জগন্নাথপুরের সব সড়কেরই বেহাল দশা
মো. মুন্না মিয়া-
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার সবকটি সড়কের অবস্থাই বেহাল। ভাঙ্গাচোরা সড়কের কারণে দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে উপজেলাবাসীর। উপজেলার প্রতিটি সড়কে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়ে মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। তবে দ্রুততার সাথে প্রত্যেকটি সড়ক সংস্কার করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। বর্ষা মৌসুম শেষে সড়কগুলোর সংস্কার কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা। সরেজমিনে বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা যায়, সিলেটের সাথে জগন্নাথপুরবাসীর একমাত্র সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা জগন্নাথপুর-বিশ্বনাথ-রশিদপুর সড়ক দিয়ে। ওই সড়কটির জগন্নাথপুর অংশের অবস্থা খুবই করুণ। সম্প্রতি ওই সড়কের কিছু অংশে সংস্কার কাজ করা হলেও নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করার ফলে আবারো সড়কে নাজুক অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এই সড়কের জগন্নাথপুর পৌর পয়েন্ট থেকে কেউনবাড়ী (আটঘর) জগন্নাথপুর উপজেলার শেষ সীমানা পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে ছোট-বড় অনেকগুলো গর্ত রয়েছে। এসব গর্তে বৃষ্টির পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় মাইক্রো চালক একলিম উদ্দিন বলেন, ‘১৩ কিলিমিটার রাস্তা; ১২মাসই ভাঙ্গা থাকে’। স্থানীয় মীরপুর এলাকার বাসিন্দা সাদেকুর রহমান সাদ বলেন, ওই রাস্তার এমন অবস্থা হয়েছে যে, রাস্তার মধ্যে সন্তান প্রসব হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। এতে জনজীবনে নানান প্রতিকূলতা আর ঝুঁকি নিয়ে চলাফেরা করতে হচ্ছে এ উপজেলার জনসাধারণকে।
এদিকে- জগন্নাথপুর উপজেলার পার্শ্ববর্তী ওসমানীনগরের সাথে যোগাযোগের দুটি রাস্তা রয়েছে। এ দুটির রাস্তারও বেহাল দশা। একটি রাস্তা চলে গেছে কুশিয়ারা নদীর ভাঙ্গনে আর অপরটি ঝুলে রয়েছে উচ্চ আদালতে। কুশিয়ারা নদীর ভাঙ্গনে চলে গেছে জগন্নাথপুর উপজেলার পাইলগাঁও ও আশারাকান্দি ইউনিয়নের মধ্যে দিয়ে বয়ে যাওয়া জগন্নাথপুর-কাতিয়া-বেগমপুর সড়কটি। ওই সড়কের জালালপুর (ভাঙ্গাবাড়ী) কয়েক দফায় কুশিয়ারা ভাঙ্গনের কবলে পরে এবং সংস্কার কাজ হলেও যথা সময়ে কাজ না হওয়ায় এমন পরিস্থিতি হচ্ছে বলে স্থানীয় সিএনজি অটোরিক্সা চালক জুবেল খাঁন ও তরুণ সংগঠন জাবেদুর রশীদ জানিয়েছেন।
এছাড়া ওসমানীনগর উপজেলার সাথে যোগাযোগের অপর সড়ক পথ হচ্ছে ভবেবরবাজার-সৈয়দপুর-গোয়ালাবাজার সড়কটি। ওই সড়কের সংস্কার কাজ বহুদিন ধরে উচ্চ আদালতে ঝুলে রয়েছে ঠিকাদারী প্রতিষ্টানের অবহেলায়। উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করছে ওই রাস্তা সংস্কারের ভবিষ্যৎ। দীর্ঘদিন ধরে ওই রাস্তা দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করে যাচ্ছেন যাতায়াতকারী জনসাধারণ। স্থানীয় আশারকান্দি ইউনিয়নের তিলক গ্রামের বাসিন্দা উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি তোফায়েল আহমদ বলেন, এই রাস্তার বেহাল দশায় জনদূর্ভোগ চরমে রয়েছে। জনদূর্ভোগ লাঘবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে। অপরদিকে, জগন্নাথপুর পৌর শহরের প্রাণকেন্দ্রের বিভিন্ন রাস্তা ভেঙ্গে ছোট-বড় অনেকগুলো গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সৃষ্ট গর্তগুলোতে বৃষ্টির পানি জমে জলাবদ্ধতায় পড়তে হচ্ছে পৌরবাসীকে। রাস্তাটি পৌরসভার ভেতরে হওয়ায় জনগন পৌর মেয়রকে দোষারোপ করলে এর দায় বার নিজের কাঁধ থেকে সড়িয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপরে চাপিয়ে দিচ্ছেন।
জগন্নাথপুর পৌরসভার মেয়র (ভারপ্রাপ্ত) শফিকুল হক শফিক বলেন, ‘বার বার সওজ কতৃপক্ষের কাছে লিখিত ও মৌখিক আবেদন করার পরও কোনো কাজ হচ্ছে না। সওজ কতৃপক্ষের রাস্তা হওয়ায় আমরাও সংস্কার করতে পারছি না। শুধু ওই রাস্তাগুলো নয় জগন্নাথপুরের প্রত্যেকটি গ্রামীণ রাস্তার পরিণতি তার ছেয়ে আরও খারাপ। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)-এর উপজেলা প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম বলেন, কিছু রাস্তার টেন্ডার হয়েছে। বৃষ্টির জন্য কাজ করা যাচ্ছে না। বৃষ্টির সময় চলে গেলে কাজ শুরু হবে। অন্যান্য সড়ক গুলোর সংস্কার কাজ করানোর জন্য মন্ত্রনালয়ে চিঠি প্রেরণ করেছি।