জামালগঞ্জে অবৈধ ভাবে চিচরাবনি জলমহালে মৎস্য আহরণ
হাবিবুর রহমান-
সরকারী জলমহাল নীতিমালা কে বৃদ্ধাঙ্গুলী প্রদর্শন করে শুভঙ্করের ফাঁকি দিয়ে সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের হাওরাঞ্চলের অবকাঠামো ও জীবনমান উন্নয়নয় প্রকল্পর (হিলিপ) একটি জলমহালে (বিল) ৫ বছর ধরে অবৈধ ভাবে মাছ ধরার অভিযোগ উঠেছে।
উপজেলার ফেনারবাঁক ইউনিয়নের চিচরাবনী জলমহালটি (বিল) হিলিপ প্রকল্পের ফেনারবাঁক গ্রামের কয়েকজন অমৎস্যজীবি ও অনিবন্ধিত (বিইউজি) সংগঠন বেশ কয়েক বছর ধরে মাছ সংগ্রহ করে বিক্রি করছে। ওই অবৈধ সংগঠনটি সরকারের কোন দপ্তর থেকে নিবন্ধন নেই। জানাগেছে,২০০৯ সালের নীতিমাল অনুযায়ী মৎস্যজীবি সংগঠনে কোন অমৎস্যজীবি সদস্য হতে পারবেনা, অমৎস্যজীবিরা ও নিবন্ধন নেই এমন সংগঠন বিল জলমহাল ব্যবহার করতে পাবেনা বলে উল্যেখ থাকলেও ফেনারবাঁক গ্রামের চিচরাবনি জলমহাল (বিল) ব্যবহারকারী সংগঠনটির ৩১ জন সদস্যের মাঝে কয়েকজন ছাড়া বাকী সদস্যদের কোন মৎস্য কার্ড নেই। চলতি বছর চিচরাবনী জলমহালটি (বিল) ফেনারবাঁক গ্রামের পুরাতন বিল ব্যবহারকারী সংগঠনটি নীতিমালা অনুয়ায়ী না থাকার কারণে অন্য প্রকৃত মৎস্যজীবিরা চিচরাবনী জলমহালটি (বিল) পেতে তারা আবেদন করে। প্রকৃত মৎস্যজীবিরা পুরাতন অমৎস্যজীবী সংগঠনের অমৎস্যজীবিদের বাতিলের দাবী করেন চিরাবনি জলমহালের দায়ীত্বে থাকা জামালগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলীকে। এর পরিপ্রেক্ষিতে জলমহালে অবৈধ ভোগকারী কয়েকজন মিলে তড়িগড়ি করে হিলিপ প্রকল্পের একজনকে দায়ী করে উৎকোচ দেয়ার অভিযোগ এনে পিডি বরাবরে একটি অভিযোগ দাখিল করে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা প্রকৌশলী ও হিলিপ প্রকল্পের জেলা প্রকল্প কর্মকর্তাসহ আরো ৩ জনকে অর্ন্তভুক্তি করে ৫ সদস্য বিশিষ্ট টিম গঠন করে তদন্তে নির্দেশ দেন। ওই নির্দেশে গত মঙ্গলবারে বিকেলে জামালগঞ্জ উপজেলা রেষ্ট হাউস হলরুমে তদন্ত কার্যক্রম শুরু হয়। স্থানীয় সুধিজন চিচরাবনি বিল ব্যবহার কারী পুরাতন অমৎস্যজীবী সংগঠনের সদস্য ও নতুন মৎস্যজীবীরা সহ স্থানীয় সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে দীর্ঘ তদন্তের পর পুরাতন সংগঠনের অভিযোগটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট বলে প্রমানিত হয়। পুরাতন সংগঠনের দায়িত্বে থাকা পরিচালনা কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও কোষাধক্ষ সংগঠনের সমুদয় হিসাব দিতে ব্যর্থ হয়। তদন্তকারী টিমকে সমিতির মাছ আহরণ থেকে অনিয়ম শুরু করে মাছ বিক্রির ২১ লাখ টাকার মধ্য ৩ লাখ টাকা সঞ্চয় দেখালেও বাকী ১৮ লাখ টাকা সদস্যদের সুসম বন্টনের হিসাব দিতে ব্যর্থ হন সভাপতি, সেক্রেটারী ও কোষাধক্ষ। এ কারণে ওই সময় সভাপতি মোজাম্মেল হোসেন ও কোষাধ্যক্ষ রেজাউল করিম সহ কর্যনির্বাহী কমিটির সকল কার্যক্রম স্থগিত করে সংগঠনের অন্য ৩ সদস্যকে সমুদয় হিসাব-নিকাশ গ্রহনের সিদ্ধান্তসহ সমিতিতে থাকা অমৎস্যজীবিদের বাতিলের সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়।
এব্যপারে উপজেলা প্রকৌশলী শিপলু কর্মকার বলেন, অভিযোগটি উপস্থিত সবার সামনে মিথ্যা প্রমানিত হয়েছে, এতদিন কিভাবে জলমহাল ব্যবহার করেছে আমি জানি না। আমি এ উপজেলায় যোগদানের পর নিয়ম নীতিমালা অনুযায়ী প্রকৃত মৎস্যজীবিদের মাঝে জলমহাল (বিল) দেয়ার চেষ্টা করছি, এই চেষ্টা অব্যহত থাকবে।