সুনামগঞ্জে মাছ চাষ করে সাবলম্বী হয়েছেন ৫ শতাধিক পরিবার
কাজী জমিরুল ইসলাম মমতাজ-
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার জাহাঙ্গীর নগর ইউনিয়নের মঙ্গলকাটা গ্রামে তিন শতাধিকের উপর পুকুরে মাছ চাষ করে সাবলম্বী হয়েছেন ৫ শতাধিক পরিবারের তিন হাজার মানুষ। তাদের পরিবারের প্রতিটি মানুষ পুকুরে মাছ চাষের মাধ্যমে তাদের ভাগ্য বদলে দিয়েছেন । পুকুরের সমৃদ্ধ গ্রাম হিসাবেই ইতিমধ্যে মঙ্গলকাটা জেলা সহ বিভিন্ন জেলায় পরিচিতি লাভ করেছে। সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নের এটি একটি পুরোনো গ্রাম। পরিবারের কর্তা থেকে শুরু করে শিশু-কিশোররা পুকুরে মাছ চাষের নানা কাজের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। অভাব-অনটনের কারণে একসময় এই গ্রামের শিশুরা একটু বড় হলেই কাজের সন্ধানে ছুটতে হতো এদিক ওদিক। এখন তাদের অভিভাবকরা মাছ চাষের কারণে তাদের ছেলেমেয়েরা লেখাপড়ায় অগ্রসর হচ্ছে । সুনামগঞ্জ জেলা শহর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরের এই গ্রামটির অবস্থান। এই গ্রামে ৫০০ পরিবারের বসবাস এবং মানুষের সংখ্যা প্রায় তিন হাজার। সুরমা নদীর উত্তর পাড়ের হালুয়ারঘাট থেকে মঙ্গলকাটা হয়ে ডলুরা শহীদ মিনার যেতে সড়কের দু’দিকে তাকালেই দেখা যায় কেবল পুকুর আর পুকুর। শুধু ছোট পুকুর নয়, ৩ কেদার, ৪ কেদার, ৫ কেদার ও ৮ কেদার আয়তনের পুকুরও রয়েছে। একটি ২২ কেদারের পুকুরও আছে এই গ্রামে। এইসব পুকুরে পাঙাস, তেলাপিয়া, কার্প জাতীয়, রুই. কাতলা, সরপুটি, মৃগেল, কৈ সহ নানা জাতের দেশীয় মাছেরও চাষ করা হয়। মঙ্গলকাটার মাছ সুনামগঞ্জ সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাইকারিও বিক্রি করা হয়। সুদমুক্ত ঋণ পেলে এই গ্রামের মাছ চাষীরা সুনামগঞ্জ জেলার ২৩ লাখ মানুষের মাছের আমিষের চাহিদা পূরণ করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রি করতে পারবেন বলে জানালেন মাছ চাষীরা। এ ব্যপারে মাছ চাষীরা জানালেন, এক সময় গ্রামের মানুষের অভাব-অনটন ছিল। এখন বেশিরভাগ পরিবারই স্বচ্ছল। সহজ শর্তে ঋণদান এবং প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করলে দেশের মৎস্য সম্পদ উন্নয়নে মঙ্গলকাটার মাছ চাষীরা আশানুরূপ ভাবে কাজে লাগবে বলে মনে করেন স্থানীয়রা।
এ ব্যপারে স্থানীয় জাহাঙ্গীরনগর ইউপি চেয়ারম্যান মোখছেদ আলী বলেন, এই গ্রামে অসংখ্য ছোট বড় পুকুর রয়েছে। যদি জেলা মৎস্য বিভাগের উদ্যোগে মাছ চাষীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা এবং সহজ শর্তে ঋণ দেয়া হয় তাহলে ঐ গ্রামের পুকুরগুলোতে এলাকার বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে এবং এখানকার মাছ জেলাবাসীর আমিষের চাহিদা মিঠিয়ে বাংলাদেশ সহ বিদেশে রপ্তানী করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এ ব্যপারে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শংকর চন্দ্র দাস তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন মৎস্য বিভাগের মাধ্যমে এই অর্থবছরে আগামী নভেম্বর-ডিসেম্বর, মঙ্গলকাটায় মৎস্য প্রশিক্ষণ, প্রদর্শনী মৎস্য খামার এবং অস্বচ্ছল খামারীদের ঋণ দেবার মাধ্যমে তাদের স্বাবলম্বী করে তুলার জন্য পরিকল্পনা চলছে।