ছাতকে দক্ষিনেশ্বর মন্দির, অজগর ও নৌকার আদলে পূজামন্ডপ
ছাতকে প্রতিবছরের ন্যায় এ বছরও পূজা মন্ডপগুলোতে ভিন্ন মাত্রা যোগ করার চেষ্টা করেছেন উৎসব কমিটিগুলো। অজগর, পালতোলা নৌকা, কালীঘাট মন্দির, রাজবাড়ী, কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের রথের আদলে সজ্জ্বিত করা হয়েছে এ বছরের পূজা মন্ডপগুলো। উপজেলার ৩০টি পূজামন্ডপে উৎসব মুখর পরিবেশ ও ধর্মীয় ভাব গাম্ভির্যের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে শারদীয় দুর্গোৎসব। উৎসব উপলক্ষে গত একমাস ধরে প্রতিটি পূজা মন্ডপে চলছে প্রতিযোগিতামূলক সাজ-সজ্জা কাজ। বিগত কয়েক বছর ধরে এখানের পূজা মন্ডপগুলোতে আনা হয়েছে নতুনত্ব। বিগত বছরগুলোতে তাজমহল, রাজবাড়ি, টাইটানিক, বাংলাদেশ বিমান, সেভেন ষ্টার আল-ব্র“জ টাওয়ার, স্বর্ণমন্দিা, রকেটসহ অনেক নামী-দামী ও পৌরানিক নিদর্শনের আদলে সজ্জিত করে দর্শনার্থীদের নজর কাড়তে সক্ষম হয়েছিল। এ বছরও ব্যতিক্রমভাবে সাজানো হয়েছে বেশ কয়েকটি মন্ডপ। পাশাপাশি আকর্ষনীয় ও নজরকাড়া ফটক, লাইটিংয়ের মাধ্যমে পুজা মন্ডপগুলোকে উপস্থাপনকরা হয়েছে আরো অপরূপ করে। সেই ধারাবাহিকতায় এ বছর শহরের কালীবাড়ি সার্বজর্নীন পূজা মন্ডপ সজ্জিত করা হয়েছে পৌরানিক রাজবাড়ির আদলে। সু-উচ্চ প্রাসাদকে অপরূপ আলোক সজ্জায় সজ্জিত করে অনেকটা জীবন্ত করে তুলা হয়েছে রাজবাড়িকে। প্রতিদিন রাজবাড়ি আদলে তৈরী করা পূজামন্ডপ দুর দূরান্ত থেকে দর্শনার্থীরা আসছেন এক নজর দেখার জন্য। মহাপ্রভুর আখড়া পূজা মন্ডপ সাজানো হয়েছে পালতোলা নৌকার আদলে। শহরের মধ্যবাজারে এ মন্ডপের অবস্থান হওয়ায় মন্ডপের সামনে সবসময় দর্শনার্থীদের ভির লেগেই থাকে। গত বছরের ন্যায় এ বছরও হাসপাতাল রোডের ত্রি-নয়নী পূজা মন্ডপ তৈরী করা হয়েছে পুকুর ও পুকুর পাড় কেন্দ্রিক। এ পূজা মন্ডপের প্রবেশ দ্বার তৈরী করা হয়েছে সিংহের মুখের ভেতর দিয়ে। পাহার ভেদ করে যেন দশভুজা দেবী বেড়িয়ে এসেছে-এমন নজরকাড়া পরিকল্পনায় প্রস্তুত করা হয়েছে। শহরের তাতিকোনা পূজা মন্ডপ তৈরী করা হয়েছে দক্ষিনেশ্বর কালীবাড়ীর আদলে। দীর্ঘ সু-সজ্জিত পথ অতিক্রম করে মন্ডপে মন্ডপে পৌছলেই নজরে আসবে দক্ষিনেশ্বর কালীবাড়ী। দীর্ঘ পথ তৈরী করা হয়েছে বিশাল অজগর সাপের আদলে। মহামায়া যুবসংঘের রেল কলোনীর পূজা মন্ডপ সব সময়ই ভিন্ন সাজে তৈরী করা হয়। এসব পূজা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা জানান, ছাতকে সব সময়ই পূজা মন্ডপগুলোকে ভিন্ন আঙ্গিকে সাজানোর চেষ্টা করা হয়। ভিন্ন ভিন্ন কমিটি তাদের নিজস্ব চিন্তা-চেতানা থেকে মন্ডপ তৈরী করে থাকেন। এ বছরও এর ব্যতিক্রম হয়নি। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় শারদীয় দুর্গোৎসবের আমেজ এখন গোটা উপজেলা জুড়ে বইছে। সাজ-সাজ রব বিরাজ করছে প্রত্যেকটি পূজা মন্ডপে। ষষ্ঠি পূজার মাধম্যে উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু করবে এখানের ৩০টি মন্ডপে। এ বছর উপজেলার ৩০টি পূজা মন্ডপে দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর মধ্যে ১২টি পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে পৌরশহরে। পূজা মন্ডপ গুলোর মধ্যে সবচেয়ে প্রাচীনতম কালীবাড়ি পূজামন্ডপে এ বছর ৯২ তম সার্বেজনীন দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ৩০টি পূজা মন্ডপের মধ্যে শহরের কালীবাড়ি, মহাপ্রভূর আখড়া, শিববাড়ী, মন্ডলীভোগ চৈতন্য সংঘ, হাসপাতাল রোডের ত্রি-নয়নী, তাতিকোনা, রেলওয়ে কলোনীর মহামায়া, রাখাল তলা এবং ইসলামপুর ইউনিয়নের ধনিটিলা পূজা মন্ডপকে অধিক ঝঁকিপূর্ণ তালিকায় রাখা হয়েছে।