এসএসসি পরীক্ষার্থী ও শিক্ষকদের জন্য পরীক্ষার হলে মোবাইল ফোন ব্যবহারে আগে থেকেই নিষেধাজ্ঞা ছিল। এবার আরও কঠোর শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আসন্ন এসএসসি পরীক্ষায় শিক্ষক-পরীক্ষার্থী যার কাছেই মোবাইল ফোন পাওয়া যাবে তাকেই সঙ্গে সঙ্গে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রণালয়। পাশাপাশি কেন্দ্রে অন্যা্ন্য দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরও মোবাইল ফোন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। এমনকি যাতে ছবি না তুলতে বা ইন্টারনেট ব্যবহার না করতে পারেন সেজন্য কেন্দ্র সচিবও এসেছেন নিষেধাজ্ঞার আওতায়। তিনিও স্মার্ট ফোন ব্যবহার করতে পারবেন না, দরকারে সাধারণ মোবাইল ব্যবহার করতে পারবেন তিনি। রোববার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আসন্ন এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে এক সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সভায় শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ সভাপতিত্ব করেন। পরে সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত জানিয়ে গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়েছে।
ওই সভায় আগের ঘোষণা অনুযায়ী পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা শুরুর আধা ঘণ্টা আগে পরীক্ষার হলে প্রবেশ করে স্ব স্ব আসনে বসার বাধ্যবাধকতা আনা হয়েছে। পরে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে,পরীক্ষার্থীদের হলে প্রবেশের ক্ষেত্রে কোনও ধরনের অজুহাত গ্রহণযোগ্য হবে না এবং এর অন্যথা হলে পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হবে না। ওই বিজ্ঞপ্তিতে  এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরুর ০৩ (তিন) দিন আগে থেকে শুরু করে সব পরীক্ষা শেষ হওয়া পর্যন্ত দেশে সব ধরনের কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে। এছাড়া পরীক্ষা শুরুর আগে থেকে পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে দেশে ইন্টারনেট ও ফেসবুক বন্ধ রাখার ব্যাপারেও আলোচনা হয়। তবে এ ব্যাপারে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, পরীক্ষা সুষ্ঠু, নির্বিঘ্নে ও নকলমুক্ত পরিবেশে অনুষ্ঠানের জন্য আইন-শৃ্ঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ, প্রশ্নপত্র ফাঁসের গুজব ছড়ানো রোধ, ফেসবুকে প্রশ্ন সরবরাহকারীদের বিরুদ্ধে তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সভায় শিক্ষামন্ত্রী বলেন,এই পরীক্ষাটি সম্পূর্ণ নকলমুক্ত পরিবেশে অনুষ্ঠানের জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এ ব্যাপারে কোনও ছাড় দেওয়া হবে না। তিনি বলেন, সরকারের সংশ্লিষ্ট সব সংস্থা নকল প্রতিরোধে আক্রমণাত্মক থাকবে। কোনও শিক্ষক-কর্মকর্তা এর সঙ্গে জড়িত হলে তাকে সঙ্গে সঙ্গে বহিষ্কারসহ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশনাও দেন। সভায় উপস্থিত ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক প্রফেসর মো. মাহাবুবুর রহমান। তিনি বলেন, শুধুমাত্র কেন্দ্র সচিব একটি মোবাইল ব্যবহার করতে পারবেন। তাও সেটিতে কোনও ক্যামেরা থাকা যাবে না। এছাড়া শিক্ষক-শিক্ষার্থী যার কাছেই মোবাইল পাওয়া যাবে তাকে সঙ্গে সঙ্গেই বহিষ্কার করা হবে। তিনি আরও বলেন, সভায় মন্ত্রী বলেন, আমরাও যখন কেন্দ্র পরিদর্শনে যাবো তখন কেন্দ্র সচিবের কাছে মোবাইল রেখে তবেই কেন্দ্রে প্রবেশ করবো। সভায় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আলমগীর, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক প্রফেসর মো. মাহাবুবুর রহমান, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব চৌধুরী মুফাদ আহমদ, ড. অরুনা বিশ্বাস ও জাবেদ আহমেদ, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার বিশ্বাস, বিজি প্রেসের প্রতিনিধি এবং বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানরা উপস্থিত ছিলেন।
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn