মিয়ানমারকে রোহিঙ্গা নির্যাতন বন্ধের তাগিদ দিল যুক্তরাষ্ট্র
রোহিঙ্গাদের ওপর অমানুষিক নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ বন্ধে মিয়ানমারের ওপর চাপ প্রয়োগ করছে যুক্তরাষ্ট্র। রোহিঙ্গাদের ওপর বর্বর অত্যাচার ও সহিংসতাকে নিন্দা জানিয়ে এবং মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চিকে এই মানবিক বিপর্যয় বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের দু’জন প্রভাবশালী সিনেটর ডিক ডারবিন ও জন ম্যাককেইন। গত বৃহস্পতিবার সিনেটে এ বিষয়ে একটি রেজ্যুলেশন উত্থাপন করেছেন ওই দুই সিনেটর।এছাড়াও গত বুধবার যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান এড রয়েস এক চিঠিতে এই বর্বরতা চলতে থাকলে যুক্তরাষ্ট্র ও মিয়ানমার সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। ডিক ডারবিন ও জন ম্যাককেইনের রেজ্যুলেশনে কো-স্পন্সরড হিসেবে আছেন সিনেটর ডিয়ানে ফিনস্টেইন, সিনেটর কোরি বুকার ও সিনেটর বব মেনেনডেজ। যুক্তরাষ্ট্র সিনেটে প্রস্তাবিত এ রেজ্যুলেশনে কফি আনানের নেতৃত্বে গঠিত রাখাইন পরামর্শক কমিশনের রিপোর্টের পূর্ণ বাস্তবায়ন ও রোহিঙ্গাদের নাগরিক অধিকার দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
রেজ্যুলেশনে বলা হয়, মিয়ানমার সেনাবাহিনী নৃশংসভাবে ও অত্যন্ত ঠাণ্ডা মাথায় হেলিকপ্টার দিয়ে সাধারণ রোহিঙ্গাদের ওপর গুলিবর্ষণ করেছে। পেট্রোল বোমা দিয়ে গ্রাম জ্বালিয়ে দিয়েছে এবং রোহিঙ্গাদের পালাতে বাধা দিয়েছে। রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের অনেকগুলো ক্ষুদ্র জাতির একটি। রাখাইন রাজ্যে প্রায় দশ লাখ রোহিঙ্গা বসবাস করছেন, যেখানে তারা মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর হাতে নির্যাতিত হচ্ছেন। রেজ্যুলেশনে আরও বলা হয়েছে, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠির ওপর সহিংস হামলা ও বাস্তুহারা হওয়ায় আমরা নিন্দা জানাই।
মিয়ানমার কর্তৃপক্ষকে অবিলম্বে সব ধরনের শত্রুতামূলক ব্যবহার বন্ধের আহ্বান জানাই।রাখাইনে কী ঘটছে সেটি জানার জন্য জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনকে মিয়ানমারে কাজ করার অনুমতি দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে রেজ্যুলেশনে বলা হয়, সব বাস্তুহারা ও আহতদের সহায়তা দেওয়ার জন্য সংস্থাগুলোকে কাজ শুরু করার অনুমতি দেওয়া হোক। রোহিঙ্গাদের ওপর বর্বর নির্যাতন বন্ধের ও বিভিন্ন জাতির মধ্যে সংহতি সৃষ্টির জন্য অং সান সু চি-কে তার ভূমিকা পালনের আহ্বান জানানো হয় এই রেজ্যুলেশনে। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান এড রয়েস গত বুধবার অং সান সু চিকে লেখা এক চিঠিতে এই বর্বর ঘটনার জন্য যারা দায়ী তাদেরকে বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছেন।
চিঠির শুরুতে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠির ওপর হামলার ঘটনায় চরম উদ্বেগ প্রকাশ করে রয়েস বলেন, রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের কারণে মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক তৈরির ক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে। আপনার সরকার ও মিলিটারির ভূমিকা আছে জাতি, ধর্ম নির্বিশেষে মিয়ানমারের সব মানুষকে সুরক্ষা দেওয়ার।