রাবেয়া বেবী-

অনলাইনে মার্কেট প্লেসের ওপর আমেরিকার নিউইয়র্ক ভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠানের ওয়েব ডিজাইনার হিসেবে কাজ করছেন কুমিল্লার মেয়ে রাহিমা সিদ্দিকী। তথ্যপ্রযুক্তির এই সময়ে ঘরে বসে ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করে অল্প সময়ের মধ্যে সফল রাহিমা। ভারত, পাকিস্তান, ইংল্যান্ডসহ অনেক দেশের প্রতিষ্ঠানের ওয়েব ডিজাইন করছেন তিনি। রাহিমা মনে করেন- মেয়েরা সত্যিকার অর্থেই তথ্য প্রযুক্তির ক্ষেত্রে ভীত নয় কিংবা এই কারণে পেশা হিসেবে আইটি নির্ভর হন না তা নয়। বরং তাদের পিছিয়ে রাখা হয়। ডেফোডিল ইউনির্ভাসিটির কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের স্নাতক শিক্ষার্থী রাহিমা পিছিয়ে থাকা অন্য মেয়েদের চেয়ে কিভাবে একটু বেশি এগিয়ে গিয়ে সফল ফ্রিল্যান্সার হলেন এমন প্রশ্ন করলে জানান, চট্টগ্রামের মহিলা পলিটেকনিক্যাল কলেজ থেকে কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং এ ডিপ্লোমা করেন তিনি। পরে বাংলাদেশ সরকারের লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং প্রজেক্টে গ্রাফিক্স ডিজাইনিং এবং ওয়েব ডিজাইনিংয়ের ওপর প্রশিক্ষণ নেয়ার জন্য আবেদন করেন। মনে মনে ভেবে রাখেন যে বিষয় তার প্রশিক্ষণ গ্রহণের সুযোগ হবে সেই বিষয়ই ভালভাবে শিখবেন। ফলে ওয়েব ডিজাইনিং বিষয় তাকে ডাকা হলে তিনি সম্পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন তার ফলাফলও ভাল হয়। পরে শুরু হয় ওয়েব ডিজাইনার রাহিমার পথ চলা। দেশের বাইরের একটি প্রতিষ্ঠান তার কাজ দেখে মাসে ৫০০ ইউএস ডলারে তাকে নিযুক্ত করেন। ভাল কাজের জন্যই তিনমাসের মধ্যে তার পারিশ্রমিক বাড়িয়ে দ্বিগুণ করা হয়।
২০১৬ সালের ডিসেম্বর থেকে আজ অবধি ওয়েব ডিজাইনিং এর ক্ষেত্রে নিজের সৃষ্টিশীলতাকে কাজে লাগিয়ে চলেছেন রাহিমা। এখন তিনি ওয়েব ডিজাইনিং পাশাপাশি কোম্পানির হয়ে তাদের মার্কেটিংও করছেন। এ জন্য তাকে ঘণ্টা ভিত্তিক আলাদা পারিশ্রমিকও দেয়া হয়। রাহিমা বলেন, রাস্তাঘাটের ঝুঁকি ঝামেলা এড়িয়ে মেয়েরা বাড়িতে বসে ফ্রিল্যান্সার হিসেবে নিরাপদে আয় করতে পারে। তিনি আরো বলেন, শহরের মেয়েরা এই জগৎ সম্পর্কে জানলেও গ্রামের মেয়েরা আজ অবধি আইটির এই জগৎ থেকে অনেক দূরে। আমাদের সমাজ মেয়েদের পেশা নির্বাচনে স্বাধীনতা দেয় না। অনেক গ্রামের মেয়ে বিএ পাস করেও ঘরে বসে থাকে। কিন্তু একটু প্রশিক্ষণ নিলেই সেও ঘরে বসে ভালো আয় করতে পারে। তবে এক্ষেত্রে পরিবারের সহযোগিতা প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন। নিজের পরিবারের সহযোগিতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই সব ভাবনাই আমাকে গ্রামের মেয়েদের জন্য  ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করার ক্ষেত্র তৈরিতে সহযোগিতার কথা মনে করিয়ে দেয়। স্বপ্ন দেখি গ্রামের মেয়েরাও আরো  আইটি নির্ভর কাজে এগিয়ে আসবে।
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn