ছাতক সিমেন্ট কারখানায় দীর্ঘদিন ধরে বহুমুখি লুটপাটের কারণে একটি লোকসানী প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। বিসিআইসির ঐতিহ্যবাহী এ প্রতিষ্ঠান এক সময়ে মধ্য এশিয়ার স্বনামধন্য সিমেন্ট উৎপাদনকারী ও লাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত ছিল।  কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সিবিএ নেতাদের অব্যাহত লুটপাটের কারণে দিনে দিনে ছাতক সিমেন্ট কারখানায় ধস নেমে গেছে। বর্তমানে চাহিদার সিঁকিভাগ সিমেন্ট উৎপাদন হচ্ছেনা এ কারখানায়। এতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন দিতে ও হিমশিম খেতে হচ্ছে কৃর্তপক্ষকে। অনিয়ম-দুর্নীতি এখন এ কারখানায় নিয়মিত ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ ব্যাপারে কোন শ্রমিক কথা বললেই তাকে বদলির হুমকি দেয়া হয়। গত ১ বছরে কারখানার ক্রাশারে প্রায় ৩ কোটি টাকার মেরামত কাজ করে ও ক্রাশার সম্পূর্ণভাবে সচল হয়নি। এখানে নামমাত্র মেরামত দেখিয়ে টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ রয়েছে। ফিনিশ মিলে ৩-৪ বার মেরামত হয়েছে। এতে ব্যয় হয়েছে ৬০ থেকে ৭০ লক্ষ টাকা। কিন্তু এটিও সম্পূর্ণভাবে সচল হয়নি।

কারখানায় শ্রমিক দিয়েই এসব কাজ করানো হয়েছে বলে কারখানার একটি সূত্র জানিয়েছে। ছাতক সিমেন্ট কারখানার ভূমি ও বাসাভাড়া দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে কারখানার এমডি আবু সাইদ, কর্মকর্তা আব্দুর রহমান বাদশাহ, ও শ্রমিক ইউনিয়ন নেতা আব্দুল কুদ্দুছ। বহিরাগতদের কাছে কারখানার বাসাভাড়া দিয়ে টাকা উপার্জন, ইট, বালু ও পাথরের সাইডের জন্য কারখানার ভূমি ভাড়া ও নিচু এলাকা মৎস্য চাষের জন্য ভাড়া দিয়েছেন তারা। কারখানায় ৪নং এলাকায় দোকান ভাড়ার ও তাদের ব্যবসা রয়েছে। কারখানার এক শ্রমিকের বিধাব স্ত্রীর বাসায় সিবিএ নেতা খছরুল হক চৌধুরী অবৈধভাবে বসবাস করে যাচ্ছেন।

এছাড়া রয়েছে কারখানায় বদলি-বাণিজ্য ও চাকুরি থেকে পেনশনে চলে যাওয়ার পর আবারো তাদেরকে চাকুরিতে যোগদানসহ বিভিন্ন বাণিজ্য চালাচ্ছেন কর্মকর্তা ও সিবিএ নেতারা। পেনশনে যাওয়া বদিউর রহমান (কারিগরি) আজির উদ্দিনকে (রেল পরিবহন) কারখানায় টাকার বিনিময়ে অস্থায়ী চাকুরি প্রদান করা হয়েছে। প্রায় বন্ধ হওয়ার পথে কারখানায় অভার টাইম ডিউটি দেখিয়ে অতিরিক্ত বেতন-বিল করে টাকা নিচ্ছেন কারখানার ক্ষমতাসীনরা। একের পর এক মেরামতের কাজ দেখিয়ে কারখানায় টাকা লুটেপুটে খাচ্ছেন তারা।

সিমেন্ট ডেলিভারিতে ভয়াবহ দুর্নীতির মাধ্যমে ডিলারদের কাছ থেকে টাকা আদায়ের ও অভিযোগ রয়েছে। গত ৬ মাস ধরে কারখানার কাঁচামাল ভারত থেকে আমদানিকৃত চুনাপাথর খোলাবাজারে কমমূল্যে বিক্রির অভিযোগ রয়েছে কারখানার বিরুদ্ধে। এ নিয়ে ছাতকে ব্যবসায়ীদের আন্দোলন ও হয়েছে। দুর্নীতি-অনিয়মের এসব বিষয় অস্বীকার করে কারখানার এমডি আবু সাইদ জানান- পুরানো এ কারখানাটি বয়সের ভারে ন্যুজ্ব হয়ে পড়েছে। কাজেই এখন কারখানায় উৎপাদন কম হচ্ছে। এবং সবসময়ই কারখানাটির বিভিন্ন অংশ মেরামত করতে হয়েছে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn