বিএনপিকে ছাড়দেয়া হবেনা।। পুলিশের উপর হামলা সহ্যকরা হবেনা
সংসদ নেতা আরো বলেন, সে সময় বিএনপির নির্বাচনের নামে প্রহসন করার উদ্দেশ্য থাকায় দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা হয় এবং একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ২ বছর ক্ষমতায় থাকে। জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমামের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারি চাকরিতে অবসরের বয়সসীমা বৃদ্ধি করার কোনো পরিকল্পনা সরকারের আপাতত নেই। ভবিষ্যতে এ বিষয়টি দেখা যাবে। তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর দীর্ঘদিন অবসরসীমা বাড়ানো হয়নি। একমাত্র আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে অবসরের বয়সসীমা ৫৭ থেকে ৫৯ বছর করে দিয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষেত্রে ৬০ বছর করে দিয়েছি। তিনি বলেন, যদি অবসরের বয়সসীমা শুধু বাড়ানোই হয় তবে নিচের স্তরে পদোন্নতির ক্ষেত্রে ব্যাঘাত ঘটে এবং নতুনদের চাকরিতে প্রবেশের সুযোগ অনেক হ্রাস পায়। তাই যত বেশি অবসরের বয়স বাড়ানো হবে তত চাকরিতে প্রবেশ কমে যাবে। আগে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সেশনজট ছিল, এখন তেমন সেশনজট নেই। ফলে চাকরিতে প্রবেশের জন্য এখন অনেক সময় পাচ্ছে। তাই এখন আর অবসরের বয়সসীমা বাড়ানোর কোনো পরিকল্পনা নেই।
সরকারদলীয় সংসদ সদস্য সামশুল হক চৌধুরীর সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে সংসদ নেতা জানান, দেশের ভেতরে বিনিয়োগের জন্য সকল সুযোগ-সুবিধাই নিশ্চিত করেছে সরকার। কিন্তু দেশে বিনিয়োগ না করে যারা অর্থ পাচার করতে চায় তারা তো তা করতেই চাইবে। কিন্তু টাকা পাচার করলে আমরা তা শনাক্ত করে দেশে ফেরত আনছি। বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার ছোট ছেলের পাচারকৃত অর্থ আমরা দেশে ফেরত এনেছি। অন্যরা যারা অর্থ পাচার করছে তা শনাক্ত এবং তা দেশে ফেরত আনতে সরকার যথেষ্ট তৎপর রয়েছে। দুর্নীতি বরদাশত করা হবে না: এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুর্নীতি এবং জনগণের অর্থ অপব্যবহারের বিরুদ্ধে সরকারের দৃঢ় অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে বলেছেন, জনগণের অর্থের সঙ্গে কোনো অনিয়ম বা অসততা বরদাশত করা হবে না। তিনি বলেন, ‘যে লক্ষ্য নিয়ে ৩০ লাখ মানুষ জীবন দিয়ে গেছে এবং জীবনের অধিকাংশ সময় আমার বাবা জেলে কাটিয়েছেন সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশকে সুখী ও সমৃদ্ধশালী দেশ গড়ে তোলাই আমাদের লক্ষ্য। সেখানে দুর্নীতি বা টাকা পয়সা নিয়ে কোনোরকম অনিয়ম আমরা কখনো বরদাশত করবো না।’ এক্ষেত্রে অডিটর অ্যান্ড কম্পট্রোলার জেলারেলের কার্যালয়ে কর্মকর্তাদের দায়িত্ব অনেক বেশি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা আরো বেশি নজরদারি করবেন। সেটাই আমি চাই। প্রধানমন্ত্রী গতকাল সকালে রাজধানীর কাকরাইলের অডিট ভবনে আন্তর্জাতিক সুপ্রিম অডিট ইনস্টিটিউট (আইএসএআই)-এর নতুন ভবন উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির ভাষণে এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী জনগণের অর্থ সাশ্রয় এবং দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের অডিট অ্যান্ড একাউন্টস ডিপার্টমেন্টকে আরো দক্ষতা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে প্রয়োজনীয় লোকবল জোগান দেয়ার বিষয়টি সরকারের বিবেচনাধীন রয়েছে বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, বর্তমানে সরকারের উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত অডিটের চলমান কার্যক্রমকে ভবিষ্যতে সকলের অর্থনৈতিক কার্যক্রম এবং ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়ার প্রেক্ষিতে তৃণমূলে অর্থাৎ ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত বিস্তৃত করতে হবে।
অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের পরিধি ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় অডিট বিভাগকে আরো শক্তিশালী ও যুগোপযোগী হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। গতানুগতিক অডিটের বাইরে প্রতিষ্ঠানভিত্তিক অডিট, পারফরমেন্স অডিট, আইটি অডিট, পরিবেশ বিষয়ক অডিট পরিচালনায় দক্ষতা অর্জন করতে হবে। অডিট কাজে খুব শিগগিরই অডিট মনিটরিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (এএমএমএস) শুরু হচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন, ভবিষ্যতে এটি সকল মন্ত্রণালয়কে সংযুক্ত করবে এবং মানসম্পন্ন অডিট রিপোর্ট যথাসময়ে জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করবে। তিনি বলেন, দেশে ইতিমধ্যে আইটি অডিট কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আইটি অডিট ডিরেক্টরেট নামে একটি স্বতন্ত্র ডিরেক্টরেট সৃষ্টির বিষয়টি ইতিমধ্যে পুনর্বিন্যাস প্রস্তাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা অনুমোদিত হলে আইটি অডিট ত্বরান্বিত হবে। তিনি ডিজিটাল পদ্ধতি গ্রহণের সঙ্গে সঙ্গে নিরাপত্তার বিষয়টিও নজরে রাখার আহ্বান জানিয়ে সাইবার অপরাধ সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট সকলকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেন। অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন। এছাড়া কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেলারেল মাসুদ আহমেদ এবং অর্থ সচিব মুসলিম চৌধুরী অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। ডেপুটি কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেলারেল মো. ইকবাল হোসেন দেশে জবাবদিহিতা ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেলের কার্যালয়ের কর্মকাণ্ড অনুষ্ঠানে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে উপস্থাপন করেন।
পুলিশের ওপর হামলা সহ্য করা হবে না: প্রধানমন্ত্রী
পুলিশের ওপর কোন ধরণের হামলা সহ্য করা হবে না বলে সতর্ক করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গণভবনে বুধবার রাতে পুলিশের নতুন মহাপরিদর্শক মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারীকে র্যাংক ব্যাজ পরিয়ে দেয়ার পর তিনি বলেন, গতকালও একটা ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে। এ রকম জঘন্য ঘটনা আমরা দেখিনি। এ ধরনের জঘন্য ঘটনা আমরা কোনো দিন সহ্য করব না। নতুন আইজিপির উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সন্ত্রাস-মাদক, জঙ্গিবাদ নির্মূলে সব চেষ্টা চলবে -সেটাই আমরা চাচ্ছি। দেশে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ থাক- সেটাই আমরা চাচ্ছি।উন্নয়নের ধারা যেন অব্যাহত থাকে। বিভিন্ন ঘটনায় পুলিশের ভূমিকার প্রশংসা করে শেখ হাসিনা বলেন, আাইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা যথেষ্ট বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখে যাচ্ছে। অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, বিদায়ী আইজিপি এ কে এম শহীদুল হকসহ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।