সিলেটে এক মঞ্চে আওয়ামী লীগ-বিএনপি’র শীর্ষ নেতারা
‘মুক্তিযোদ্ধা তুরন মিয়া ন্যায় ও প্রগতির সংগ্রামে ছিলেন অগ্রসৈনিক’
সিলেট জেলা ব্যবসায়ী ঐক্য কল্যাণ পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মো. তুরন মিয়ার রুহের মাগফেরাত কামনা করে আয়োজিত খতমে কোরআন, আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে দীর্ঘদিন পর এ মঞ্চে মিলিত হন আওয়ামী লীগ-বিএনপির শীর্ষ নেতারা। তবে এক মঞ্চে এর আগেও সিলেটের নেতৃবৃন্দ এক হলেও টানা দুইবার ক্ষমতায় থাকা ক্ষমতাসীন দলের সাথে বেশ ফারাক তৈরি হয়েছে বিএনপির। শীর্ষ নেতা থেকে তৃণমূল নেতাদের হামলা-মামলা, দমন-পিড়নের অভিযোগ করে আসছে বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাইরে থাকা বিএনপি। আর নির্বাচন ঠেকাতে জ্বালাও-পোড়াও আন্দোলন করে মানুষ হত্যাসহ রাষ্ট্রীয় সম্পদের ক্ষতিসাধণসহ বিএনপির বিরুদ্ধে নানা যড়যন্ত্রের অভিযোগ করে আসছে আওয়ামী লীগ। এরই মধ্যে আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে বেশ উত্তপ্ত রাজনৈতিক অঙ্গন। একে অন্যের প্রতি কাদা ছুড়াছুড়িতে যখন ব্যস্ত উভয় দলের কেন্দ্রীয় নেতারা তখন সিলেটে উভয় দলের শীর্ষ নেতাদের এ মিলন মেলা সিলেটের রাজনীতিতে সৌহার্দ-সম্প্রীতির অতীত ধারাবাহিকতার অংশ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। কারণ সিলেটের রাজনীতিতে এ সম্প্রীতি বেশ পুরনো। বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে সারাদেশে জ্বালাও পোড়াও, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটলে সিলেটে চলেছে সমঝোতার রাজনীতি। এটা সিলেটের রাজনীতির একটি ঐতিহ্য বলেও অনেকে মন্তব্য করেন অনেকে। সিলেট জেলা পরিষদ মিলনায়তনে সোমবার (০২ অক্টোবর) সন্ধ্যায় মরহুমের রুগের মাগফেরাত কামনা করে এ খতমে কোরআন, আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। সিলেট জেলা ব্যবসায়ী ঐক্য কল্যাণ পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আলহাজ্ব শেখ মো. মখন মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সংসদের সদস্য, সিলেট মহানগর সভাপতি ও সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান। মহানগর ব্যবসায়ী ঐক্য কল্যাণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক ও জেলার সহ-সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রবের যৌথ পরিচালনায় সভার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলার ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আহাদ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সাংসদ আলহাজ্ব শফিকুর রহমান চৌধুরী, মহানগর বিএনপির সভাপতি নাছিম হোসাইন, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ, মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম, মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালিক, সাংগঠনিক সম্পাদক কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ, শ্রমিকলীগ জেলা সভাপতি প্রকৌশলী এজাজুল রহমান এজাজ, মহানগর শ্রমিক লীগ সভাপতি এম. শাহরিয়ার কবির সেলিম, ট্রেড সেন্টার মার্কেটের চেয়ারম্যান মাওলানা হাবিবুর রহমান, মহানগর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এমদাদ হোসেন চৌধুরী, স্বেচ্ছাসেবকলীগের কেন্দ্রীয় সদস্য তপন চন্দ্র পাল, মরহুমের বড়ভাই, সিলেট চেম্বারের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি শাহ আলম, বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট রফিকুল হক, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির ভাইস চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মতছির আলী, অ্যাডভোকেট আব্দুল মালিক, হাসান মার্কেট ব্যসায়ী সমিতির সভাপতি হাজী রইস আলী।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- জেলার সিনিয়র সহ-সভাপতি আতিকুর রহমান আতিক, সহ-সভাপতি মুফতি নেহাল উদ্দিন, মহানগর সহ-সভাপতি আব্দুল মুনিম মলিক মুন্না, আলাউদ্দিন আলো, সিলেট ব্যবসায়ী স্বার্থ সংরক্ষণ পরিষদের সদস্য সচিব এহসানুল হক তাহের, জেলার সহ-সাধারণ সম্পাদক সুহেল আহমদ সাহেল, আব্দুল কাইয়ুম মুকুল, আলেক মিয়া, মহানগর সহ-সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান রিপন, রিহাদুল হাসান রুহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল হাদী পাবেল, জেলার সহ-সাংগঠনিক সৈয়দ রাজন, জেলার উপদেষ্ঠা হোসাইন আহমদ, পৃষ্ঠপোষক নজরুল ইসলাম চুনু, মধুবন মার্কেট ব্যবসায়ী কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি খালিকুল ইসলাম বাচ্চু, ব্রম্মময়ী বাজার ব্যবসায়ী সতিতির সভাপতি মো. আতিকুর রহমান, শুকরিয়া মার্কেটের সাধারণ সম্পাদক কিবরিয়া হোসেন নিঝুম, আম্বরখানা বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক গোলজার আহমদ, সিটি সেন্টার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হোসাইন আহমদ, ট্রেড সেন্টার মার্কেটের সাধারণ সম্পাদক মো. ছাদ মিয়া, দরগাহ বাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান দুদু, হাসান মার্কেটের সাধারণ সম্পাদক নিয়াজ মো. আজিজুল করিম, মিতালী ম্যানশন ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. খসরুজ্জামান, লালদিঘিরপাড় রড-সিমেন্ট মার্চেন্ট গ্র“পের সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের আহমদ জাবের, সিলেট মিলেনিয়ামের সভাপতি শাহ জাকের আহমদ, সিবিটেক কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. কামরুল ইসলাম, সিটি সুপার মার্কেটের সভাপতি জয়নুল হোসেন, লালবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, রসমেলা এমডি নুরুল ইসলাম সুমন, জেলা ব্যবসায়ী পরিষদের আইন বিষয়ক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, অর্থ সম্পাদক কয়ছর আলী, আলী মিরাজ মুস্তাক, কবির আহমদ, আলাউদ্দিন, লুৎফুর রহমান লিলু, পংকি মিয়া, জাবেদুল ইসলাম দিদার, মুস্তাক আহমদ সাহেল, সিরাজুল ইসলাম, আব্দুল গফুর, গাজী জামিল, শামীম চৌধুরী, শেখ তাসলিমা আলী হেনা, আশরাফুর রহমান পাঠান, মো. জাকারিয়া ইমরুল, আশফাক আহমদ, ইমাম উদ্দিন কামাল, মো. কয়েস আহমদ সাগর, আব্দুল মুহিত স্বপন, আতিকুর রহমান সুয়েব, মো. সুমন ইসলাম, মুফতি আনিসুর রহমান তিতাস, ইসলাম আলী, যুবলীগ নেতা ইমরান চৌধুরী রাজিব, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা রানা শেখ, জেলা ছাত্রলীগ সহ-সভাপতি ইমরান আহমদ চৌধুরী, সহ-সভাপতি সুহেল আহমদ মুন্না প্রমুখ।
সভায় বক্তারা বলেন- মুক্তিযোদ্ধা মো. তুরন মিয়া ন্যায়ের সংগ্রামে, প্রগতির সংগ্রামে ছিলেন অগ্রসৈনিক। তার মৃত্যুতে সমাজের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। আজকের এ সমাজে তার মতো ব্যক্তির খুবই প্রয়োজন। তিনি যেমন ব্যবসায়ীদের দাবি-দাওয়া আদায়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন, তেমনি সমাজে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করেছেন। তিনি আপাদমস্তক সমাজসেবক ছিলেন। বড় মাপের রাজনৈতিক নেতা হয়েও কখনো অহংকার, গর্ব করেননি। মহান মুক্তিযুদ্ধে জীবন বাজী রেখে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন তিনি। সিলেটের ব্যবসায়ীদের প্রিয় এ মানুষ প্রচার বিমুখ ছিলেন।