প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে নিয়ে জল্পনা-কল্পনা ও কৌতুহল বাড়ছে। জাপান থেকে ফিরে এসে তিনি কি প্রধান বিচারপতির আসনে বসবেন নাকি ছুটিই কাটাবেন? এই প্রশ্ন সর্বত্র দেখা দিয়েছে। শুক্রবার রাত ১০ টায় প্রধান বিচারপতি অসুস্থ কন্যাকে দেখতে কানাডার উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করেছেন। কানাডা থেকে ১৮ সেপ্টেম্বর তিনি জাপানে পৌছাবেন। সেখানে তিনি এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের প্রধান বিচারপতিদের সম্মেলনে যোগদান করবেন। ওই সম্মেলনে বিচারপতি সিনহা স্বস্ত্রীক আমন্ত্রিত। তার স্ত্রী ঢাকা থেকে সেখানে তার সঙ্গে গিয়ে যুক্ত হবেন।

সূত্র বলেছে, ২২ সেপ্টেম্বর ঢাকা ফিরবেন প্রধান বিচারপতি। বর্তমানে তিনি ছুটিতে রয়েছেন। তার অবর্তমানে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি হিসাবে দায়িত্ব পেয়েছেন আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহাব মিঞা। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা ১০ থেকে ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশের বাইরে থাকবেন। তার অনুপস্থিতিতে প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন করবেন মো. আবদুল ওয়াহাব মিঞা।

বুধবার আইন সচিব আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হক স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘মহামান্য রাষ্ট্রপতি সংবিধানের ৯৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, বাংলাদেশের মাননীয় প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার অনুপস্থিতিকালীন অর্থাৎ আগামী ১০ সেপ্টেম্বর থেকে ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পুনরায় স্বীয় কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আপিল বিভাগের প্রবীণতম বিচারক মাননীয় বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহাব মিঞাকে প্রধান বিচারপতির কার্যভার পালনের দায়িত্ব প্রদান করিয়াছেন।’ সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর বাতিলের রায় নিয়ে সরকারের সঙ্গে প্রধান বিচারপতির টানাপোঁড়েন রীতিমতো অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি নিয়েছিল। সরকারি দলের এমপি, মন্ত্রী, নেতাকর্মীদের তুমুল সমালোচনার মুখে পরেন। সেই পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়ে এসেছে। ইতিমধ্যে ঈদের দিন বঙ্গভবন থেকে গণভবন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রধান বিচারপতির শুভেচ্ছা বিনিময় হয়েছে। তার আগে জাতীয় শোক দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন। কানাডা যাওয়ার আগে তার নিজ জেলা মৌলভীবাজারের কুলাউয়াতে দেয়া এক বক্তব্যে বলেছেন, বঙ্গবন্ধু দেশ স্বাধীন না করলে প্রধান বিচারপতি হতে পারতাম না।

পর্যবেক্ষক মহলে গভীর দৃষ্টি এখন প্রধান বিচারপতির দিকে। বিচার বিভাগের সঙ্গে নির্বাহী বিভাগের টানাপোঁড়েন শেষ হয়েছে কিনা, তার সমাধান কিভাবে ঘটতে যাচ্ছে, সেদিকেই সবার নজর। এই নিয়ে সকল মহলের অন্দরে কৌতুহলের শেষ নেই। ৩১ শে জানুয়ারি প্রধান বিচারপতির মেয়াদ শেষ হচ্ছে। তার আগে তিনি তার মেয়াদকালীন সময়ে দায়িত্ব পালন করবেন নাকি ছুটিতেই কাটাবেন? এই প্রশ্নই বড় হচ্ছে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn