিলাম না। সে আমাকে তখনও মেরে যাচ্ছিল আর বলে যাচ্ছিল, ‘কেন আন্দোলন করলি? আন্দোলন করে… আমরা তা দেখে নেবো।’ ছবিতে আমার ওপর হামলা করতে দেখা যাচ্ছে মেয়েটিকে এবং সে আমার চুল ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছে, জামা টান দিয়ে ছিঁড়ছে। এখন বলেন কে কাকে নিপীড়ন করেছে? এত স্পষ্ট করে দেখিয়ে দেয়ার পরেও আপনারা এই বিভ্রান্তিতে ভাসবেন? নাকি আমাদের ওপর ভিসি স্যার ও প্রক্টর স্যারের প্রত্যক্ষ মদতে হওয়া এই বর্বরোচিত হামলার বিচার চাইবেন? এবং জানিয়ে দিতে চাই, আমি কোনো বামদল করি না, ছাত্রদল করি না, শিবির করি না, ছাত্রলীগও কখনো করি নাই। আমি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক ট্যাগহীন একজন জেনারেল স্টুডেন্ট। বরং আমার বাপ ’৯৪ সালের সেই বিতর্কিত মাগুরা-২ উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী।’