প্রখ্যাত রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নৃত্যকলা বিভাগের চেয়ারপারসন অধ্যাপক রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ‘ফিরোজা বেগম স্মৃতি স্বর্ণপদক’ লাভ করেছেন। এ ছাড়া বিএ সম্মান পরীক্ষায় সর্বোচ্চ ফলাফল করায় সংগীত বিভাগের ছাত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস নীলাকে ফিরোজা বেগম স্বর্ণ পদকের জন্য নির্বাচিত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবন মিলনায়তনে ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক প্রধান অতিথি হিসেবে শিল্পীকে স্বর্ণপদক ও পুরস্কার তুলে দেন। এসিআই ফাউন্ডেশনের সহায়তায় ‘ফিরোজা বেগম স্মৃতি স্বর্ণপদক ট্রাস্ট ফান্ড’ এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয় কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক কামাল উদ্দীনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবু মো. দেলোয়ার হোসেন। এ ছাড়া অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এসিআই ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও ট্রাস্ট ফান্ডের দাতা এম আনিস উদ দৌলা, ঢাবি সংগীত বিভাগের চেয়ারপারসন (ভারপ্রাপ্ত) টুম্পা সমদ্দার। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এনামউজ্জামান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাবি উপাচার্য বলেন, ফিরোজা বেগম শুধু নজরুল সংগীত নয়, তিনি আমাদের সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করে গেছেন। কবি নজরুল ইসলামের কাছ থেকে ফিরোজা বেগম সরাসরি গানের তালিম নিয়েছিলেন। তিনি ছিলেন বিদ্রোহী কবির বিদ্রোহী শিষ্য। উপাচার্য বলেন, বর্তমান পৃথিবী সংকটে আবর্তিত। এই সংকট হতে মুক্তি পেতে হলে মানুষকে সংস্কৃতিমুখী করতে হবে। আজকে মানুষ অপরিচিত মানুষকেও হত্যা করছে। হত্যাকারীরা যদি সংস্কৃতিবান হতো; আমি নিশ্চিত তারা মানুষ হত্যা করতে পারতো না। উপাচার্য ট্রাস্টফান্ডের দাতা এসিআই গ্রুপকে সংস্কৃতির ক্ষেত্রে পদক দিয়ে অবদান রাখার জন্য ধন্যবাদ প্রদান করেন। পদক প্রাপ্তির অভিব্যক্তি হিসেবে অধ্যাপক রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা বলেন, একজন শিল্পীর জন্য যেকোনো ধরনের পুরস্কার পাওয়া অনেক বড় প্রাপ্তির। আজকের এই প্রাপ্তিটা আমার জন্য বিশেষ মর্যাদার। কারণ, যার নামে এই পুরস্কার ছোটবেলা থেকে তার আমি গুণমুগ্ধ শ্রোতা ছিলাম। তিনি আরো বলেন, শিল্পীর সার্থকতা তার সংযমে এবং সরলতায়। এই ব্যাপারে ফিরোজা খুব সচেতন ছিলেন। তিনি প্রতিটা গানের চরিত্র বুঝতেন। এ জন্য তার সময়ের অন্য পাঁচজন থেকে আলাদা হয়ে তিনি ফিরোজা বেগম হতে পেরেছিলেন। স্মারক বক্তৃতায় এসিআই ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও ট্রাস্ট ফান্ডের দাতা এম আনিস উদ দৌলা বলেন, নজরুল সংগীত প্রচারে ফিরোজা বেগম ছিলেন আপ্রাণ কর্মী। কিন্তু তা সত্ত্বেও তিনি তার কাজ সম্পূর্ণ করে যেতে পারেননি। তরুণ প্রজন্মকে তিনি ফিরোজা বেগমের অসমাপ্ত কাজ শেষ করার অনুরোধ জানান। সংস্কৃতির প্রসারে এসিআই ফাউন্ডেশনের সহায়তা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। এর আগে সূচনা সংগীত ও নৃত্য পরিবেশন করেন বিশ্ববিদ্যালয় সংগীত ও নৃত্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
উল্লেখ্য, বিশিষ্ট নজরুল সংগীত শিল্পী ফিরোজা বেগম ১৯৩০ সালের ২৮ জুলাই গোপালগঞ্জ জেলায় জন্মগ্রহণ করেন এবং ২০১৪ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকায় ৮৪ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন।
সংবাদ টি পড়া হয়েছে :
২১১ বার