ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে ভোটগ্রহণ আবার আলোচনায়
লুৎফর রহমান, কাফি কামাল ও সিরাজুস সালেকিন |
জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে ফের আলোচনায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম)। আধুনিক এই ভোটগ্রহণ পদ্ধতি নিয়ে এর আগেও রাজনৈতিক বিতর্ক হয়েছে। নির্বাচন কমিশন স্থানীয় সরকার নির্বাচনে পরীক্ষামূলকভাবে ইভিএম ব্যবহারও করেছে। জাতীয় নির্বাচনে এর ব্যবহার নিয়ে চিন্তাভাবনা হয়েছে। পক্ষে বিপক্ষে মত ছিল বরাবরই। এবার ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংলাপে দলটির পক্ষ থেকে দেয়া ১১ প্রস্তাবের মধ্যে নয় নম্বর প্রস্তাব ছিল এটি। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে নির্বাচনের মাত্র এক বছর সময় সামনে রেখে ইভিএম ব্যবহার সম্ভব কিনা। অবশ্য এ নিয়ে খোদ নির্বাচন কমিশন ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোও সন্দিহান। বিরোধী জোট নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের বিপক্ষে মত দিয়েছে। নির্বাচন কমিশনের সংলাপে অংশ নেয়া দলগুলোর মধ্যে এ নিয়ে পক্ষে বিপক্ষে মত এসেছে। ভোটগ্রহণে ইভিএম ব্যবহার করতে হলে যে প্রস্তুতি ও প্রশিক্ষণের প্রয়োজন তা সামনের সময়ে সম্ভব নয় বলে মনে করছেন কমিশন সংশ্লিষ্টরা। নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের পেছনে যুক্তি হিসেবে আওয়ামী লীগ বলছে এটি আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর ব্যবস্থা। বিশ্বের অনেক উন্নত ও গণতান্ত্রিক দেশে নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার হয়। এ পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণে স্বচ্ছতা ও প্রত্যেকের ভোটাধিকার সুরক্ষিত থাকে। নির্বাচন কমিশনের সংলাপে অংশ নেয়া এবং আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা সংশ্লিষ্ট কয়েকজন নেতা মানবজমিনকে জানিয়েছেন, ইভিএম ব্যবহার করা হবে কিনা নির্বাচন কমিশন এ সিদ্ধান্ত নেবে। তবে আওয়ামী লীগ চায় আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার। পুরনো ভোটগ্রহণ পদ্ধতির স্থানে আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর ভোটগ্রহণ ব্যবস্থা সময়ের দাবি। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক মানবজমিনকে বলেন, আসন্ন নির্বাচন স্বচ্ছ ও অবাধ হবে, দেশের সব নাগরিক স্বাচ্ছন্দ্যে ভোট দিতে পারবেন আওয়ামী লীগ এমনটি চায়। ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন ব্যবহারে কোনো ধরনের কারচুপির সুযোগ নেই। এ ছাড়া এখানে একজনের ভোট অন্যজন দিতে পারবে না। পৃথিবীর অনেক উন্নত দেশে এটি ব্যবহার হচ্ছে। এ ছাড়া দেশ সব ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে। সবকিছুতে আধুনিক প্রযুক্তির ছোঁয়া লেগেছে। নির্বাচন ব্যবস্থায় আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার সময়ের দাবি। সামনের সময়ে ইভিএম এর প্রস্তুতি নেয়া সম্ভব কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এটি নির্বাচন কমিশন পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখবে। সম্ভব হলে তারা উদ্যোগ নেবে। আওয়ামী লীগ যেটি সঙ্গত মনে করে সেটিই প্রস্তাব করেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের নির্বাচন পরিচালনা সংশ্লিষ্ট একজন নেতা জানান, দলের পক্ষ থেকে প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। তবে ইভিএম ব্যবহার করা হবে কি হবে না এটি নির্বাচন কমিশনের ব্যাপার। নির্বাচন কমিশন সম্পূর্ণ স্বাধীন। তারা সবকিছু বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে।
প্রস্তাব নিয়ে ভাবছে ইসি: যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে পুরনো প্রায় এক হাজার ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) অকেজো করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ লক্ষ্যে একটি কমিটিও কাজ করছে। আর নতুন করে ইভিএম তৈরির কাজও চলছে। সেগুলো ব্যবহার হবে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ভোট গ্রহণের কাজে সীমিত আকারে। একাদশ জাতীয় সংসদের রোডম্যাপে ইভিএম এর বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার নিয়ে ইসির কাছে পাল্টাপাল্টি প্রস্তাব এসেছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের প্রস্তাব এসেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে। অপরদিকে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংলাপে বিএনপি বলেছে, জাতীয় নির্বাচনে কোনোভাবেই ইভিএম বা ডিভিএম পদ্ধতি বা এ জাতীয় কোনো যন্ত্র ব্যবহার করা যাবে না। শুধু বিএনপি নয়। অধিকাংশ রাজনৈতিক দল ইভিএম ব্যবহারের বিপক্ষে মত দিয়েছে। এ অবস্থায় নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছে রাজনৈতিক দলগুলো। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ইসির অতিরিক্ত সচিব মোখলেসুর রহমান মানবজমিনকে বলেন, এখনও ইভিএম ব্যবহারের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। সক্ষমতার চেয়ে বড় প্রশ্ন হচ্ছে জনগণ ও রাজনৈতিক দলগুলোকে তা গ্রহণ করতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতের ওপর বিষয়টি নির্ভর করছে। আমরা তো দশ কোটি ভোটারের সঙ্গে কথা বলতে পারছি না। আমরা কথা বলছি জনগণের প্রতিনিধি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে। তারা কি বলেছে সেটাই দেখার বিষয়। ইসি কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা হবে প্রায় ৪০ হাজার। এই নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত হলে প্রায় আড়াই লাখ ইভিএম প্রয়োজন হবে। ভোটের আর বাকি আছে একবছর। এ সময়ে এত বিপুল পরিমাণ ইভিএম তৈরি কঠিন হবে। তাছাড়া এসব মেশিনের ওপর নির্বাচন কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। সর্বোপরি ভোটারদের নতুন একটি প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভোটদানের উপযোগী করে তোলা প্রায় অসম্ভব। যেখানে ভোটাররা ব্যালটে ভোট দিতে অনেক ক্ষেত্রে সঠিকভাবে ভোট দিতে পারে না। ফলে অনেক ভোট নষ্ট হয়। এর আগে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করা হবে না বলে জানিয়েছিলেন ইসির বিদায়ী সচিব মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ। তবে রোডম্যাপ ঘোষণা অনুষ্ঠানে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা বলেছেন, ইভিএম ব্যবহারের দরজা বন্ধ হয়নি। স্থানীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার হবে। সংলাপে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রস্তাবের ওপর ভিত্তিতে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তবে বিপুল পরিমাণ ইভিএম তৈরি, কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ প্রদান ও ভোটারদের সচেতনতা সৃষ্টির সক্ষমতা হয়েছে কিনা দেখতে হবে। ইসি সূত্র জানায়, ড. শামসুল হুদা কমিশনের কেনা ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন ইভিএম অকেজো করার প্রক্রিয়া চলছে। সে সময় কেনা সব ইভিএম অকেজো-পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হচ্ছে। ইসি এই কাজটির জন্য আট সদস্যের একটি যাচাই-বাছাই কমিটি গঠন করেছে। তাদের দেয়া সুপারিশের আলোকে এগুলো অকেজো করা হবে। এটিএম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশনের ইভিএম বাদ দিয়ে নতুন ইভিএমে আগামীতে নির্বাচন করার কথা ভাবছে ইসি। ইতিমধ্যে নতুন ইভিএমের কাজ অনেক দূর এগিয়েছে।
যে কারণে আপত্তি বিএনপির: ইভিএম বা ডিভিএম পদ্ধতি ভোটগ্রহণের বিপক্ষে নিজেদের শক্ত অবস্থান তুলে ধরেছে বিএনপি। কোনো ধরনের যান্ত্রিক উপায়ে ভোটগ্রহণ ও গণনায় মোটেই রাজি নয় তারা। নির্বাচন কমিশন যতবার এ বিষয়টি আলোচনায় এনেছে ততবারই পরিষ্কার বিরোধিতা করেছে দলটি। স্বল্প পরিসরে যেসব স্থানীয় নির্বাচনে ইভিএম পদ্ধতির ব্যবহার করা হয়েছে সেখানেও ত্রুটি-বিচ্যুতি তুলে ধরে নিজেদের অবস্থানকে জোরালো করেছে বিএনপি। ইভিএম ইস্যুতে নির্বাচন কমিশনে চিঠি দিয়ে ও সর্বশেষ রাজনৈতিক দলের সংলাপেও নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেছে বিএনপি। দলটির নেতারা বলছেন, ব্যালট পেপারে ভোটগ্রহণে যদি ভোট চুরি করা যায়, ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট ডাকাতি করা সম্ভব। আগামী সংসদ নির্বাচনে ইলেট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএম ব্যবহারের চেষ্টাকে সরকারের দুরভিসন্ধি। কোনো অবস্থাতেই বিএনপি এ পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ ও গণনার সিদ্ধান্ত মেনে নেবে না। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, গোটা পৃথিবীজুড়েই ভোটগ্রহণের একটি বিতর্কিত পদ্ধতি ইভিএম। দেশ-বিদেশের বহু নির্বাচনে এ পদ্ধতির ত্রুটি-বিচ্যুতির প্রচুর উদাহরণ রয়েছে। আমরা দৃঢ়ভাবেই বলবো, ইভিএম পদ্ধতিতে ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং, ভোট টেম্পারিং ও ম্যানিপুলেট করার সুযোগ আছে। বিএনপির পক্ষ থেকে এ পদ্ধতির ত্রুটি-বিচ্যুতি এবং আমাদের যৌক্তিক আশঙ্কাগুলো তুলে ধরে নির্বাচন কমিশনে আগেও চিঠি দিয়েছি। নির্বাচন কমিশনের সংলাপে দেয়া প্রস্তাবেও এ বিষয়টি আছে। এছাড়া ইভিএম নিয়ে আমরা সংবাদ সম্মেলন করেছি, সেমিনার করেছি, আমাদের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ তাদের মতামত দিয়েছেন। পরিষ্কার বলেছি, ইভিএম পদ্ধতি আমরা কোনোভাবেই মেনে নেব না। এদিকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের সংলাপেও গুরুত্বের সঙ্গে ইভিএম ইস্যুতে নিজেদের অবস্থানের কথা জানিয়েছে বিএনপি। লিখিত প্রস্তাবনার ‘ভোট গ্রহণে যন্ত্রের ব্যবহার’ শীর্ষক অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে- ‘ভোট গ্রহণে যে সব দেশে ইভিএম বা ডিভিএম পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়েছে তার প্রায় সবগুলোতেই ভোট জালিয়াতি ও কারচুপির প্রমাণ রয়েছে। এ বিষয়ে ইতিমধ্যে বিএনপির পক্ষ থেকে আপত্তি জানিয়ে কমিশনে পত্র দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণে কোনোক্রমেই ইভিএম বা ডিভিএম পদ্ধতি কিংবা এ জাতীয় কোনো যন্ত্র ব্যবহার করা যাবে না’।
এটিএম শামসুল হুদা কমিশন স্বল্প পরিসরে ইভিএম পদ্ধতি চালু করার পর এ নিয়ে গবেষণা করতে একটি সেল গঠন করে বিএনপি। সে সেলের একজন সিনিয়র সদস্য ছিলেন বর্তমানে স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। ইভিএম পদ্ধতির নানা ত্রুটির কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ভোট কেন্দ্র দখল না করেও ইভিএমের মাধ্যমে ভোট দখল করা যায়। তার নানা উদাহরণ দেশে-বিদেশে নানা নির্বাচনে প্রমাণ হয়েছে। আমাদের দেখতে হবে, বিশ্বের ৯০ শতাংশ গণতান্ত্রিক দেশে ইভিএম ও ই-ভোটিং পদ্ধতি চালু নেই। হাতেগোনা যে কয়টি দেশ এটা চালু করেছিল প্রচণ্ড সন্দেহ ও বিতর্কের পর তারাও এটি থেকে সরে এসেছে। কেউ কেউ এটাকে আরো নিরাপদ করার কৌশল খুঁজছে। ভোটারদের আস্থা, স্বচ্ছতা, বিশ্বাস ও অনিশ্চিত নিরাপত্তার কারণে এ পদ্ধতি থেকে সরে এসেছে নেদারল্যান্ডস। সাধারণ ভোটারদের কাছে স্বচ্ছতার ব্যাপারে আস্থাহীনতার কারণে এ পদ্ধতিকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করেছে জার্মানি। ২০১৬ সালে যুক্তরাজ্য পার্লামেন্ট ডিভিএম ব্যবহার না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ২০০৬ সালে ই-ভোটিং পরিত্যাগ করেছে আয়ারল্যান্ড। অতিসম্প্রতি ইভিএমের মাধ্যমে ভোট কারচুপির গুরুতর অভিযোগ উঠেছে ভারতে। ইতালি বলছে, ইভিএম খুব সহজে কারচুপি করা যায়। সুইজারল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্সের মতো উন্নত গণতান্ত্রিক দেশ বিতর্কিত এই পদ্ধতি পরিত্যাগ করেছে। আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, পৃথিবীর প্রায় ৮৫ ভাগ দেশেই এই পদ্ধতি ব্যর্থ হয়েছে। এর পেছনে মেশিন যেমন দায়ী তেমনি দায়ী রাজনৈতিক ও অন্যান্য কিছু সমস্যা।
২০১০ সালে প্রথমবারের মতো চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করা হয়েছিল। ২০১১ সালে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও সীমিত পর্যায়ে ইভিএম ব্যবহার হয়। পরে নরসিংদী পৌরসভা ও কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের পুরো নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার হয়। সংসদ নির্বাচনের প্রাক্কালে অনুষ্ঠিত চার সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আংশিক ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ধাক্কা খায়। রাজশাহীতে টিটি কলেজ কেন্দ্রের একটি বুথে গৃহীত ৩১০টি ভোট মুছে যাওয়ায় ওই বুথের ভোট বাদ দিয়ে প্রিজাইডিং অফিসারকে কেন্দ্রের নির্বাচনী ফলাফল হিসাব করে দু’সপ্তাহ পর ওই কেন্দ্রে সাধারণ কাউন্সিলর পদে কমিশনকে আবারো ব্যালট পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ করতে হয়। রাজশাহীর ইভিএম জটিলতায় পড়ে রকিব কমিশন গাজীপুর সিটি করপোরেশন (গাসিক) নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে। পরে কমিশন ইউপি নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েও সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে।
নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করতে গিয়ে মরগান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ইভিএম-এ ত্রুটির কারণে সেখানে ১০ মিনিট ভোট গ্রহণ বন্ধ ছিল। পরে নতুন মেশিন দিয়ে ভোটগ্রহণ চালু হলেও আগে কাস্ট হওয়া ১০৬টি ভোট গণনায় আসেনি। একরামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ৯ নম্বর বুথে মূল ভোটারের ৩৪টি কাস্টিং ভোটই হয়ে যায় ডামি। ৩৪টি ভোট গ্রহণের পর হঠাৎ করেই মেশিনে ভেসে ওঠে ডামি। বন্দর গার্লস হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রের ১০ নম্বর বুথে দীর্ঘক্ষণ ইন-অ্যাকটিভ ছিল মেয়র পদের ভোটিং মেশিনটির কিছু বাটন। হাজী সিরাজউদ্দিন মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের ১ নম্বর মহিলা বুথে ৫৫টি ভোটগ্রহণের পর প্রথমবার এবং ৬৪ ভোট গ্রহণের পর দ্বিতীয়বার মেশিন বন্ধ হয়ে যায়। সব ভোট নষ্ট হয়। চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও নরসিংদীতেও বহু কেন্দ্রে এ ধরনের ত্রুটি দৃশ্যমান হয়েছে।