টাকা বিলি শুরু করেছেন আ. লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীরা:ওবায়দুল কাদের
নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীরা টাকাপয়সা খরচ করতে শুরু করে দিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কাছ থেকে। তবে প্রার্থীতা নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে ‘আওয়ামী লীগের বারোটা’ না বাজানোর আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের, ইলেকশন আসছে। অনেকেই খরচ করার একটা মৌসুম পেয়েছেন। অনেকেই শুরুও করে দিয়েছেন। ঈদের সময় শাড়িকাপড় যথেষ্ট যাচ্ছে, টাকাপয়সাও যাচ্ছে। মসজিদ-মন্দিরে সাহায্য বাড়ছে। এখান থেকে অসুস্থ-অস্বচ্ছলদের জন্য একটু বরাদ্দ রাখবেন। যারা প্রার্থী হতে চান তাদের বলছি। তিনি বলেন, অনেকে আওয়ামী লীগ করে পরিবার-পরিজন নিয়ে কষ্ট পাচ্ছেন। অনেকেই দেখি সামর্থ্যবান। অনেককেই টাকাপয়সা দেন। তেলে মাথা তেল না দিয়ে অস্বচ্ছল-গরীব কর্মীদের চিকিৎসার খরচ দেবেন। কাদের বলেন, অনেকেই মেয়ে বিয়ে দিতে পারে না। ছেলেমেয়েকে স্কুলে পাঠাতে পারে না। এই দুরবস্থার মধ্যে অনেক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী দিনাতিপাত করছে। নেত্রীর নির্দেশে আমি আবারও আপনাদের স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি, অসুস্থ-অস্বচ্ছল নেতাকর্মীদের খবর নেবেন। নেত্রীর (শেখ হাসিনা) ফান্ড আছে আমার কাছে। আমাকে বলুন, আমি দেখব।
সদস্য সংগ্রহ অভিযান শুরুর নির্দেশ দিয়ে কাদের বলেন, দল ভারি করার জন্য, নমিনেশনে আপনার পক্ষকে ভারি করার জন্য খারাপ লোকদের আওয়ামী লীগের সদস্য করবেন না। কোন খারাপ লোক যেন আওয়ামী লীগের সদস্য না হয়। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বিরোধী কোন সাম্প্রদায়িক অশুভ শক্তি যেন আওয়ামী লীগের সদস্য সংগ্রহের সুযোগে অনুপ্রবেশ না ঘটাতে পারে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
প্রার্থীতা নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি না করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমাকে অমুক ভাই সবজু সংকেত দিয়েছেন, কাদের ভাই বলেছেন আপনি চালিয়ে যান। এই চালিয়ে যেতে যেতে আওয়ামী লীগের ১২টা বেজে যাবে। এই কাজ শুরু হয়ে গেছে। ওবায়দুল কাদের বলেন, দয়া করে এই কাজ করবেন না। নিজেরা নিজেদের প্রতিপক্ষ হবেন না। মাঝে মাঝে আপনারা নিজেরা নিজেদের বিরুদ্ধে যেভাবে কথা বলেন, মনে হয় আপনার দলের লোক বিএনপির চেয়েও আপনার বেশি শত্রু। তিনি মনোনয়ন প্রত্যাশীদের উদ্দেশ্যে বলেন, নমিনেশন চাইবেন? দলের পার্লামেন্টারি বোর্ড আছে। আমাদের অভিভাবক শেখ হাসিনা আছেন। নেত্রীর কাছে সব জরিপ আছে। জনগণের কাছে যিনি গ্রহণযোগ্য, যার জয়ের সম্ভাবনা আছে তিনিই পাবেন নমিনেশন। এখন আমরা কেউ প্রার্থী নয়। এখন সকলের প্রার্থী হচ্ছে নৌকা।
কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ যদি ঐক্যবদ্ধ থাকে, বিজয় কেউ ঠেকাতে পারবে না। আপনারা যে কোন মূল্যে এক থাকবেন। নগরীর বাকলিয়ায় কে বি কনভেনশন হলে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন দলের পাশাপাশি সরকারে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা ওবায়দুল কাদের।
দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড.হাছান মাহমুদ, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম ও মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, কেন্দ্রীয় উপ প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন এবং কেন্দ্রীয় উপ দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া। চট্টগ্রাম দক্ষিণের সাংসদদের মধ্যে ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, সামশুল হক চৌধুরী, নজরুল ইসলাম চৌধুরী, মোস্তাফিজুর রহমান এবং ড.আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভি বক্তব্য রাখেন। দক্ষিণ চট্টগ্রামের ৮টি উপজেলা ও ৫টি পৌরসভার জনপ্রতিনিধি এবং সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ ২২০০ প্রতিনিধি সভায় যোগ দেন।