১লা মে ছুটির দাবিতে হোটেল শ্রমিকদের বিক্ষোভ
আল-হেলাল-
বাংলাদেশ হোটেল রেস্টুরেন্ট মিস্টি বেকারী শ্রমিক ইউনিয়ন রেজি:নং বিঃ২১২৬-এর সুনামগঞ্জ জেলা শাখা। বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টার সময় পুরাতন বাস্টেন্ডস্থ দলীয় কার্যালয় হতে মহান মে দিবসে স্ববেতনে সর্বাত্মক ছুটির দাবিতে এক বিক্ষোভ মিছিল শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিন করে স্থানীয় ট্রাফিক পয়েন্টে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের সভাপতি মইনুল হক রনি সভাপতিত্বে ও সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মোঃ লিলু মিয়ার পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ সিলেট জেলা শাখার যুগ্ম সম্পাদক রমজান আলী পটু, ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ জেলা সভাপতি বাদল সরকার, এন,ডি,এফ জেলা শাখার সম্পাদক সাইফুল আলম ছদরুল, সাংগঠনিক সম্পাদক সুমন আহমদ, সদস্য মুহিত মিয়া, বিল্পব সেন, কাজল দাস প্রমুখ। বক্তারা বলেন আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংহতি দিবস সারাবিশ্বের শ্রমিক শ্রেণীর ঐক্য ও সংহতি প্রকাশের দিন। মহান মে দিবস উপলক্ষে ১ মে সারাবিশ্বের শ্রমিক শ্রেণী ছুটি ভোগ করে থাকেন। বাংলাদেশেরও সর্বস্তরের সরকারীÑবেসরকারী প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক-কর্মচারীরা ছুটি ভোগ করে থাকেন। বাংলাদেশের সর্বস্তরের সরকারীÑবেসরকারী প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক-কর্মচারীরা ছুটি ভোগ করলেও আমরা হোটেল শ্রমিকরা এই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছি। মে দিবসে ছুটি প্রদানের জন্য আমরা দীর্ঘদিন থেকে দাবি জানিয়ে আসছি। দূর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে নিরবতা পালন করে আসছেন। মে দিবসে ছুটি প্রদানের প্রেক্ষিতে কোন ধরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন না। এমন কি শ্রমিক সংহতি দিবস পালনেও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মালিকরা বাঁধা নিষেধ ও অনুষ্ঠানে যোগদানে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে থাকেন। শুধু তাই নয় বাংলাদেশ শ্রম আইন-এর ৫ ধারায় নিয়োগপত্র ও পরিচয়পত্র, ৬ ধারায় সার্ভিস বই, ২(১০) ধারায় চাকুরীচ্যূতি জনিত ৪ মাসের নোটিশ পে, প্রতিবছর চাকুরীর জন্য ৪৫ দিনের গ্রাচ্যুয়েটি, ১০৩ ধারায় সপ্তাহে দেড়দিন সাপ্তাহিক ছুটি, ১০৮ ধারায় দৈনিক ৮ ঘন্টা সপ্তাহে ৪৮ ঘন্টা কাজ, অতিরিক্ত কাজের জন্য দ্বিগুণ মজুরী প্রদান, ১১৫ ধারায় বছরে ১০ দিন নৈমিত্তিক ছুটি, ১১৬ ধারায় ১৪ দিন অসুস্থাতার ছুটি, ১১৭ ধারায় প্রতি ১৮ দিন কাজের জন্য ১ দিন অর্জিত ছুটি, ১১৮ ধারায় ১১ দিন উৎসব ছুটি প্রদানের আইন থাকলেও হোটেল শ্রমিকদেরকে এই সকল আইনগত অধিকার হতে বঞ্চিত করা হচ্ছে। শ্রম আইনে স্বাস্থ্যকর পরিবেশে কাজ ও বাসস্থানের বিধান থাকলেও শ্রমিকরা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে কাজ করতে ও থাকতে বাধ্য হন। এছাড়া গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ২০০৯ সালের পর নতুন গত ১ মার্চ ২০১৭ হোটেল সেক্টরে কর্মরত শ্রমিক-কর্মচারীদের জন্য নি¤œতম মজুরীর গেজেট (এসআরও নং ৩৮-আইন/২০১৭) প্রকাশ করলেও অদ্যাবধি তা কার্যকর করা হয়নি। হোটেল শ্রমিকরা দৈনিক ১০/১২ ঘন্টা অমানবিক পরিশ্রম করে অর্ধাহারে-অনাহারে পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে বাধ্য হন, যার কারণে হোটেল শ্রমিকদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে।