দেশের ১৭তম রাষ্ট্রপতি কি হতে যাচ্ছেন সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম? আওয়ামী লীগের মধ্যে এই গুঞ্জন ক্রমশ: প্রবল হচ্ছে। দেশের ১৬তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে মো: আবদুল হামিদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী বছরের ২৩ এপ্রিল। সংবিধান অনুযায়ী একজন ব্যক্তি পরপর দুবার রাষ্ট্রপতি থাকতে পারেন। সে হিসেবে আওয়ামী লীগ চাইলেই বর্তমান রাষ্ট্রপতিকে আরও ৫ বছর মেয়াদে অর্থাৎ, ২০২৩ সাল পর্যন্ত রাখতে পারে। রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন সংসদ সদস্যদের ভোটে। তাই বর্তমান রাষ্ট্রপতির দ্বিতীয় মেয়াদে থাকা না থাকা সম্পূর্ণ আওয়ামী লীগের দলীয় সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে। আগামী বছরের শেষ দিকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রপতি পদে পরিবর্তনের চিন্তাভাবনা করছে।কঠিন সময়ে বিশ্বস্ততা এবং বিচক্ষণতার বিবেচনা থেকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের নাম আলোচিত হচ্ছে বলে আওয়ামী লীগের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। জিল্লুর রহমানের মৃত্যুর পর সে সময়কার স্পিকার আবদুল হামিদ ২৪ এপ্রিল ২০১৩ সালে রাষ্ট্রপতি হিসেবে অভিসিক্ত হন।

আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ষোড়শ সংশোধনীর রায়ের পর সংকটে রাষ্ট্রপতির ভূমিকা নিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে অসন্তোষ আছে। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে গত জুলাই মাসে এক সর্বসম্মত রায়ে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে। এর প্রেক্ষাপটে গত ১৬ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।এসময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট মাহবুবে আলম উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী ষোড়শ সংশোধনীর রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্রপতির যথাযথ ভূমিকা আশা করেছিলেন। কিন্তু এরমধ্যে রাষ্ট্রপতিকে দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি। এমনকি প্রধানমন্ত্রীর বার্তা নিয়ে আওয়ামী লীগের শীর্ষ দুই নেতা তোফায়েল আহমেদ এবং  আমীর হোসেন আমু রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
এরপর এ বিষয়ে রাষ্ট্রপতির কোনো ভূমিকা নজরে আসেনি। রাষ্ট্রপতি সরকারের স্বার্থের চেয়ে নিজে বিতর্কের উর্দ্ধে থাকতে চেয়েছেন বলে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা মনে করেন। তাঁরা আশা করেছিলেন, রাষ্ট্রপতি প্রধান বিচারপতিকে ডেকে এ বিষয়ে কথা বলবেন। এরকম পরিস্থিতিতে, আগামী সাধারণ নির্বাচনে রাষ্ট্রপতির ভূমিকা নিয়ে অনেকেই সন্দিহান। এসময় বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে নির্বাচনে আনার ব্যপারে তিনি কতটা কার্যকর ভূমিকা রাখবেন- তা নিয়ে সংশয় আছে আওয়ামী লীগের শীর্ষ মহলে। বিএনপির সহায়ক সরকারের দাবির সমঝোতায় বঙ্গভবন গুরত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। এ কারণেই আওয়ামী লীগের মধ্যে রাষ্ট্রপতি হিসেবে বিকল্প চিন্তা আলোচিত হচ্ছে।সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, জাতীয় চার নেতার অন্যতম সৈয়দ নজরুল ইসলামের সন্তান। কঠিন সময়ে তাঁর দৃঢ়চিত্ত ভূমিকা প্রশংসিত হয়েছে। তাঁর দৃঢ় ব্যক্তিত্ব এবং আদর্শিক দৃঢ়তা সংকটে আওয়ামী লীগকে সহায়তা করবে বলে মনে করা হচ্ছে। সৈয়দ আশরাফের সাধারণে ইমেজও অনেক উজ্জ্বল।
-পূর্বপশ্চিম

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn