‘হ্যালো, সুব্রত বাইন বলছি’
মনিরুল ইসলাম-
ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ড কাঁপানো সুব্রত বাইন তাঁর সামনে বসা। ছালাম সাহেব বিশ্বাস করতে পারছেন না। সুব্রত বাইনের বয়স এতটা হওয়ার কথা না। ‘ডিআইজি সাহেব আমাকে সান্ত্বনা দেওয়ার জন্য একাজ করেছে’। ‘পুলিশতো কয়েক বছর আগেও জজ মিয়া কাহিনী বানিয়েছিল। নাটক সাজাতে পুলিশ বরাবরই সিদ্ধহস্ত।’ এসব ভাবতে ভাবতে ছালাম সাহেব অন্যমনস্ক হন। ডিআইজি সাহেবের কথায় ছালাম সাহেবের ভাবনায় ছেদ পড়ে। ছালাম সাহেব জানতে পারেন শুধু সুব্রত বাইন নয়, তার আরো তিন সহযোগীও ধরা পড়েছে। ডিআইজি সাহেব সুব্রত বাইনকে নানা প্রশ্ন করতে থাকেন। ‘আরে লোকটির কণ্ঠস্বর টেলিফোনের কণ্ঠের সাথে মিলে যাচ্ছে’। কণ্ঠতো একই। উদ্ধারকৃত টেলিফোন নম্বরও এক। সুব্রত বাইনের টেলিফোনের ম্যাসেজ বক্স চেক করে ছালাম সাহেবকে পাঠানো ম্যাসেজটা ও পাওয়া যায়। ‘এই লোকটিই তাহলে সুব্রত বাইন’- ছালাম সাহেব মনে মনে ভাবেন। তিনি এবার ডিআইজি সাহেবের কথা বিশ্বাস করতে শুরু করছেন।
ছালাম সাহেবের কয়েকটা বিষয়ে খটকা রয়ে গেছে। ‘এটি যথার্থই সুব্রত বাইন কিনা। নাহলে এ লোকটি কে?’ ডিআইজি সাহেব যেন ছালাম সাহেবের মনের কথা বুঝতে পারলেন। ‘স্যার, আমার নাম আবু মিয়া’- ডিআইজি সাহেবের প্রশ্নের উত্তর দেয় লোকটি। ‘তা’হলে নিজের নাম সুব্রত বাইন বলেছো কেন?’-ছালাম সাহেব নিজেই প্রশ্ন করলেন। ডিআইজি লোকটিকে কর্কশ কণ্ঠে পরপর কয়েকটা প্রশ্ন করলেন। লোকটার জবাব শুনে ছালাম সাহেব মোটামুটি একটা ধারণা পেলেন। এই লোকটি সুব্রত বাইন নয়। আবু মিয়া কোনো সন্ত্রাসী নয়। প্রতারণা করাই তার পেশা। তাদের দলে বেশ কয়েকজন আছে। তারা বিভিন্ন ব্যক্তিকে ফোন দিয়ে চাঁদা চায়। ভয় দেখানোর জন্য কখনো সুব্রত বাইন, কখনো ডাকাত শহীদ, সন্ত্রাসী শাহাদত, জিসান কিংবা মেজর জিয়া পরিচয়ে চাঁদা দাবি করে। আবু মিয়ার কণ্ঠ বেশ ভরাট বলেই সে ঐসব ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী পরিচয়ে কথা বলে। সাধারণত, একজন ফোন করে ‘দাদা’, ‘বড়ভাই’ কিংবা ‘বসের’ সাথে কথা বলার জন্য আবু মিয়ার হাতে ফোন ধরিয়ে দেয়। আবু মিয়ার বাড়ী মাদারীপুর জেলার রাজৈর থানার লুন্দি গ্রামে। আবু মিয়ার দল ছাড়াও এখানে বেশ কয়েকটা গ্রুপ রয়েছে। তারাও একই স্টাইলে কাজ করে। প্রত্যেকটি গ্রুপ অন্য গ্রুপের সম্পর্কে জানে তবে কেউ কারো কাজে হস্তক্ষেপ করে না। বিপদে আপদে এক গ্রুপ আরেক গ্রুপের পাশে দাঁড়ায়, সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়। জেন্টলম্যান এগ্রিমেন্ট বটে!
সকল গ্রুপই চাঁদা দাবির কারণ হিসাবে তিনটি কারণ বলে। “দলের ছেলেরা গ্রেফতার হয়েছে, জামিনের জন্য টাকা লাগবে”, অথবা “দলের কয়েকজন আহত হয়েছে, তাদের চিকিৎসার জন্য টাকা লাগবে”, কিংবা “পুলিশ কয়েকটা অস্ত্র ধরেছে, নতুন করে অস্ত্র কিনতে টাকা লাগবে”। তারা সাধারণত পুরো টাকা চায় না, দরকারি অঙ্কের মধ্যে একটা অংশ চায়। শুরুটা খুব ভদ্রভাবে করলেও ধীরে ধীরে অভদ্র হতে থাকে। টাকা দিতে অস্বীকার করলে ভয়-ভীতির পাশাপাশি অশ্রাব্য বাসায় গালিগালাজ করে। এরা সন্তানদের কথা বলেই মানুষকে দুর্বল করে। নার্ভ শক্ত হলে দর কষাকষি করতে পারলে তাতে টাকার অঙ্ক কমতে থাকবে। শেষ পর্যন্ত এককোটি টাকা দাবি থেকে এক হাজার টাকায় রাজি হয়ে যায়। যেহেতু এরা প্রতারক সেহেতু যা পাবে তাই লাভ। দশজনকে ভয় দেখায় হয়তো তিনজন টাকা দিতে রাজি হয়। এ কারণেই এদের ব্যবসা টিকে থাকে।
ছালাম সাহেবের পুরোপুরি আশ্বস্ত হতে পারেন না। একটা ব্যাপারে তাঁর সংশয় রয়ে যায়। সন্দেহের দোলাচলে দুলতে থাকে। “তাঁর ছেলেমেয়ের তথ্য আবু মিয়া কিভাবে পেলো?”-উত্তর খুঁজেন ছালাম সাহেব। ডিআইজি সাহেব রীতিমত অন্তর্যামী বনে যান। এই প্রশ্নটিই তিনি আবু মিয়াকে করেন। আবু মিয়া জানায়, “ওই সাবের বাসার কেয়ারটেকার খবর দিছে।” ‘ঘরের শত্রু বিভীষণ’-ছালাম সাহেব বিস্মিত হন। তিনি তাঁর বাসার সকল কাজের লোককে সুযোগ-সুবিধা দেন। সবার পরিবারের খোঁজখবর নেন। তারাই কিনা বাইরের লোককে তাঁর সব তথ্য দিয়ে দিল। এবার আবু মিয়া সব খুলে বলে। ছালাম সাহেবের হাউজিং কোম্পানির ব্রশিউর থেকে তাঁর অফিসের নম্বর সংগ্রহ করে সকালবেলায় তার অফিসে ফোন দেয়। আবু মিয়ার দল অভিজ্ঞতা থেকে জানে অফিসের মালিকেরা অত সকালে অফিসে আসে না। ছালাম সাহেবের বাল্য বন্ধু সেজে বাসার ল্যান্ডফোন নম্বর সংগ্রহ করে। মোবাইল নম্বর দেওয়া সমীচীন মনে করে না রিসেপশনিস্ট। দুপুরের দিকে ছালাম সাহেবের বাসার ল্যান্ডফোন বাজে। ওরা জানে দুপুরে সাধারণত বাসায় পুরুষ লোক থাকে না। কেয়ারটেকার জব্বার ফোন ধরে। জব্বার ছালাম সাহেবের গ্রামের ছেলে, দূরসম্পর্কের আত্মীয়। জব্বারের কাছ থেকে সব তথ্য পেয়েছে। জব্বার এতবড় বেইমানি করবে ছালাম সাহেব ভাবতেই পারেননি। লেখাপড়া শেখেনি বলে অন্য কাজে দেওয়া যায়নি বাসার কেয়ারটেকার হিসেবে রেখে দিয়েছে। জব্বারের ছোটভাইকে লেখাপড়া শিখিয়েছে, নিজের কোম্পানীতে ভালো বেতনে চাকরি দিয়েছে। দু’টো বোনের বিবাহের খরচ ও ছিল ছালাম সাহেবের। দুই বোনের স্বামীদের চাকরির ব্যবস্থা করেছে। সেই জব্বার বেইমানি করবে একবারও তা ছালাম সাহেবের মাথায় আসেনি। এখনই জব্বারকে বাসা থেকে গলা ধাক্কা দিয়ে বের করে দেবে।
ডিআইজি সাহেব আবু মিয়াকে পুরো ঘটনা খুলে বলার নির্দেশ দেয়। আবু মিয়া তার দলের ইতিহাস বলতে শুরু করে। আবু মিয়ার দলের গাউছ শুদ্ধ ভাষায় কথা বলতে পারে। সেই জব্বারের সাথে কথা বলে। ছালাম সাহেব বাসায় নেই শুনে ভাবীর সাথে কথা বলতে চায়। “আপনি স্যারের এত ঘনিষ্ঠ বন্ধু অথচ খবর জানেন না”-জব্বারের প্রশ্ন শুনে গাউছ জানায় যে গত ১৫ বছর অস্ট্রেলিয়ায় ছিল। ১৫ বছরে একবার মাত্র দু’দিনের জন্য দেশে এসেছিল। ছালাম সাহেবের সাথে যোগযোগ ছিল না। ছালাম সাহেবের সাথে একই সাথে বুয়েটে পড়েছে। আবু মিয়ারা ছালাম সাহেব ইঞ্জিনিয়ার এ খবর আগেই জেনে নিয়েছিল। গাউছ ছাত্রজীবনে তার সাথে ছালাম সাহেবের বন্ধুত্বের নানা স্মৃতিচারণ করে। এবার জব্বার বিশ্বাস করে। তার কাছ থেকেই জব্বার জানতে পারে বেগম সাহেবা বেঁচে নেই। এখবর শুনে গাউছ ভীষণভাবে শোকাভিভূত হয়। গাউছের কণ্ঠ শুনে মনে হয় মায়ের মৃত্যুর খবর প্রথম শোনার পর যেমন অনুভূতি হয় গাউছ সাহেবের অতটাই খারাপ লাগছে। জব্বারই উল্টো গাউছকে সান্ত্বনা দেয়। এরপর আর জব্বারের সন্দেহ হয় না। একে একে পরিবারের সদস্যদের সব কাহিনী বলে দেয়। মেয়ের বিয়ে, লেখাপড়া, ভার্সিটি যাওয়া আসা সবই কৌশলে জেনে নেয়। বোনের বিয়েতে ভাই দেশে আসবে, কবে আসবে সবই গাউছ জব্বারের থেকে জেনে নেয়। দীর্ঘক্ষণ কথোপকথন চলাকালে ছালাম সাহেবের মোবাইল নম্বরটাও জব্বার দিয়ে দেয়। রাতে বাসায় আসার পর জব্বার অবশ্য ছালাম সাহেবকে জানিয়েছিল যে তাঁর ছাত্রজীবনের ঘনিষ্ঠ বন্ধু গাউছ চৌধুরী ফোন করেছিলেন। ছালাম সাহেব তখন অবশ্য মনে করতে পারেন নি গাউছ চৌধুরী নামে তাঁর কোন বন্ধু ছিল কি না। ভাবেন দিনের বেলা অন্য বন্ধুদের সাথে গাউছ চৌধুরীর ব্যাপারে আলাপ করে নেবেন। ছালাম সাহেব অনেক কিছুই আজকাল ভুলে যান। এনিয়ে মাঝে মাঝে বিব্রত ও হয়েছেন। ডাক্তারের সাথে কথা ও হয়েছে। একটা বয়সে উপনীত হলে এটি নাকি হতেই পারে। বয়স বাড়ার সাথে সাথে মানুষের স্মৃতিশক্তি লোপ পায়। দিনেরবেলা নানা ব্যস্ততায় তিনি গাউছ চৌধুরীর প্রসঙ্গ ভুলে যান। পরের দিনই সুব্রত বাইনের প্রথম ফোন আসে। জব্বারতো তা’হলে বেইমানি করে নাই। গাউছের ফোনে জব্বার বিভ্রান্ত হয়েছে। গাউছের কথা ঐদিনই ছালাম সাহেবকে জানিয়েছে। জব্বারের উপর আর ছালাম সাহেবের রাগ থাকে না।
আবু মিয়া তার এবং অন্যান্য গ্রূপের তথ্য সংগ্রহের কৌশলের বিবরন দেয়। ঢাকা শহরে যত গুরুত্বপূর্ন মেলা বা এক্সিবিশন হয় এই ধরনের প্রতারকরা সেসব জায়গায় গিয়ে স্টলগুলো থেকে ব্রশিউর এবং বিজনেস কার্ড সংগ্রহ করে। বিভিন্ন পেশাজীবী গ্রূপ যেসব স্মরণিকা বের করে তাতে সাধারণত সদস্যদের নাম-টেলিফোন নম্বর থাকে। বিভিন্ন কোম্পানীর ওয়েবসাইটেও তাদের চেয়ারম্যান, এমডি, সিইও এবং পরিচালকদের অনেক ডিটেলস থাকে সেগুলো থেকেও তারা তথ্য পায়। বিভিন্ন অর্থ লগ্নীকারী সংস্থার কর্মচারীদের সাথে খাতির করে কারা লোন নিচ্ছে সে তথ্য সংগ্রহ করে। বিটিসিএলের ওয়েবসাইট থেকেও একসময় তারা Random নম্বর সার্চ করে গ্রাহকের অ্যাড্রেস সংগ্রহ করতো। প্রথম ফোনটা তারা ল্যান্ডফোনেই করে। তথ্য সংগ্রহের মাধ্যম হিসাবে তারা বাচ্চা ছেলেমেয়ে, পরিবারের বৃদ্ধ-বৃদ্ধা কিংবা কাজের মহিলাদের টার্গেট করে। এই ধরনের মানুষদের কনভিন্স করা সহজ হয়। কৌশলে কথা বললেই তারা বিশ্বাস করতে শুরু করে। তারা সরল বিশ্বাসে প্রত্যাশিত তথ্য দিয়ে দেয়। গৃহকত্রীরাও অনেক সময় ফোন ধরেন। আবু মিয়াদের তখন নানাবিধ কৌশল অবলম্বন করতে হয়। গৃহকত্রীদের থেকে তথ্য নেওয়া অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সম্ভব হয় না। এগুলো ছাড়াও তথ্য সংগ্রহের আরো কতগুলো কৌশল তারা কখনো কখনো ব্যবহার করে। মসজিদ-মাদ্রাসার নামে রসিদ ছাপিয়ে প্রত্যেক বাড়িতে বাড়িতে চাঁদার জন্য যায় আবার পাড়ার ডিশলাইন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকেও তারা তথ্য সংগ্রহ করে। তবে আজকাল আর এসব পদ্ধতি খুব একটা কাজ করে না।
এই ধরনের প্রতারক গ্রূপগুলোতে ৫/৭ জন করে সদস্য থাকে। তারা কেউ ঢাকা শহরে ঘুরে ঘুরে তথ্য সংগ্রহ করে, কেউ ফোন করে, কেউ বস্ , বড়ভাই কিংবা দাদা সাজে। আবার কুরিয়ার সার্ভিস কিংবা অনলাইন মানি আদান-প্রদানকারী (বিকাশ, ইউক্যাশ ইত্যাদি) থেকে টাকা সংগ্রহ করে। রেজিস্ট্রেশনবিহীন সিমকার্ডের সময় তারা শতশত সিম কিনত। এখন রেজিস্ট্রেশনবিহীন সিম কেনা সম্ভব নয় বলে তারা ভিন্ন কৌশলও অবলম্বন করে থাকে। গ্রূপের কোন কোন সদস্যকে তারা সীমান্ত অঞ্চলে পাঠিয়ে দেয়। চোরাইপথে ভারতীয় সিম সংগ্রহ করে সীমান্ত এলাকা থেকে ফোন দেয়। এসব ক্ষেত্রে ভারতীয় নম্বর দেখে মানুষ বেশী ঘাবড়ে যায়। মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। একসময় এসব সন্ত্রাসীদের প্রচন্ড দাপট ছিল। ইতোমধ্যে কেউ মারা গেছে, কেউ জেলে আছে, কেউবা বিদেশে পালিয়েছে। তাদের কেউ কেউ এখনও চাঁদার জন্য ফোন দেয়। তবে তা সংখ্যায় খুবই কমে। তারা খুব সিলেকটিভ লোককে ফোন দেয়। চাঁদা না দিলে ঐ ব্যক্তি কিংবা ব্যবসার ক্ষতি করবে বলে হুমকি দেয়। ছেলেমেয়ের এত ডিটেইলস তাদের কাছে থাকে না। তাদের এত কথা বলারও সুযোগ নাই।
ছালাম সাহেব মনোযোগ দিয়ে সব শুনেন। তাঁর বুকের উপর থেকে পাথর নেমে যায়, আর কোন সন্দেহ সংশয় নাই। ডিআইজি সাহেবকে পরম মমতায় জড়িয়ে ধরেন। অন্যান্য কর্মকর্তাদের ও ধন্যবাদ দেন। সকলকে আন্তরিকভাবেই কৃতজ্ঞতা জানান। পুরোটা না শুনলে ছালাম সাহেবের সংশয় কাটতো না, ছালাম সাহেব পুরোপুরি আশ্বস্ত হতে পারতেন না। ইচ্ছা করেই ডিআইজি সাহেব বন্ধুর সামনেই আবু মিয়াদের কাহিনি বলিয়েছে। ছালাম সাহেব খুশি মনে বাসায় ফিরে যান। যাবার আগে তিনি মামলা করবেন না জানিয়ে যান। আদালতে সাক্ষ্যও দিতে যেতে পারবেন না তাও সাফ জানিয়ে দেন। ভুক্তভোগী মামলা করতে রাজি না হওয়ায় পুলিশ এসব আসামিদের ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নিয়ে আলাপ আলোচনা করতে থাকে। দায় পুলিশেরই বটে।
সন্ত্রাসী পরিচয় দিয়ে ফোনে চাঁদা চাইলেই ঘাবড়ানোর কোনো কারণ নাই। উল্লিখিত বৈশিষ্ট্যগুলো মিলিয়ে নিন। পরিবারের ডিটেইলস দিলে পরিবারের সদস্য কিংবা কাজের লোকের থেকে জেনে নিন অপরিচিত কেউ দু’চারদিনে ফোন করে পরিবারের সদস্যদের বিষয়ে জানতে চেয়েছিল কি না। ঠান্ডা মাথায় কথা বলুন, চাঁদার অঙ্ক কমাতে দর কষাকষি করুন। নার্ভ আর একটু শক্ত হলে ধমক দিন। ধমক দিলে সে গালি দিতে পারে। গালি দেওয়ার অভ্যাস থাকলে আপনি পাল্টা গালি ও দিতে পারেন। ওরা যখন বুঝে যাবে আপনি ভয় পাচ্ছেন না তখন আর আপনাকে ফোন দেবে না। যখন বুঝতে পারবে এখানে সুবিধা হবে না তখন আর আপনাকে ফোন করে সময় এবং ফোনবিল কোনটারই অপচয় করবে না। এরা আপনার কোন ক্ষতি করতে পারবে না, এরা সন্ত্রাসী নয়, পেশাদার প্রতারক। ‘আপনি ‘Hello CT’ এ্যাপসিকেশন কিংবা ডিএমপি ফেসবুক ও ওয়েবসাইটেও জানাতে পারেন। কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের সাইবার ক্রাইম শাখা আপনাকে প্রতিকার দেওয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। গোয়েন্দা শাখায়ও জানাতে পারেন। তারাও আপনাকে সাহায্য করবে। বন্ধু না মনে করলেও এটুকু বিশ্বাস রাখতে পারেন পুলিশ আপনার শত্রু নয়। পুলিশকে চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসীদের বিষয়ে তথ্য দিয়ে সন্ত্রাসমুক্ত সমাজ বিনির্মাণে সহায়তা করুন। (শেষ পর্ব)
(ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলামের ফেসবুক থেকে নেয়া)