কারা আসছেন ছাত্রলীগের নতুন নেতৃত্বে
বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। শিক্ষা, শান্তি ও প্রগতির পতাকাবাহী এই সংগঠনটি জন্মলগ্ন থেকেই আন্দোলন, সংগ্রাম, দাবি আদায় সহ বিভিন্ন জাতীয় ইস্যুতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে আসছে। ২০১৫ সালের ২৫ ও ২৬ জুলাই ছাত্রলীগের ২৮তম সম্মেলন শেষে সাইফুর রহমান সোহাগকে সভাপতি ও এসএম জাকির হোসাইকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি ঘোষণা করা হয়।দেশের অন্যতম বৃহত্তম এই ছাত্র সংগঠনটির গঠনতন্ত্রের ১১(খ) ধারা অনুযায়ী, সংগঠনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের কার্যকাল দুই বছর।এ সময়ের মধ্যে সম্মেলন করতে হবে।অন্যথায় নির্বাহী সংসদের কার্যকারিতা থাকবে না।যদিও এ গঠনতন্ত্র না মেনে নতুন কমিটি দিতে পার হয়ে যায় দুই বছরের অধিক সময়।এবারও দুই বছর অতিক্রম হয়েছে বর্তমান কমেটির মেয়াদ।তাই নতুন কমিটি নিয়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মাঝে।
আওয়ামী লীগের ২৮তম জাতীয় সম্মেলনে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য এবং সম্প্রতি ছাত্রলীগের পরবর্তী সম্মেলন নিয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য নেতাকর্মীদের মধ্যে তৈরি করেছে বাড়তি উচ্ছ্বাস। এমন অবস্থায় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা বলছেন, এ বছরের মধ্যেই হবে ছাত্রলীগের সম্মেলন। যেহেতু ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটিকে বড় ধরনের কোনো আন্দোলন-সংগ্রামের মুখোমুখি হতে হয়নি তাই এবার হয়তো অতি দ্রুতই সম্মেলনের ঘোষণা আসবে। এখন সবাই তাকিয়ে অছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিকে। আগামী নির্বাচনের কঠিন সময়কে সামনে রেখে যোগ্য, পরীক্ষিত, ত্যাগী ও পরিশ্রমী নেতৃ্ত্ব তৈরি হবে নতুন কমিটিতে। নেত্রীর কাছে এমনটিই প্রত্যাশা নেতা কর্মীদের।
তাই সম্মেলনকে সামনে রেখে পদ প্রত্যাশীরা এখন মাঠে সরগরম। দলের বিভিন্ন কর্মসূচিতে তারা সক্রিয় অবস্থান করছেন। এখন পর্যন্ত ছাত্রলীগ পরিমন্ডলে আলোচিত পদ প্রত্যাশীরা হলেন- বর্তমান কমিটির সহ-সভাপতি মেহেদি হাসান রনি, আল আমিন (ঢাবি ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি), রুহুল আমিন, সোহান খান, চৈতালী হালদার চৈতি, আদিত্য নন্দি, জাহাঙ্গির আলম। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকদের মধ্যে রয়েছেন দিদার মোহাম্মদ নিজামুল ইসলাম, সায়েম খান ও শাহিদুল ইসলাম শাহেদ । সাংগঠনিক সম্পাদকদের মধ্যে সৈকতুজ্জামান সৈকত, আশিকুল পাঠান সেতু, দারুস সালাম শাকিল, মশিউর রহমান শরিফ, বি এম এহতেশাম ও শেখ জসিম উদ্দিন পদ প্রত্যাশী।
বর্তমান কমিটিতে সম্পাদকদের মধ্যে, গোলাম রাব্বানী (শিক্ষা ও পাঠচক্র সম্পাদক), আল নাহিয়ান খান জয় (আইন সম্পাদক), সাইফ বাবু (প্রচার সম্পাদক), দেলোয়ার শাহজাদা (দপ্তর সম্পাদক), ইয়াজ আল রিয়াজ (ত্রাণ ও দুর্যোগ সম্পাদক), রাকিব হেসেন (কর্মসূচি বিষয়ক সম্পাদক), এ বি এম হাবিবুল্লাহ বিপ্লব (পরিবেশ সম্পাদক), চিন্ময় রায় (ক্রীড়া সম্পাদক), মাজহারুল ইসলাম শামিম (প্রশিক্ষণ সম্পাদক) ও বরকত হোসেন হালদার (কৃষি সম্পাদক) পদ চাইছেন।
এছাড়া বর্তমান কমিটিতে সহ ও উপ সম্পাদকদের মধ্যে খাজা খায়ের সুজন, মেহজাবিন মুস্তাকিম জাবিন, মাহমুদল হাসান, খাদেমুল বাসার জয় ও এইস এম সাদ্দাম হোসেনও পদ প্রত্যাশী।অপরদিকে ছাত্রলীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রিন্সের নামও বেশ আলোচিত হচ্ছে।
ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা জানান, জেলা শাখার কার্যক্রম বুঝে উঠতেই নতুন নেতাদের দুই বছর সময় শেষ হয়ে যায়। আবার তারা যখন সবকিছু বুঝে দক্ষ হয়ে ওঠে তখন তাদের আরেক দফায় কেন্দ্রীয় নেতা হওয়ার বয়স ফুরিয়ে যায়। এ বিষয়ে একাধিক নেতা পূর্বপশ্চিমকে বলেন, জেলা ও উপজেলা নেতারা কেন্দ্রের চেয়ে সিনিয়র হলে সেখানে কেন্দ্রের কমান্ড প্রতিষ্ঠা করা দুরূহ হয়। তাই তৃণমূলের চেয়ে অপেক্ষাকৃত কিছুটা সিনিয়র ও সাংগঠনিকভাবে দক্ষদের কেন্দ্রীয় নেতা করা উচিত।
এ কারণে পরিপক্ব নেতৃত্ব বাছাইয়ের জন্য বয়সসীমা বাড়ানোর দাবি উঠেছে। তাই বয়সসীমা বাড়িয়ে ৩১ করা হলে যে প্রার্থীরা এগিয়ে আছেন তারা হলেন- কাজি এনায়েত (সহ-সভাপতি), আমিনুল ইসলাম (সহ-সভাপতি), ইমতিয়াজ বুলবুল বাপ্পি (সহ-সভাপতি), মাকসুদ রানা মিঠু (সহ-সভাপতি), আবিদ আল হাসান (ঢাবি সভাপতি) ও চন্দ্র শেখর মন্ডল (যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক)। পদপ্রত্যাশী বেশ কয়েকচন নেতার বিরুদ্ধে রয়েছে নানা অভিযোগ। এর মধ্যে সাংগঠনিক আশিকুল পাঠান সেতুর বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসা, সাংগঠনিক মশিউর রহমান শরিফের ছাত্রত্ব নেই, সাংগঠনিক বি এম এহতেশামে ছাত্রত্ব নেই সাংগঠনিক শেখ জসিমের ছাত্রত্ব নাই, বরকত হোসেন হালদার হল থেকে বহিষ্কৃত।