তাহিরপুর উপজেলার হাওরপাড়ে গড়ে উঠা শত শত সরকারী-বেসরকারী বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লেখা-পড়া করছে দরিদ্র পরিবারের হাজার হাজার শিশু শিক্ষার্থীরা। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো হাওরপাড়ের দ্বীপ সাদৃশ্য গ্রামে গড়ে উঠায় এক গ্রামের সাথে অন্য গ্রামের সড়ক পথের কোন যোগাযোগ ব্যবস্থা নেই। ফলে বর্ষার সময়ে ঐসব শিক্ষা প্রতিষ্টানের শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবন থাকে হুমকির মুখে। শিক্ষার্থীরা বর্ষার ৬মাস জীবনের যুকিঁ নিয়ে ছোট ছোট ডিঙ্গি নৌকা নিয়ে হাতে বেয়ে মেঘ,বৃষ্টি ও হাওরের বড় বড় ঢেউ উপেক্ষা করে স্কুলে যাতায়াত করছে প্রতিদিন। আর বাকী ৬মাস কাদাঁ যুক্ত মাঠ,ঘাট,ফসলী জমিনের আইল দিয়ে কোন রখমে পায়ে হেটেঁ।tahirpur,sunamgonj news pic-29,08,1700

জানাযায়,জেলার তাহিরপুর উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের টাংগুয়ার হাওর পাড়ে ছিলাইন তাহিরপুর গ্রামে স্থাপিত জয়পুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। বর্ষার সময় হাওরপাড়ের এই শিক্ষা প্রতিষ্টানের চারপাশে পানিতে থৈ থৈ করে। এই স্কুলে আশ-পাশের ৪টি গ্রামের ২৯০জন শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছে। আর শিক্ষার্থীদের বর্ষায় হাওর পাড়ি দিয়ে স্কুলে যাতায়াত করার জন্য নৌকা ছাড়া অন্য কোন যোগাযোগ মাধ্যম নেই। ঐসব শিক্ষার্থীদের মা,বাবারও সার্মথ্য নেই নৌকা কিনে দেওয়ার। তার পরও অনেক মা,বাবা নিজের সন্তানদের শিক্ষা জীবনের কথা চিন্তা করে তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠিয়ে শিক্ষিত করার জন্য ছোট ছোট ডিঙ্গি নৌকা কিনে দেয়। আর শিক্ষার্থীরা নিজেরাই বইঠা হাতে নিয়ে নৌকা বেড়ে স্কুলে আসা যাওয়া করে। আর যাদের অভিবাবকরা নৌকা কিনতে পারেন না তারা স্কুলে যেতে পারে না। তাই হাওর পাড়ের এই স্কুলে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি থাকে কম। তাই বার বার শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে জয়পুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাদিউজ্জামান তার এ বিদ্যালয়ের জন্য একটি বড় নৌকা দেওয়ার দাবী উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা,শিক্ষা কর্মকর্তা ও জেলা ও উপজেলা পরিষদসহ সবার কাছে লিখিত ভাবে জানালেও কোন সুফল পাচ্ছে না। তাই তিনি ক্ষোব প্রকাশও করে জানান,আমার স্কুলে ২৯০জন শিক্ষার্থী আছে। হাওর পাড়ের ৪টি গ্রামের সকল ছাত্র-ছাত্রীরা বর্ষায় জীবনের ঝুকিঁ নিয়ে ছোট ছোট ডিঙ্গি নৌকা দিয়ে সকল প্রতিকুলতা পায়ের ঠেলে স্কুলে আসছে প্রতিদিন। নৌকার কারনে অনেকেই স্কুলে আসে মা,বাবারাও দিতে চায় না ভয়ে। একটি ভাল ও বড় নৌকা হলে শিক্ষার্থীদের জীবনের নিরাপত্তা ও হাওর পাড়ের মা,বাবারা তাদের সন্তানদের স্কুলে যাওয়া-আসা নিয়ে সারাক্ষন উৎবেগ আর উৎকণ্ঠার মধ্যে থাকতে হবে না। কিছুটা হলেও মনে সান্তনা ও সাহস পাবে। তাই আমি একটি নৌকার জন্য বারবার দাবী জানালেও উধর্বতন কর্মকর্তাদের কাছে এর কোন সুফল পাচ্ছি না। তা ছাড়াও আমার এই আহবানে সাড়া দিয়ে এগিয়ে আসেন নি সমাজের বিত্তবানরাও।tahirpur.sunamgoj news pic.29,08,17

কিন্তু বর্ষায় সময়ে শত শত শিক্ষার্থীর মা,বাবার মত আমিও সারাক্ষন আতংকের মধ্যে থাকি কখন জানি দূর্ঘটনার শিকার হয় আমার শিশু শিক্ষার্থীরা। জয়পুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আব্দুল হালিম ও শিক্ষার্থীদের মা,বাবাগন জানান,ভরা বর্ষায় জীবনের যুঁকি নিয়ে বছরের পর বছর ধরে হাওরের সাথে জীবন সংগ্রাম করেই স্কুলে এসে শিক্ষা গ্রহন করছে হাওর পাড়ের আমাদের সাহসী সন্তানরা। অনেক সময় দূর্ঘটনার শিকার হয়। বর্ষায় সময় একটি বড় ও ভাল নৌকার খুবেই প্রয়োজন যাতে করে আমাদের সন্তানরা নিরাপদে চলাচল করতে পারে। তাহিরপুর উপজেলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা গোলাম জাহান রাব্বি জানান,জয়পুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য একটি বড় নৌকার হলে ভাল হয় বর্ষায় শিশু শিক্ষার্থীদের স্কুলে যোগাযোগের স্বার্থে। একটি নৌকার কেনার জন্য আবেদন উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা বরাবার দেওয়া হয়েছে জানি।

এই বিষয়টি জেলা প্রশাসক মহোদয়ও অবগত আছেন। আমরা চেষ্টায় আছি সর্বাতœক সহযোগীতা করার জন্য। তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান কামরুল জানান,হাওরপাড়ের প্রতিটি স্কুলেই শিক্ষার্থীরা ছোট ছোট নৌকা দিয়ে জীবনের যুকিঁ নিয়ে স্কুলে আসা যাওয়া করে। তাদের জন্য বড় নৌকা হলে ভাল হয়। জয়পুর প্রাথমিক বিদ্যালয় সহ সব বিদ্যালয়ের জন্য আমরা স্বার্ধ মত চেষ্টা করব। তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান,আমাদের এখন কোন ফান্ড নেই। তারপরও এ বিষয়ে ঐ স্কুলের প্রধান শিক্ষক যোগাযোগ করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করব।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn