মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা মুসলমানদের জন্য কার্গো বিমানে করে ত্রাণ সামগ্রী পাঠাচ্ছে ইরান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকায় ইরান দূতাবাসের গণমাধ্যম ও গণযোগাযোগ কর্মকর্তা খন্দকার মো. মাহফুজুল হক। ইরানি কার্গো বিমান অবতরণের অনুমতি চেয়ে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সরকারের কাছে আবেদন করেছে ইরান। খুব শীঘ্রই অনুমতি মিলবে বলে আশা প্রকাশ করে দূতাবাস। দূতাবাসের পক্ষ থেকে বলা হয়, আগামী শনিবার ইরানের ত্রাণবাহী বিমান বাংলাদেশে পৌঁছাবে বলে তারা আশা করছে। ইরানি ত্রাণ সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে শুকনো খাবার, ওষুধ ও কাপড়। ইতিমধ্যে দূতাবাস ত্রাণ বিতরণের সব আয়োজনও শেষ করেছে বলে জানিয়েছেন খন্দকার মো. মাহফুজুল হক।

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রোহিঙ্গা গণহত্যা বন্ধের জন্য মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহ্বানের পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী ব্যাপক কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে বলেও ঢাকায় দেশটির দূতাবাসের পক্ষ থেকে জানানো হয়। অন্যদিকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নির্যাতিত মুসলমানদের জন্য প্রায় ১ হাজার টন খাদ্য ও বস্ত্র সামগ্রী পাঠিয়েছে তুরস্ক। ত্রাণ সাহায্যের প্রথম চালানটি রাখাইন রাজ্যের সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে হস্তান্তর করা হয়েছে। আরও ১০ হাজার টন ত্রাণ সামগ্রী খুব শীঘ্রই পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে তুরস্ক সরকার। তুর্কির দেয়া এসব সাহায্য সামরিক হেলিকপ্টারে করে রাখাইন রাজ্যে বণ্টন করা হবে।

উল্লেখ্য, গত ২৫ আগস্ট ভোররাত থেকে রাখাইনে সীমান্তরক্ষী পুলিশের সঙ্গে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) সদস্যদের সংঘাত শুরু হয়। এতে শতাধিক ব্যক্তি নিহত হন। এর মধ্যে ১২ জন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য ও বাকিরা আনসার সদস্য ছিল। এ ঘটনার পর মিয়ানমারের সরকারি বাহিনী বিতাড়ন অভিযান শুরু করে। তারা রোহিঙ্গাদের গ্রামগুলোতে হানা দিয়ে সাধারণ মানুষকে লক্ষ্য করে নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করছে এবং ২৬শ বাড়িঘর পুড়িয়ে দিয়েছে বলে মানবাধিকার সংস্থাগুলো অভিযোগ করেছে। অভিযানকালে অন্তত ৪০০ রোহিঙ্গা নিহত হন, যাদের বেশিরভাগই সাধারণ নিরস্ত্র রোহিঙ্গা। এদিকে অভিযানের মুখে প্রাণ বাঁচাতে প্রায় দেড় লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn