দুই বছরেও ভারমুক্ত হতে পারেনি সিলেট জেলা আওয়ামী লীগ
শূণ্য হয়ে পড়ে আওয়ামী লীগের সিলেট জেলা শাখার সভাপতির পদটি। শূণ্য হয়ে পড়ে সিলেট জেলা পরিষদের প্রশাসকের পদটিও। এই দু’টিতেই দায়িত্বপান প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও অ্যাডভোকেট লুৎফুর রহমান। এরপরে সিলেট জেলা পরিষদ নির্বাচনে বিজয় লাভের মাধ্যমে তিনি প্রশাসক থেকে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হন। কিন্তু দলীয় পদে ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বটি এখনো বহাল রয়েছে তাঁর কাঁধে। দীর্ঘদিন ধরে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে তিনি চালাচ্ছেন সিলেট জেলা আওয়ামী লীগকে। তবে বয়সের ভারে তিনি সবসময় দলের সকল কর্মসূচিতে যোগ দিতে পারেন না। তখন অন্য কাউকে দিয়ে চালানো হয় দায়িত্ব।
২০১১ সালের ২২ নভেম্বর জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষিত হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা ওই দুইটি কমিটি অনুমোদন দিয়েছিলেন। তখন সিটি করপোরেশনের তৎকালীন মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরানকে সভাপতি ও আসাদ উদ্দিনকে সাধারণ সম্পাদক করে মহানগর এবং আবদুজ জহির চৌধুরী সুফিয়ানকে সভাপতি ও তৎকালীন সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান চৌধুরীকে সাধারণ সম্পাদক করে ৭১ সদস্যের জেলা কমিটি ঘোষণা করা হয়।এর আগে ২০০৫ সালের অক্টোবরে জেলা ও নভেম্বরে মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন শেষে পাঁচ সদস্যের জেলা ও দুই সদস্যের মহানগর কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল। পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের কথা থাকলেও তা হয়নি।
বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগের কমিটিতে সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি লুৎফুর রহমান চৌধুরীকে আনা হয়েছে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে। এরপরের সহ-সভাপতি ইফতেখার হোসেন শামীম আকস্মিক এক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রয়াত হয়েছেন। তাঁর স্থানটিও শূণ্য। কমিটিতে সহ-সভাপতি হিসেবে আরোও আছেন ইমরান আহমদ এমপি, মাহমুদ-উস-সামাদ চৌধুরী এমপি, অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম, সিলেট সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আশফাক আহমদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ, আমির উদ্দিন চৌধুরী সাদেক, অ্যাডভোকেট শাহ ফরিদ আহমদ।
দীর্ঘদিন ধরে সিলেট জেলা শাখার মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ভারপ্রাপ্ত দিয়ে কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ায় দলটির নেতাকর্মীদের মধ্যে একধরনের হতাশা পরিলক্ষিত হচ্ছে। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকেই জানিয়েছেন- বঙ্গবন্ধু কন্যা ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের আওয়ামী লীগের কমিটিগুলোর খোঁজ-খবর রাখেন। যার প্রমাণ ইতোমধ্যে বিশ্বনাথ উপজেলার কমিটি স্থগিতকরণের মধ্যে দিয়ে পাওয়া গেছে। ভারপ্রাপ্ত সভাপতি লুৎফুর রহমানের প্রতি সম্মান জানিয়ে নেতৃবৃন্দ বলেন- দলের জন্য তার অনেক ত্যাগ রয়েছে। কিন্তু তিনি এখন বয়সের ভারে ন্যুজ্ব। তার উপর তিনি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন রয়েছেন। এ বিষয়টি বিবেচনায় রাখা উচিত বলে মনে করেন তারা।আরোও কয়েকজন নেতার দাবি জাতীয় নির্বাচনের পূর্বেই সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি সুসংগঠিত করা হোক। ভারপ্রাপ্ত সভাপতিকে পূর্ণ সভাপতি করা হোক কিংবা সহ-সভাপতি বা সম্পাদকদের মধ্যে থেকে কাউকে সভাপতি করা হোক।