তাহিরপুরে স্বামীর পরকীয়ায় স্ত্রী আত্মহ্যা করেছেন। সুনামগঞ্জ শহরের মল্লিকপুরের তিন সন্তানের জননী ও তাহিরপুর উপজেলার লাউড়েরগড় কমিনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি আয়েশা আক্তার রত্না গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানাগেছে। শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে এই ঘটনাটি ঘটেছে। আয়েশার বাবা আলী আকবর পুলিশকে জানিয়েছেন ‘স্বামীর পরকীয়ার কারণেই রত্না আত্মহত্যা করেছে।’ পুলিশ জানিয়েছে, মৃত্যুর আগে আয়েশা চিরকুটে লিখে গেছেন তার মৃত্যুর জন্য স্বামী দায়ী। স্বামীর অমানসিক আচরণেই সে আত্মহত্যা করেছে। ঘটনার পরপরই স্বামী বিল্লাল মিয়াকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। পোষ্টমর্টেম শেষে রোববার সকালে আয়েশার মরদেহ তার বাবার বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, শনিবার সকালে আয়েশার আক্তার রত্নার মেয়ে দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী জানালা ফাঁক দিয়ে দেখছিল মা দরজা বন্ধ করে উড়না দিয়ে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ফাঁস লাগাচ্ছে। মার ফাঁস লাগার দৃশ্য দেখে সে চিৎকার করে উঠে। মাকে অনুনয় বিনয় করে ফাঁস না লাগানোর জন্য চেষ্টা করে। কিন্তু মা শিশু কন্যার দিকে কোন নজর না দিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলে থাকে। শেষ রক্ষা করতে ছোট শিশুটি মামা ঈশতিয়াককে ডেকে আনে। ঈশতিয়াক জানালার গ্লাস ভেঙে এবং দরজা খোলে বোনের ফাঁস ঠেকানোর শত চেষ্টা করেও বাঁচাতে পারেননি।

তাহিরপুর উপজেলার বৃন্দারবন গ্রামের নুরুজ্জামানের ছেলে বিল্লাল মিয়ার (৪০) সঙ্গে ১২ বছর আগে বিয়ে হয় বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ছাতারকোনা গ্রামের আলী আকবরের মেয়ে আয়েশা আক্তার রত্নার (৩০)। এই দম্পত্তির ৩ সন্তান। বিল্লাল মিয়া চাকুরি করে একটি উন্নয়ন সংগঠনে। গত তিন মাস ধরে বিল্লাল মিয়ার সঙ্গে তাঁর অফিসেরই একটি মেয়ের পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এক পর্যায়ে মেয়েটিকে স্ত্রীর মতের বিরুদ্ধে নিজ বাসায় থাকার ব্যবস্থা করে বিল্লাল মিয়া। কিন্তু স্ত্রী আয়েশা তাতে আপত্তি জানালে বাসা থেকে বিদায় করে দেয় তাকে। এর জের ধরে বিল্লাল ও আয়েশার মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া বিবাদ লেগে থাকতো। শেষ পর্যন্ত স্বামীকে পরকীয়ার ফাঁদ থেকে ফিরাতে না পেরে নিজেই আত্মহননের পথ বেছে নেয় আয়েশা। সুনামগঞ্জ সদর থানার ওসি শহীদুল্লাহ জানান, আয়েশার বাবা আলী আকবর বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে বিল্লাল মিয়াকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। আয়েশার লিখে যাওয়া চিরকুট সূত্র ধরে পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn