সুনামগঞ্জ পৌর মেয়র জগলুল আর নেই
সুনামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ও আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য আয়ূব বখত জগলুল (৫৯) আর নেই। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।(ইন্না লিল্লাহি…রাজিউন)। নিহতের পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে, সকাল ৮ টায় বুকে ব্যথা অনুভব করলে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, এক পুত্র ও কন্যাসহ অসংখ্য আত্মীয়স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তাঁর মৃত্যুতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম. এ মান্নানসহ আওয়ামী অঙ্গ সংগঠনের কেন্দ্রীয় ও জেলা নেতৃবৃন্দ শোক প্রকাশ করেছেন। এদিকে মেয়র আয়ুব বখত জগলুলের অকাল মৃত্যুতে পৌর পরিষদ সাত দিনের শোক কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। তার মৃত্যুতে পৌর পরিষদে একটি শোক বই খোলা হয়েছে। পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মীর মোশারফ হোসেন জানিয়েছেন, সাত দিন পৌরসভায় কালো পতাকা উত্তোলন করা হবে। পাশাপাশি পৌরসভার সকল কাউন্সিলর, কর্মকর্তা, কর্মচারীগণ সাত দিন কালো ব্যাচ ধারণ করবেন। আয়ূব বখত জগলুলের ছোট ভাই ইয়াকুব বখ্ত বহলুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিলেট সমাবেশ থেকেই রাজনৈতিক ও পৌরসভার উন্নয়নমূলক কাজের জন্য তিনি ঢাকা চলে যান। সেখানে কমলাপুরে আল ফারুক আবাসিক হোটেলে অবস্থান করেছিলেন তিনি। বৃহস্পতিবার ভোরে বুকে ব্যথা উঠলে তিনি ঢাকার ইসলামিয়া হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যান। সেখানকার কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে স্কয়ার হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।’ আয়ূব বখ্ত জগলুলের মৃত্যুর খবর সুনামগঞ্জ পৌর শহরে এসে পৌঁছলে নাগরিকরা শোকে মুহ্যমান হয়ে পড়েন। তাঁর রাজনৈতিক শুভাকাঙ্খী, বন্ধুজনসহ শহরের দলমত-নির্বিশেষে সুনামগঞ্জের সাধারণ মানুষ তাঁর আরপিন নগরস্থ বাসভবনে ছুটে যান। তারা শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। সুনামগঞ্জ পৌরসভার প্যানেল মেয়র হুসেন আহমদ রাসেল জানান, হেলিকপ্টার যোগে মরহুমের মরদেহ সুনামগঞ্জে নিয়ে আসা হবে। শেষ নজর দেখার জন্য তার লাশ বাসভবনের সামনে রাখা হবে। বিদেশ থেকে তার পরিবারের অন্য সদস্যরা দেশে আসলে আগামীকাল শুক্রবার দুপুর দুইটায় সুনামগঞ্জ স্টেডিয়ামে তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।’ উল্লেখ্য, আয়ূব বখত জগলুল সত্তরের দশকে ছাত্রলীগের রাজনীতি দিয়ে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। তার পিতা হোসেন বখত ছিলেন ভাষাসৈনিক ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ট সহচর সুনামগঞ্জের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক। আয়ূব বখত জগলুল সুনামগঞ্জ জেলা ছাত্র লীগের প্রচার সম্পাদক, জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। মৃত্যুর আগে পর্যন্ত তিনি আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। তিনি সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের নির্বাচিত ভিপি ও জিএসের দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১১ সালে তিনি সুনামগঞ্জ পৌরসভার প্রথম মেয়র নির্বাচিত হন। ২০১৬ সালে তিনি দ্বিতীয় মেয়াদে পুনরায় মেয়র নির্বাচিত হন। সুনামগঞ্জ শহরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া সুরমা নদীর তীরে বিনোদন কেন্দ্র ‘রিভার ভিউ’, কিচেন মার্কেট, হুসেন বখত চত্ত্বর, প্রধান প্রধান রাস্তাঘাটসহ বিভিন্ন দৃষ্টি নন্দন উন্নয়ন করে গেছেন তিনি।