মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের পাঁচটি গণকবরের সন্ধান পাওয়া গেছে। বার্তাসংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) বিশেষ অনুসন্ধানে এই তথ্য বেরিয়ে এসেছে। বৃহস্পতিবার অনুসন্ধানটির প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এপি জানিয়েছে, দেশটির সেনাবাহিনী কর্তৃক নিযার্তিত বেশ কয়েকজন বেসামরিক মানুষ ও তাদের আত্মীয়দের সঙ্গে কথা বলে এই প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়েছে। এছাড়া হামলার সময় মোবাইল ফোনে ধারণকৃত বিভিন্ন ভিডিও চিত্রের সাহায্য নেওয়া হয়েছে। এপির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, মিয়ানমার সেনবাহিনীর হাতে অন্তত ৪০০ সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিম নিহত হয়েছে। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নৃশংসতার বর্ণনা দিলেন মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে যাওয়া নুর কাদির নামে ব্যক্তি। কাদির বলেন, একদিন তার বন্ধুদের সঙ্গে মাঠে খেলছিলেন। হঠাত সেনাবহিনী এসে তাদের ওপর গুলি চালায়। এর পরে তার ছয় বন্ধুর লাশ দুটি গণকবর থেকে উদ্ধার করা হয়। তিনি বলেন, লাশগুলোর অবস্থা এতটাই খারাপ ছিল যে শুধুমাত্র কাপড় দেখে তাদের সনাক্ত করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ড থেকে বেঁচে যাওয়া আরও কয়েকজন এপিকে জানান, মিয়ানমার সেনাবাহিনী তাদের নৃশংসতার প্রমাণ মেটাতোই গণকবর দিয়েছে। বার্তাসংস্থা এপির কাছে আসা ভিডিওটিতে দেখা যায় লাশ গুম করতে অ্যাসিড ব্যবহারও করা হয়েছে। মানবাধিকারকর্মী ফিল রবার্ট বলেছেন, নিহতের লাশ সনাক্তকরণ যেন সহজ না হয় সেজন্য দেশটির সেনাবাহিনী লাশগুলো অ্যাসিড দিয়ে পুড়িয়ে দিতো। মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাষ্ট্রকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। এর আগে ১০ জানুয়ারি প্রথমবারের মতো রাখাইনে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর নির্যাতন আর হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। গত ২৫ আগস্ট থেকে রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনী জাতিগত নিধন শুরু করলে প্রাণভয়ে প্রায় ১০ রাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn