প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা আগামী রবিবার যশোর যাচ্ছেন। এ সফরে তিনি বিমান বাহিনীর একাডেমীতে অনুষ্ঠেয় ‘রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ ২০১৭’-তে অংশগ্রহণ ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় বক্তব্য রাখবেন।  প্রধানমন্ত্রী জনসভায় ভাষণের পাশাপাশি একগুচ্ছ উন্নয়নমূলক কাজের উদ্বোধন করবেন। ৫ বছর পর প্রধানমন্ত্রী যশোরের জনসভায় উপস্থিত হচ্ছেন। দলীয় নেতাকর্মী-সমর্থকদের বাইরে সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতিতে জনসভাটি জনসমুদ্রে পরিণত হবে বলে আশা করছেন দলীয় নেতারা।  প্রধানমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব সাইফুজ্জামান শিখর ইত্তেফাককে বলেন, জনসভার প্রস্তুতি সন্তোষজনক। খুব সুন্দরভাবে প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। কোথাও কোনো ঘাটতি নেই। প্রধানমন্ত্রী সুষ্ঠুভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করে জনগণকে শান্তিতে রেখেছেন। এজন্য তৃণমূল থেকে সর্বত্র উৎসবের আমেজ লক্ষ্য করা যাচ্ছে।  যশোরবাসীর দাবির ব্যাপারে তিনি বলেন, দাবি করার কিছু নেই। কী লাগবে, তা প্রধানমন্ত্রী ভালো করেই জানেন। সেই অনুযায়ী তিনি ব্যবস্থা নেবেন। 
 
এদিকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমন উপলক্ষে যশোরে সাজসাজ রব পড়ে গেছে। শহরের অলিগলি ব্যানার, পোস্টার ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে। শহর, গ্রামে চলছে মাইকিং। নেতাকর্মীদের মাঝে সৃষ্টি হয়েছে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার। প্রধানমন্ত্রী জনসভায় ভাষণের পাশাপাশি একগুচ্ছ উন্নয়নমূলক কাজের উদ্বোধন করবেন। এজন্য যশোর জেলা প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও আওয়ামী লীগ নেতারা সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমনে যশোরবাসী দাবি পূরণের আশায় বুক বেঁধেছেন। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে যশোর বিভাগ, সিটি কর্পোরেশন, মাইকেল মধুসূদন দত্তের নামে সংস্কৃতি বিশ্ববিদ্যালয়, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ভবদহ সমস্যার স্থায়ী সমাধান, বেনাপোলে বঙ্গবন্ধু স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ গঠন ইত্যাদি। দাবি আদায়ে ইতিমধ্যে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবর স্মারকলিপিও দেয়া হয়েছে। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যশোরে খালি হাতে আসছেন না। তিনি যশোরবাসীর জন্য একগুচ্ছা উপহার দেবেন। প্রায় ৩০টি উন্নয়নমূলক কাজের উদ্বোধন করবেন তিনি। 
 
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, যশোরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেসব উন্নয়নমূলক কাজ উদ্বোধন করবেন সেগুলো হলো- কপোতাক্ষ নদের জলাবদ্ধতা দূরীকরণ প্রকল্প (প্রথম পর্যায়), তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় শিক্ষার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে ‘নির্বাচিত বেসরকারি কলেজগুলোর উন্নয়ন’শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় সদর উপজেলার আমদাবাদ কলেজ, শার্শা উপজেলার পাকশিয়া আইডিয়াল কলেজ ও বাঘারপাড়া ডিগ্রি কলেজে নির্মিত দোতলা ভবনের তৃতীয় ও চতুর্থ তলার সম্প্রসারণ কাজ, মনিরামপুর উপজেলায় ৫০০ আসনের শহীদ মশিয়ুর রহমান অডিটোরিয়াম কাম মাল্টি পারপাস হল নির্মাণ, যশোর পাবলিক লাইব্রেরির উন্নয়ন প্রকল্প; যশোর মেডিকেল কলেজের একাডেমিক ভবন, হৈবতপুর, নরেন্দ্রপুর, মহাকাল ও পাতিবিলা ইউনিয়ন ভূমি অফিস ভবন, যশোরের পুলিশ সুপার ভবন ও পুলিশ হাসপাতাল, শেখ রাসেল ভাস্কর্য, শহরের ১৩ কিলোমিটার সড়ক ও ২২ কিলোমিটার ড্রেন নির্মাণ কাজ, ঝিকরগাছা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন এবং অভয়নগরের মালোপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন নির্মাণ কাজ। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনে মালোপাড়ায় মালো সম্প্রদায়ের উপর হামলা হলে ২৩ জানুয়ারি সেখানে দেখতে আসেন প্রধানমন্ত্রী। তাদের দাবির প্রেক্ষিতে সেখানে মালোপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণ করা হয়েছে। 
 
এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী ডজন খানেক কাজের ভিত্তি প্রস্তর উদ্বোধন করবেন। এর মধ্যে রয়েছে ভৈরব রিভার বেসিন এলাকার জলাবদ্ধতা দূরীকরণ ও টেকসই পানি ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে ভৈরব নদ খনন, যশোর-বেনাপোল ও যশোর-খুলনা জাতীয় মহাসড়কের যশোর অংশ (পালবাড়ী হতে রাজঘাট অংশ) প্রশস্তকরণ প্রকল্প, কেশবপুর কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণ, যশোর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণ, শহরের ২৫ কিলোমিটার সড়ক ও ২৪ কিলোমিটার ড্রেন নির্মাণ কাজ, ঝুমঝুমপুর কম্পোস্ট প্ল্যান্ট, প্রি-ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট, বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট এবং কন্ট্রোল ল্যান্ডফিল সেল নির্মাণ, ঝিকরগছা উপজেলা পরিষদের সম্প্রসারিত প্রশাসনিক ভবন ও হলরুম নির্মাণ, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের ম্যুরাল স্থাপন এবং যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শেখ রাসেল জিমনেসিয়াম ভবন ও ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন। 
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn