স্মার্টফোনের ভিড়ে হারিয়ে যাচ্ছে যে সব গ্যাজেট!
মনে পড়ে শেষ কবে এমপিথ্রি প্লেয়ারে গান শুনেছেন? এমন অনেক জিনিসই হারিয়ে গেছে আপনার জীবন থেকে, স্মার্টফোনের দৌলতে। এখন বেশ কয়েকটি গ্যাজেটই ‘আনস্মার্ট’ হয়ে পড়েছে, যাকে ছেড়ে বছর পাঁচেক আগেও এক পা এগোতে পারতেন না। আজকের স্মার্টফোনে সেই সব সুবিধা থাকায়, অধিকাংশ গ্যাজেটই হারিয়ে গেছে। এমন ১০টি গ্যাজেট আছে যা আর ব্যবহৃত হয় না বা ব্যবহার প্রায় কমে গিয়েছে।
ক্যামেরা
স্মার্টফোন আসার পর সবচেয়ে বেশি লোকসানের মুখ দেখেছে ডিজিটাল ক্যামেরার ব্যবসা। প্রথমে প্রত্যেকটি স্মরণীয় মুহূর্তকে ধরে রাখার জন্য রিল বা ডিজিটাল ক্যামেরাই ছিল বিশ্বস্ত সঙ্গী। কিন্তু এখন স্মার্টফোনে ক্যামেরার সুবিধা থাকায় আলাদা ভাবে এগুলির ব্যবহার হয় না। আর রিল ক্যামেরা তো আজ ইতিহাস। ৮ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা মাঝামাঝি রেঞ্জের প্রায় সমস্ত ফোনেই পাওয়া যায়। আবার একটু দামি স্মার্ট ফোনে ১৩ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরাও থাকে।
পোর্টেবল মিউজিক এবং ভিডিও প্লেয়ার
স্মার্টফোন আসার আগেই পোর্টেবল মিউজিক এবং ভিডিও প্লেয়ারের বাজার কমে আসতে শুরু করেছিল।
সাধারণ ফোনেই এগুলি পাওয়া যেত। কিন্তু আইফোন আসার পরই সবচেয়ে বড় ধাক্কা খায় এমপি ৩ প্লেয়ারের বাজার। আবার আইপড আসার পর পোর্টেবেল ভিডিও প্লেয়ারের বাজার শেষ হয়ে যায়।
ক্যালকুলেটর
সাধারণ ফিচারের ফোন আসার পরই আলাদা ভাবে ক্যালকুলেটরের ব্যবহার বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। কারণ অধিকাংশ মোবাইল ফোনেই ইন বিল্ট ক্যালকুলেটর থাকে। স্মার্টফোন আসার পর এখন সাইন্টিফিক ক্যালকুলেটরের বিভিন্ন অ্যাপও ইনস্টল করা যায়। ফলে গুরুত্ব হারিয়েছে ক্যালকুলেটর।
রিস্ট ওয়াচ
শুধু মাত্র প্রয়োজনই নয়, ব্যক্তিত্ব ফুটিয়ে তুলতেও এর জুড়ি মেলা ভার ছিল। কিন্তু বর্তমানে এর ব্যবহারও কমে গিয়েছে। কারণ অবশ্যই মোবাইল ফোন। আর এখন টেক দুনিয়ায় পা দিয়েছে স্মার্টওয়াচ। সেক্ষেত্রে রিস্ট ওয়াচকে অনেকে সেকেলে মনে করতেই পারেন। সময় দেখার জন্য অধিকাংশ মানুষই এখন মোবাইল ফোনের স্ক্রিনেই চোখ বোলান।
ফ্ল্যাশলাইট বা টর্চ
লোডশেডিং হলেই অন্ধকার ঘরে একজোড়া হাত টর্চ খুঁজে বেড়াত। কিন্তু মোবাইল ফোনে ফ্ল্যাশলাইট অ্যাপ্লিকেশন আসার পর অন্ধকার ঘরে টর্চ খুঁজতে হয় না। জায়গায় বসে মোবাইলের বাটন টিপলেই এখন অন্ধকার দূর করা যায়।
পার্সোনাল ডিজিটাল অ্যাসিস্টেন্স (পিডিএ)
স্মার্টফোনের আগে অনেকের কাছেই গুরুত্বপূর্ণ গ্যাজেট ছিল পিডিএ। ইন্টারনেট সংযোগ থাকায় এতে ভিডিও দেখা যেত, কয়েকটি আবার টাচস্ক্রিন পিডিএ-ও ছিল। আইফোনের আসার আগে নোকিয়ার ৯০০০ কমিউনিকেটর এবং পামস পাইলট খুব জনপ্রিয় ছিল। তবে সেসব এখন অতীত।
পেজার
এই ডিভাইসটি কখন হারিয়ে গেল তা টেরও পাওয়া যায়নি। পেজারে শুধু মেসেজই করা যেত। কিন্তু ফোন করা এবং টেক্সট মেসেজ-সহ অন্যান্য অনেক সুযোগ-সুবিধা নিয়ে এসেছিল মোবাইল। তাই পেজারের তুলনায় মোবাইল ব্যবহারই শ্রেয় মনে করেন সাধারণ মানুষ।
নেভিগেশন ডিভাইস
একসময় গাড়িচালকদের কাছে প্রয়োজনীয় ছিল এই ডিভাইস। সঠিক পথ দেখতে অনেকেই এই ডিভাইস ব্যবহার করতেন। কিন্তু স্মার্টফোনের গুগল ম্যাপ বা নেভিগেশন অ্যাপ আসায় এই ডিভাইসের প্রয়োজন মিটে গিয়েছে।
ডিজিটাল ডায়েরি
করপোরেট দুনিয়ার গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ ছিল ডিজিটাল ডায়েরি। অ্যাপয়ন্টমেন্ট, লিস্ট, কনট্যাক্ট ডিটেল সমস্ত কিছুই এখানে রাখা যেত। কিন্তু এখন মোবাইল ফোন এবং স্মার্টফোনেই এই ফিচারগুলো পাওয়া যায়। তাই আজকের যুগে এটিও ব্যাক ডেটেড।