১৯৯৪ সালে বাংলাদেশ থেকে নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন বর্তমানে দিল্লিতে বসবাস করছেন। শুক্রবার তসলিমা নাসরিন ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাসে দিয়েছেন। সেখানে তিনি লিখেন, আমাদের পরিবারে ডাক্তার অনেক। কিন্তু কাছের মানুষদের আমরা কেউ বাঁচাতে পারিনি। মা’র কোলন ক্যান্সারের উপসর্গ ছিল স্পষ্ট, আমরা কেউ বুঝিনি, অথবা গ্রাহ্য করিনি। আমার ডাক্তার বাবা, আমিও ছিলাম ডাক্তার, আমিও, মা’কে যখন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া উচিত, নিয়ে যাইনি। বাবা নিজে বড় ডাক্তার হয়েও নিজের রোগশোকগুলোকে মোটেও পাত্তা দেননি। বাবা মা দুজনই অনেকটা চিকিৎসার অভাবেই মারা গেছেন। ছোটদা যখন অসুখে পড়লো, পাশে পায়নি তার ডাক্তার মেয়েকে। আর দাদা (বড়দা)র যখন হার্ট অ্যাটাক হতে যাচ্ছে, দাদা ঘামছে, শ্বাস নিচ্ছে দ্রুত, ডায়বেটিস থাকলে বুকে ব্যাথা হয় না বলে বুকে ব্যাথা হচ্ছে না, পাশে দাঁড়িয়ে থাকা তার ডাক্তার ছেলে ইনহেলার দিল, কিন্তু দিল না যেটা দাদাকে বাঁচানোর জন্য দরকার ছিল, নাইট্রোগ্লিসারিন, অ্যাসপিরিন। এ্যাম্বুলেন্স ডাকলো দেরিতে। যেটা একেবারেই করতে হয় না, সেটা করলো, দাদাকে হাঁটাচলা করতে দিল, হেঁটে হেঁটে দাদা অ্যাম্বুলেন্সে গিয়ে উঠলো। দাদার পুত্রধন কি সিপিয়ার দিতে জানে? মনে তো হয় না। আমাদের জিন ভালো নয়। জিনে ডায়বেটিস, হাইপারটেনশান, ক্যান্সার। মা বেঁচেছেন ৫৭ বছর, ছোটদা ৫৯, দাদা ৬৪, বাবা ৬৯। আমরা ৭০ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারি না। এখন সামনে আর কেউ নেই, শুধু আমি, আর আমার ছোটবোন। আমিও বাবার মতোই, ডাক্তার হিসেবে ভালো হলেও রোগী হিসেবে ভালো নই। ৬০ অবধি যেতে পারবো তো?
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn