পীর হাবীব মানুষের দলের তাই তার যতো শত্রু
পারভেজ আহমদ-
জল, জোসনার শহর, গানের শহর, প্রেমের শহর যে শহরের ফসল বিলাসী পবনে গা ভাসিয়ে প্রাকৃতির সাথে যিনি শৈশব কৈশর কাটিয়েছেন। সত্যের পথে যার কণ্ঠ বজ্রের মতো, সত্য বলতে যিনি নির্ভীক। অন্যায়ের কাছে মাথা নত করা যার নামের সাথে মানায় না। একবার একটা টক শো অনুষ্ঠানে দেখেছিলাম যার সাহসী চরিত্র, অবিরত সবাই নিজের মতো সত্যের সাথে মিথ্যার সংমিশ্রণে ব্যস্ত। একজন ব্যক্তি সেই সময় নবনীতাকে বলে উঠেছিলেন কথা বলতে দিন না হলে আমি চলে যাবো। আরেকটা টক শো-তে যিনি সাহসীভাবে বলেছিলেন, মানুষের হত্যার লাইসেন্স পাওয়ার দাবিতে, মানুষ হত্যার লাইসেন্স পাওয়ার অধিকার নিয়া মন্ত্রীরা যখন এদের পক্ষে কথা বলেন তখন প্রধানমন্ত্রীর উচিত একটা তদন্ত করা।
যার লেখনিতে প্রতিনিয়ত ফুটে উঠে মানুষের কথা। যিনি সব সময় উনার কলম ব্যস্ত রাখেন অবহেলিত মানুষের কথা বলে অবহেলিত মানুষকে মুক্তির পথ দেখিয়ে। আগের যুগ শেষ এখন একজন চিত্রকারকে যেমন ঘরে বসে ছবি অঙ্কন করলে হয় না ছুটে যেতে হয় জর্জরিত, নিপীড়িত, দুর্দশাগ্রস্ত বস্তিবাসীর পাশে বাস্তবতা থেকে হৃদয় দিয়ে অঙ্কন করে তুলে ধরতে হয় তাদের হতাশা। ঠিক তেমনি একজন সাংবাদিক-কে সমাজের চিত্র থেকে লিখতে হয় বাস্তবতা যদিও সত্য বড়ই কঠিন এবং নিষ্ঠুর হয় তবুও মানুষ সত্যকে নিয়ে বেঁচে থাকতে ভালবাসে। অজানাকে জানার স্পৃহা মানুষের চিরন্তর,অজানাকে জানার কৌতুহল একমাত্র মানুষের মধ্যেই বেশি। আর সেই অজানাকে মানুষের দৃশ্যপটে তুলে ধরেন একজন সাংবাদিক। সেইরকম হাওর পারে বেড়ে উঠা একজন মানুষের তিনি স্বচক্ষে পরখ করেছেনে একজন গরীবের আর্তনাদ। তিনি দেখেছেন একজন গরীবের টাকা দিয়ে অন্যরা কিভাবে বিত্তবান হয়।
সেই বাস্তব দৃশ্যপট থেকে পীর হাবিবুর রহমান যিনি বর্তমান প্রজন্মের সাথে তোফাজ্জোল হোসেন মানিক মিয়া হিসাবেই পরিচিত। সেই পীর হাবিবুর রহমান তারেক রহমানকে নিয়ে কিছু কথা লিখেছিলেন। কাজী নজরুল ইসলামের একটা কথা মনে পরে যে নজরুল ইব্রাহিম খাঁকে একটা চিঠিতে লিখেছেন :হিন্দু লেখকরা তাদের সমাজের গলদ-ত্রুটি-কুসংস্কার নিয়ে কি না কষাঘাত করেছেন সমাজকে, তা সত্ত্বেও তারা সমাজে শ্রদ্ধা হারাননি। কিন্তু হতভাগ্য মুসলমানদের দোষ ত্রুটি বলবার উপায় নেই। সংস্কার তো দূরের কথা, সংশোধন করতে চাইলেও এরা তার বিকৃত অর্থ করে নিয়ে লেখককে হয়তো ছুরিই মেরে বসবে। নজরুল আজ থেকে বহু বছর আগেই এই ছুরির ভয় করেছিলেন পীর হাবিবুর রহমান একটা লেখা প্রকাশ করলেন কি করা হলো উনাকে হুমকি দেয়া হলো, উনার কোমলমতি মেয়েটাকে হুমকি দেয়া হলো, সমালোচনাকারীরা এতো বিকৃত মস্তিষ্কের ছিলো যে উনার জন্মদিনের একটা ছবি নিয়ে ব্যক্তিগতভাবে হেয় করা হলো। এই হলো আমাদের সমাজ কাঠামো আপনি ইচ্ছেমতো ক্ষমতার অপব্যবহার করে যাবেন কিন্তু কেউ কিছু বলতে পারবে না।
কারণ আপনি Rent Seeker আপনি সম্পদ সৃষ্টি করেন নি আপনি সম্পদ অধিগ্রহণ করেছেন। আপনি অন্যের সম্পদ গ্রহণ করেছেন, হরণ, দখল, বেদখল, জবরদখল, লুটতরাজ, অত্নসাৎ বিভিন্ন অসভ্য পদ্ধতিতে। এইসব নিয়ে কলম ধরেছিলেন পীর হাবিবুর রহমান উনাকে থামাতে আপনারা বর্বরদের মতো আচরণ করতেছেন অসভ্য ভাষায় গালাগালি করতেছেন। ভারতীয় একজন ধর্মগুরু একটা ভিডিও দেখেছিলাম, উনি অসম্ভব সুন্দর করে বলেছিলেন যে,শচিন টেন্ডুলকার যখন ২২ গজে ব্যাট হাতে নামতেন প্রতিপক্ষ বোলার উনাকে অনেক স্লেচিং করতো যাতে উনি রাগান্বিত হয়ে ভুল শট নির্বাচন করেন। কিন্তু শচিন টেন্ডুলকার তাতে একটুও বিচলিত হতেন না তাই তো ভারতীয়রা উনাকে ক্রিকেটের ইশ্বর মানে। তাই পীর হাবিব ভাই-কে থমকে দাঁড়ালে হবে না একজন সাংবাদিক বা লেখকের কাজ হলো সত্যকে অনুসন্ধান করা। সত্যের মধ্য দিয়ে মিথ্যাকে আঘাত করা মিথ্যার জয়গান সমাজ থেকে উপরে ফেলা। আপনার সমালোচনা হবে আপনি থামাতে পারবেন না তবে জ্ঞানী মানুষ হলে আপনার সমালোচনার জবাব দিবে যুক্তিযুক্তভাবে।
আপনি সেই মানুষ যিনি হাজার মানুষের সামনে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন পৃথিবীর বুঁকে আমি একজনকে নেতা মানি তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, আপনি কোন দলের তাঁবেদারি করেন না, আপনি মানুষের দলের। কবি সিকান্দার আবু জাফর উনসত্তরে একদিন দেশের কথা হচ্ছে, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় বন্দি শেখ মুজিবের কথা হচ্ছে, তখন বিচার শুরু হয় নি, আন্দোলন গড়ে ওঠেনি, আতঙ্ক চারিদিকে, একসময় তিনি তার স্বভাবসিদ্ধ লঘু কন্ঠে বলে উঠলেন, দশজন তকে ভয় দেখাচ্ছে, সাহস করে একবার একটা ধমক দিয়ে ওঠ, দেখবি পাঁচজন বসে পড়েছে, চারজন পালিয়ে গেছে, আর বাকি রইলো একজন থাকে বাগে পেতে কতক্ষণ। আপনি ভাই ধমক দিয়ে উঠেক আপনি সব সময় যে দলের কথা বলেন সেই মানুষের দল আপনার পিছনে দাঁড়াবে। আপনার কলমটা ধরেন গেয়ে যান মানবতার গান, গেয়ে যান সত্যের গান হোক সে সত্য কঠিন।
লেখক: শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়