আমি সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, আপনারা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করে দেশকে কলঙ্কমুক্ত করেছেন। আপনারা সালমান শাহ্‌ হত্যার ন্যায্য বিচার করে দেশকে কলঙ্কমুক্ত করুন। সালমানের ন্যায্য বিচার হলে দেশ কলঙ্কমুক্ত হবে, আর আমার ছেলের আত্মা শান্তি পাবে। একজন মা হিসেবে এটা আমার অনুরোধ। লন্ডন থেকে গণমাধ্যমের মাধ্যমে এভাবেই প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন প্রয়াত চিত্রনায়ক সালমান শাহ্‌র মা নীলা চৌধুরী।

নীলা বলেন, আমি যে কোনো মুহূর্তেই দেশে চলে আসব। ১৬ আগস্ট ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মহাসম্মেলন করবো। ওই দিন তাকে সব সাংবাদিকরা পাবেন বলেও জানান। তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলেও জানিয়েছেন।
১৯৯৬ সালে রহস্যজনক মৃত্যু হয় সালমানের। সেই সময় থেকেই সালমানের পরিবারের দাবি- আত্মহত্যা নয়, তাকে হত্যা করা হয়েছে। সোমবার ফেসবুকে সালমানের মৃত্যুর বাইশ বছর পর রাবেয়া সুলতানা রুবি নামের বিউটিশিয়ান এক ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘আত্মহত্যা নয়, হত্যাকাণ্ডের স্বীকার হয়েছিলেন সালমান শাহ এবং তা করিয়েছিলেন তারই স্ত্রী সামিরা ও তার পরিবার।’

এ বিষয়ে সালমান শাহ্‌র মা নীলা চৌধুরী প্রশ্ন রেখে বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের অধীনে অনেক খুনের বিচার হয়েছে। তাহলে সালমান শাহকে ‘হত্যার’ বিচার হবে না কেন? “আমি আশাবাদী, শেখ হাসিনার সরকারের ওপর… আমাকে কোনো বিচার দেওয়া দরকার নাই, যা সত্যি তাই উদঘাটন করুন।”রাবেয়া সুলতানা রুবিকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফিরিয়ে তার জবানবন্দি নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন চিত্রনায়ক সালমান শাহর মা নীলা চৌধুরী।

নীলা চৌধুরী বলেন, “এই মহিলাই (রুবি) আমাকে চরিত্রহীন প্রমাণ করার চেষ্টা করেছেন, সামিরার বাবাও চেষ্টা করেছেন। আমাকে খারাপ প্রমাণ করে কি আমার ছেলের খুনকে বদলায়ে ফেলতে পারবে তারা?”সালমান শাহর মায়ের অভিযোগ, আইনজীবী থেকে শুরু করে সবাই তাকে এতদিন ‘ঘুরিয়েছে’। ‘পয়সা খেয়ে’ আত্মহত্যা বলে প্রমাণের চেষ্টা করেছে। তারপর রুবির এই ‘স্বীকারোক্তি’ এলো, যাকে অপরাধীদের স্বাভাবিক নিয়তি এবং সৃষ্টিকর্তার কাছে ‘প্রার্থনার ফসল’ হিসেবে বর্ণনা করছেন নীলা।

রুবির বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে নীলা বলেন, “তার জীবন এখন হুমকির মুখে। যে আমাকে গালি দিছে সে আমার কাছে এখন শেল্টার চাচ্ছে।”নীলার ধারণা, তার ছেলের হত্যাকারীরা এতদিন রুবির মুখ বন্ধ রাখতে পারলেও এখন ‘একটা কিছু’ হয়েছে, যে কারণে তিনি সব বলে দিতে চাইছেন।“তার জীবনের ওপর হুমকি আসছে বলেই এখন সে আটকাতে পারে নাই।”

উল্লেখ্য, ১৯৯৬ সালের ৬ই সেপ্টেম্বর ১১/বি নিউ ইস্কাটন রোডের ইস্কাটন প্লাজার বাসার নিজ কক্ষে সালমান শাহকে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। এরপর সালমানের স্ত্রী সামিরা হক, চলচ্চিত্র প্রযোজক ও ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মাদ ভাইসহ ১১ জনকে সালমান শাহের মৃত্যুর জন্য দায়ী করে হত্যা মামলা দায়ের করে সালমানের পরিবার। অন্য অভিযুক্তরা হলেন- সামিরার মা লতিফা হক লুসি, রিজভী আহমেদ ওরফে ফরহাদ, সহকারী নৃত্যপরিচালক নজরুল শেখ, ডেভিড, আশরাফুল হক ডন, রাবেয়া সুলতানা রুবি, মোস্তাক ওয়াইদ, আবুল হোসেন খান ও গৃহকর্মী মনোয়ারা বেগম।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn